ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার পার্থ টেস্ট দিয়ে শুরু অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ

স্টেইনের হুঙ্কারে ওয়ার্নারের জবাব

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২ নভেম্বর ২০১৬

স্টেইনের হুঙ্কারে ওয়ার্নারের জবাব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলুক না কেন দু’দলের ক্রিকেটাররা মাঠে নামার আগেই লড়াই জমিয়ে তুলতে ওস্তাদ। বৃহস্পতিবার পার্থ টেস্ট দিয়ে শুরু হচ্ছে অসি-প্রোটিয়া তিনম্যাচের ‘হাই ভোল্টেজ’ দ্বৈরথ। ব্যাট হাতে ফর্মের তুঙ্গে থাকা স্বাগতিক ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার বলেছেন, চোট আঘাতের ভয়ে নেটে তিনি নাকি সতীর্থ পেসার মিচেল স্টার্কের মুখোমুখিই হচ্ছেন না! এর মধ্যদিয়ে তারকা ওপেনার মূলত প্রতিপক্ষকে নিজেদের পেস আক্রমণের বিক্রম প্রকাশের চেষ্টা করেছেন। কথার লড়াইয়ে অবতীর্ণ ওয়ার্নারকে খুব বেশি দোষ দেয়া যাবে না। কারণ এর শুরুটা করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ‘স্পিড-স্টার’ ডেল স্টেইন। বোলিং পার্টনার কাগিসো রাবাদাকে ‘রেড-হট’ উল্লেখ করে জানিয়েছেন তরুণ এই দ্রুতগতির বোলারই সিরিজের পার্থক্য গড়ে দেবেন। তারই জবাবে ওয়ার্নার এমন মন্তব্য করেন। ‘রাবাদাকে নিয়ে স্টেইন কি বলেছেন, সেটি তিনিই ভাল জানেন। সফরকারীদের জানাতে চাই, ইনজুরি-আঘাতের ভয়ে নেটে আমি সতীর্থ স্টার্ককে মোকাবেলা করতে চাইনি। কারণ আমার ওকে মোকাবেলার ভয়ঙ্কর অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোচিং স্টাফ যখন আমাদের গ্রুপে ভাগ করে দিত, আমি কিছুতেই স্টার্কের দলে থাকতে চাইতাম না। ও প্রতিপক্ষের জন্য কতটা আতঙ্ক গত দুটি আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড এমনকি উপমহাদেশের মাটিতেও সমান কার্যকর। আমার মনে হয় পার্থের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান গ্রাউন্ডসে স্টার্ক তার রুদ্রমূর্তি দেখাতে পুরোপুরি প্রস্তুত।’ শ্রীলঙ্কায় টেস্টে ৩-০তে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সদ্যই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে নিজেদের ওয়ানডে ইতিাহাসে প্রথমবারের মতো ৫-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয় স্টিভেন স্মিথের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সুতরাং এই টেস্ট সিরিজটা তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সফরে ইনজুরির জন্য সবকটি ওয়ানডে খেলতে পারেননি স্টার্ক। বিপরীতে প্রতিপক্ষ শিবিরে ছিলেন স্টেইন। যদিও তার পারফর্মেন্স মোটেই উজ্জ্বল ছিল না। ওয়ার্নার বলেন, ‘এগারজন ক্রিকেটার নিয়ে একটা দল। আমরা স্টেইন বা রাবাদাকে নিয়ে আলাদা করে কিছুই ভাবছি না। ওয়ানডে আর টেস্টও এক নয়। ঘরের মাটিতে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে যথারীতি সাফল্যের মধ্য দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করতে চাই।’ স্মিথদের ব্যাটিং ব্যর্থতাই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাদের ডুবিয়েছিল। যেখানে ব্যতিক্রম ছিলেন সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। সেই আইপিএল থেকে ধারাবাহিক ছন্দে রয়েছেন তুখোড় এই ওপেনার। তবে ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে অতিথিদের সমীহের চোখেই দেখছেন তিনি। সফর হতে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে বলেই মনে করেন ওয়ার্নার। একদিন আগে টেস্টেও অসিদের উড়িয়ে দেয়ার হুঙ্কার ছোড়েন স্টেইন। সতীর্থ কাগিসো রাবাদা পার্থক্য গড়ে দেবে উল্লেখ করে ৩৩ বছর বয়সী প্রোটিয়া তারকা বলেন, ‘এমন নয় অনেকদিন ধরে খেলছে। তবে মাত্র তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রমাণ করেছে ও মাথা খাটিয়ে বল করতে জানে। সঙ্গে গতি আর সুইংটা ঈশ্বর প্রদত্ত। মাত্র ৮ টেস্টে ৩৩ উইকেটই তার প্রমাণ। সাধারণত পেস বোলাররা ২৬-২৭ বছর বয়সে ভাল করে থাকে। কিন্তু রাবাদা ব্যতিক্রম। প্রকৃতি প্রদত্ত প্রতিভা। আমার বিশ্বাস এই সিরিজে সেই পার্থক্য গড়ে দেবে। সঙ্গে মরনে মরকেল, ভারনন ফিল্যান্ডারকে নিয়ে আমাদের পেস আক্রমণ বিশ্বমানের। টেস্ট সাফল্য পেতে সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাই।’ ৮৪ টেস্টে ৪১৬ উইকেট শিকারি স্টেইন ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা পেসারদের একজন। নিয়মিত অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের ইনুজরিতে এই সিরিজে প্রোটিয়াদের নেতৃত্বে ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। ইতোমধ্যে তাদের প্রস্তুতিটা হয়েছে দারুণ। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন একধিক ব্যাটসম্যান। উইকেট পেয়েছেন নিয়মিত বোলাররা। বৃহস্পতিবার পার্থে শুরু প্রথম টেস্ট। ১২ নভেম্বর হোবার্টে দ্বিতীয় ও এ্যাডিলেডে ২৪ নবেম্বর শুরু সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়া আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের তৃতীয় ও দক্ষিণ আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে।
×