ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চার মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৫ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩ নভেম্বর ২০১৬

চার মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৫ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচক ইতিবাচক ধারায় থাকলেও মন্দা কাটছে না প্রবাসী আয়ে। প্রতি মাসেই কমছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। চলতি অর্থবছরের জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবর মাসেও কমেছে প্রবাসী আয়। এ মাসে প্রবাসীরা যে পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তা সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে প্রায় ৪ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ কম। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের (জুলাই-অক্টোবরে) হিসাবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ। প্রবাসী আয় কমার কারণ হিসেবে জনশক্তি রফতানিতে ভাটা, অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি, মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন মুদ্রার দরপতন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে প্রবাসীরা ১০১ কোটি ৯ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। যা গেল অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার বা ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ কম। গেল অর্থবছরের অক্টোবর মাসে রেমিটেন্স আসে ১০৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এছাড়া চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিটেন্স আসে ১০৫ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। যা আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ছিল ১৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগস্ট মাসে রেমিটেন্স আসে ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। যা গেল অর্থবছরের আগস্ট মাসে ছিল ১১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। রেমিটেন্স প্রবাহের গতি জুলাইতে ছিল আরও করুন। চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিটেন্স আসে মাত্র ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। অথচ গেল অর্থবছরের একই মাসে ১৩৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের রেমিটেন্স আসে। সবমিলে চলতি অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবর) প্রথম চার মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৪২৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার কম। গেল অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর এই চার মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ৫০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ কোটি ৯৮ লাখ, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১ কোটি ১২ লাখ এবং বিদেশী মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ১৯ লাখ ডলার। তবে একক ব্যাংক হিসেবে অক্টোবরেও সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে বেসরকারী খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে ২৪ কোটি ৩৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। রেমিটেন্স আহরণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ১১ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৩ লাখ ডলার, ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার, পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ডলার ও উত্তরা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৪১ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় আড়াই শতাংশ কম প্রবাসী আয় আসে। গেল অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিটেন্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে যা ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
×