ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নীতিমালা তৈরির চিন্তাভাবনা

৯ হাজার ৮৮৬ ডাকঘর ই-কমার্সের আওতায় আনার কাজ শুরু

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২ নভেম্বর ২০১৬

৯ হাজার ৮৮৬ ডাকঘর ই-কমার্সের আওতায় আনার কাজ শুরু

ফিরোজ মান্না ॥ ই-কমার্স সেক্টরে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে। একদিন এই সেক্টর থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা সম্ভব। এ জন্য ই-কমার্স পলিসি তৈরি করার চিন্তা করা হচ্ছে। দেশে মোট ৯ হাজার ৮৮৬টি পোস্ট অফিসকে ই-কমার্সের আওতায় নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। তবে ই-কমার্স সফল করতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ই-কমার্স খাতটিকে উন্নত করতে বিটিসিএল থেকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে ই-কমার্সের জন্য ইন্টারনেটের মূল্য আরও কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। এ কাজে সফলতা আনতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ কথা বলেন। বেসিস জানিয়েছে, ই-কমার্সে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের কয়েক সাইট বিশ্বের নামীদামী সাইটগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা করে আসছে। সারা পৃথিবীতে সেরা পাঁচ শতাধিক নতুন উদ্যোগের মধ্যে সেরা দশটি সাইট নির্বাচন করেছে বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) অনুরোধে ই-কমার্সের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সরকার। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের এ ব্যবসায় এগিয়ে আসা ও জনসাধারণকে অনলাইনে কেনাকাটায় উৎসাহিত করতেই বর্তমান সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায় অনেক তরুণ সফলতাও অর্জন করেছে। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স সেক্টরের ভবিষ্যত নেতৃত্বে থাকবে তরুণ প্রজন্ম। এই সেক্টরে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ, সফল হওয়ার বিষয়টিও আরও বড় চ্যালেঞ্জ। ই-কমার্স সেক্টরে ব্যবসা করে সফলতা পেতেও প্রয়োজন ধৈর্য, জ্ঞান ও চেষ্টা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বাংলাদেশ ক্রমশ প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রযুক্তিবিদরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। বিশ্বের অনেক দেশ এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে আখ্যা দিচ্ছে। ই-কমার্স খাতটিকে উন্নত করতে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এজন্য আমরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে গেছি। তাই এখন থেকে আর যেন সমন্বয়ের অভাব না থেকে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদেরই শুধু উন্নয়ন হবে না, দেশ ও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদেরও অনেক উপকার হবে। কেননা গ্রামের যে নারী ক্ষুদ্র একটি ব্যবসা করেন তিনিও এই ই-কমার্সের মাধ্যমে তার ক্ষুদ্র ব্যবসাটিকে আরও বেশি প্রসারিত করতে পারবেন। গ্রামের মানুষের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্যমূল্যে তারা বিক্রি করতে পারবেন। এখানে কোন মধ্যস্বত্বভোগি থাকবে না। ফলে গ্রামের মানুষের আর্থ-সামজিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটবে। ই-কমার্সে সরকারী সহায়তা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই তথ্যপ্রযুক্তি খাতটিকে আরও বেশি উন্নত করতে আমরা বিটিসিএল থেকে যাবতীয় সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে ই-কমার্সের কথা মাথায় রেখে ইন্টারনেটের মূল্য আরও কমানো যায় কি না সেটারও চিন্তা করা হচ্ছে। দেশে ফেসবুক নির্ভর ই-কমার্স ব্যবসা হচ্ছে। এজন্য আমাদের অবশ্যই নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখতে হবে। তাই বিটিসিএল থেকে এখন সবকিছু মনিটরিং করা হচ্ছে। যেকোন সময় যে কোন সমস্যায় আপনারা বিটিসিএলের সহযোগিতা নিতে পারবেন। এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা বলেন, অনেকেই আছেন কোন প্রকার পরিকল্পনা ছাড়া শুধু মাত্র ঝোঁকের মাথায় ই-কমার্স ব্যবসা খুলে বসেন। এতে তারা সফলতার মুখ না দেখে হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন। তেমনি যারা ইতোমধ্যে স্বচ্ছ উপায়ে এই সেক্টরে ব্যবসা করছেন তারাও অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ছেন। ই-কমার্স ব্যবসায় নামার আগে সঠিকভাবে জানতে হবে আসলে ই-কমার্স কি, ব্যবসা সম্পর্কে সঠিক গাইডলাইন, ই-কমার্স নিয়ে সচেতনতা ইত্যাদি। বিশ্বব্যাপী এখন ই-কমার্স ব্যবসা উদ্যোক্তারা সফলতা অর্জন করে যাচ্ছেন। তবে তারা ধৈর্য্য ও চেষ্টার মাধ্যমে ধীরে ধীরে বড় প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। ই-কমার্স একটা আদর্শ ব্যবসা অথবা একটা বৃহত্তর আদর্শ ব্যবসার অংশ। এটা ইন্টারনেটে কাজ হয়। ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একক বা দলগত ব্যবসা পরিচালনা করা যায়। বাজারের প্রধান ৪টি অংশই পরিচালনা করে ইলেক্ট্রনিক কমার্স ব্যবসা। ব্যবসা থেকে ক্রেতা, ক্রেতা থেকে ক্রেতা এবং ক্রেতা থেকে ব্যবসা। ক্যাটালগ থেকে মেইলে অর্ডারের মাধ্যমে কোন কিছু বেশ আধুনিকতম উপায় বা পন্থা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। বেশিরভাগ পণ্য বা সেবা ই-কমার্সের মাধ্যমে দেয়া যেতে পারে।
×