ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরগাছামুক্ত দল গঠন করতে হবে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২ নভেম্বর ২০১৬

পরগাছামুক্ত দল গঠন করতে হবে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগকে পরগাছা মুক্ত করতে যুবলীগ নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যুবলীগের প্রতি অনুরোধ, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওপর যত বাধা আসবে আপনাদের তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পরগাছামুক্ত দল গঠন করতে আপনাদের কাজ করে যেতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করলে তিনি দেশকে সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক মুক্তি দেবেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের হোটেলে ইম্পেরিয়ালে যুবলীগের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার লক্ষ্যে আয়োজিত বর্ধিত সভায় এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা যুবলীগ দক্ষিণ আয়োজিত অপর এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওবায়দুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পরবর্তী এজেন্ডা আগামী জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর জনগণের ভালবাসা অর্জন এবং মন জয় করতে হবে। খারাপ শুদ্ধ এবং সংশোধন করতে হবে। অন্যথায় অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেই এ্যাকশন শুরু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে আমাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। আমি আমার সারা জীবনের পরিশ্রমের পুরস্কার পেয়েছি। আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা এখন সর্বশক্তি নিয়ে নেমে যাব, জনগণের কাছে যাব। জনগণকে খুশি করাই আমাদের পরবর্তী এজেন্ডা। যারা আচরণগতভাবে একটু খারাপ, ক্ষমতার অহঙ্কারে জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন, জনপ্রতিনিধি হয়েও অনেকের পা মাটিতে পড়ে না; তাদের শুদ্ধ হয়ে যেতে হবে। নিজেদের এখনই সংশোধন করুন। যে এলাকায় নেতাকর্মীরা ভুল করেছেন সেই এলাকার জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আমাদের নির্বাচিত করেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে আমাদের কোন লজ্জা নেই। কারো খারাপ আচরণের কাছে আমাদের নেত্রীর অর্জনকে জিম্মি করতে পারি না। এর জন্য শাস্তি পেতে হবে। ডিসিপ্লিন ভঙ্গ করলে ডিসিপ্লিনারি শাস্তি পেতে হবে। এ ব্যাপারে কোন আপোস নেই। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আজ আমাদের পার্টির চেয়েও অনেক উচ্চতায়। তিনি যে শক্তি, জনপ্রিয়তায় দেশ চালাচ্ছেন তাতে তিনি বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত। তিনি যে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই আওয়ামী লীগকেও জনপ্রিয়, শক্তিশালী, আধুনিক এবং গতিময় করতে হবে। তবেই সরকার যেমন শক্তিশালী তেমন আওয়ামী লীগও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন, সরকার শক্তিশালী, আওয়ামী লীগ দুর্বল হলে সরকারের মধ্যে হারিয়ে যাবে। সেটা আওয়ামী লীগের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। দলের মধ্যে সরকার হারিয়ে যাবে, সরকারের মধ্যে দল হারাবে না- এটাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নবেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। এগুলো ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে দেয়ার সুগভীর চক্রান্ত। ওবায়দুল কাদের বক্তব্য শুরু করলে নেতাকর্মীরা সেøাগান দিতে থাকেন। এ সময় তাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন সেøাগান বন্ধ করুন। সুসময়ে অনেকেই সেøাগান দেন, গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করেন। দুঃসময়ে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও অনেককেই খুঁজে পাওয়া যায় না। এরা চোরাইপথে পালিয়ে যায়। দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, তাবিজ বা পানি পড়া দিয়ে সংগঠন চালানো যাবে না। কর্মসূচী দিতে হবে। জনমত সৃষ্টি করতে হবে। সারাদেশে যুবলীগকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, কর্মীর কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে নেতা হওয়া গেলেও নেতা থাকা যায় না। এজন্য নেতা না হয়ে দলের ম্যানেজার হতে হয়। রাজনীতিতে ম্যানেজ করতে হয়। এখানে বাহু কিংবা পেশিশক্তির স্থান নেই। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ঢাকা-লন্ডন দ্বিমুখীর কবলে পড়ে বিএনপি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। বিএনপি এখন বক্তৃতা-বিবৃতির দলে পরিণত হয়েছে। বর্ধিত সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সারাদেশের ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়করা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ১১ নবেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিডিউল পাওয়া গেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করবে সংগঠনটি। ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশিদ, যুবলীগ নেতা শহীদ সেরনিয়াবাত, মজিবুর রহমান চৌধুরী, আহম্মেদ আল কবির, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি, মহিউদ্দিন আহম্মেদ মহি, মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ইসমাইল হোসেন, রেজাউল করিম রেজাসহ জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
×