ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলায় জড়িত কেউ রেহাই পাবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:০১, ২ নভেম্বর ২০১৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলায় জড়িত কেউ রেহাই পাবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘু পরিবার ও তাদের মন্দির হামলার সঙ্গে জড়িতদের কেউ রেহাই পাবে না। অপরাধী যেই হোক, তাকে খুঁজে বের করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ ঘটনায় যারা জড়িত, প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। ধর্ম অবমাননার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসিরনগরে সংখ্যালঘু পরিবার ও তাদের মন্দিরে হামলার স্থান পরিদর্শন শেষে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল গণভবনে রিপোর্ট দিতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সদস্য মারুফা আক্তার পপি, গোলাম রাব্বানী চিনু মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দলের নেতারা সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট প্রদান করেন। তারা সংখ্যালঘু পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে খাদ্য ও আর্থিক অনুদানের সুপারিশ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ দেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টকারীর স্থান দেশে হবে না। যারাই এ ঘটনা ঘটাক না কেন, চূড়ান্ত শাস্তি পেতে হবে। প্রতিনিধি দলকে তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্তদের সান্ত¡না এবং সহায়তার আশ্বাস দেন। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলের প্রধান একেএম এনামুল হক শামীম জানান, নাসিরনগরের বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ ফোরাম থেকে তদারকি করা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নাসিরনগরে কাবা শরীফ অবমাননার প্রতিবাদে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ শাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এদিকে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় আরিফ (২০) নামে আরেকজনকে মঙ্গলবার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় নয়জনকে গ্রেফতার করা হলো। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বার বার এমন ঘটনা ঘটছে কেন তা সবাইকে ভাবতে হবে। আমরা কারও প্রতিপক্ষ নই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি লোককে শনাক্ত করতে হবে। এর নেপথ্যে কোন গোষ্ঠী, সূত্র, শক্তি কাজ করছে কি-না তা বের করতে হবে। ২৮ অক্টোবর হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস পবিত্র কাবাঘরের ছবি এডিট করে কাবা শরীফের ওপর শিবমূর্তি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে। স্থানীয়রা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।
×