ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নতুন নাটক মর্ষকাম মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২ নভেম্বর ২০১৬

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নতুন নাটক মর্ষকাম মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কালে কালে ক্ষমতার পালা বদল ঘটেছে বিশ্ব রাজনীতিতে। সেই পালাবদলে বারবার অশান্ত ও সহিংস হয়েছে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট। ক্ষমতার পালাবদলের সেই কাহিনীকে উপজীব্য করে ঢাকার মঞ্চে যুক্ত হলো আরেকটি নতুন নাটক। নাট্যদল থিয়েটার আর্ট ইউনিট মঞ্চে এনেছে নতুন নাটক ‘মর্ষকাম’। দলের ১৯তম প্রযোজনা রচনা করেছেন আনিকা মাহিন। নির্দেশনা দিয়েছেন রোকেয়া রফিক বেবি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হলো শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে। নাটকটি প্রসঙ্গে নাট্যকার আনিকা মাহিন বলেন, সাদা কথায় বলতে গেলে মর্ষকাম চলমান বৈশ্বিক রাজনীতির সবচেয়ে ক্ষমতাধর পরাশক্তির পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে লেখা নাটক। সেই পররাষ্ট্রনীতি, যা যুগ যুগ ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বিশ্বের সকল অবদমিত রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যত। এই পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে বিপ্লব বা প্রতিরোধ যে হয় না তা কিন্তু নয়। প্রতিরোধ হয়ে আসছে এবং আগামীতেও হবে। কিন্তু এই নীতির নীলনকশা গ্রাস করে বিপ্লবের সকল ডিসকোর্স। এই নীতির মূল কখনও পাল্টায় না। এই নীতি আবির্ভূত হয় নতুন নতুন রূপে, পাল্টানো সময়ে, বদলানো প্রেক্ষাপটে। নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী বলেন, নাটকের পা-ুলিপিতে উল্লেখিত নানা রেফারেন্সে আমার কাছে মনে হয়েছে কখনও কিউবা, আফ্রিকা কিম্বা মধ্যপ্রাচ্য অথবা এই বঙ্গ। মোটা দাগে বলতে গেলে এই নাটকে তিনটি বিষয় মুখ্য-ক্ষমতা ও আগ্রাসন, বাণিজ্য এবং যুদ্ধ। নাটকের কাহিনীতে উঠে এসেছে, ইতিহাসের পরিক্রমায় বারবার ক্ষমতার হাতবদলের চিত্র। ঠিক যেমনভাবে হয়ে আসছে ক্ষমতা ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও বিপ্লব। কিন্তু ‘মর্ষকাম’ ইতিহাসে বার বার সংঘটিত বিপ্লবের গাথা নয়, বরং ক্ষমতার সেই পালাবদলের উপাখ্যান যা বিশ্বময় ধ্বংস করে চলেছে বিপ্লবের নব অঙ্কুরিত বীজ। নাটকে দৃশ্যের অন্তরালে রয়ে যায় বিপ্লবের জয়গাথা, আর বার বার দৃশ্যমান হয় ক্ষমতার পালাবদলের পটভূমি। মর্ষকাম একটি তিন অঙ্কের নাটক। কিন্তু ক্ল্যাসিকাল অর্থে তিন আঙ্কিক নাটক বলতে যা বুঝায় তা নয়। তিনটি পৃথক অঙ্কে চক্রাকারে পুনরাবৃত হয় একই নাটক, তিনটি ভিন্ন রূপে। প্রতিটি অঙ্কে বার বার ফিরে আসে একই সব চরিত্র- প্রেসিডেন্ট, অর্থমন্ত্রী, সচিব, জেনারেল ও মিস্টার এক্স। চলতে থাকে রাজনীতি ও ক্ষমতার খেলা- যার একমাত্র নিয়ন্ত্রক কোন এক অদৃশ্য পরাশক্তির প্রতিনিধি ‘মিস্টার এক্স’। এ খেলা দমন ও নিয়ন্ত্রণের, এ খেলা মর্ষকামের। বার বার প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, পরিবর্তিত হয় পুরনো রাজনৈতিক দৃশ্যপট আর সূচনা হয় নতুন রাজনৈতিক পটভূমির কোন এক ভিন্ন স্থানে, ভিন্ন আঙ্গিকে। কিন্তু অবসান হয় না সেই পুরনো রাজনৈতিক ক্রিয়ার, সেই আদি ও অকৃত্রিম খেলার। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ॥ সময়ের স্রোতে প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বছরে পদার্পণ করল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই)। সেই সাফল্যের উদ্যাপনের চিত্র চোখে পড়ে শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশ পথে। নজরে পড়ে দেশের চলচ্চিত্রের সোনালী সাক্ষ্যবহ গোলাপী এখন ট্রেনে, রূপবান কিংবা সাত ভাই চম্পা চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগুলো। এসব ছবি দেখতে দেখতে এগিয়ে যেতে হয় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার দিকে। সেখান মঙ্গলবার ছিল বিসিটিআই আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিসিটিআই গবর্নিং বডির চেয়ারম্যান মরতুজা আহমদ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বিসিটিআইয়ের গবর্নিং বডির সদস্য মোরশেদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কোর্স পরিচালক ম হামিদ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান নির্বাহী ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। হাসানুল হক ইনু বলেন, চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের হাজার বছরের দেশজ সংস্কৃতিকে ধারণ করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষের মুক্তির কথা বলবে। জঙ্গীবাদ, আগুন সন্ত্রাস এবং পাকিস্তানপন্থী রাজাকারদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যহত রাখবে। দিনব্যাপী আয়োজনে ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র : হীরালাল সেন থেকে বর্তমান প্রজন্ম’ শীর্ষক স্মারক বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু। চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ কোর্সের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের তৈরি হীরালাল সেনের ওপর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
×