ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আঁচিল একটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াছে ॥ সংক্রামক রোগ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১ নভেম্বর ২০১৬

আঁচিল একটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াছে ॥ সংক্রামক রোগ

আঁচিল একটি ভাইরাস জনিত চর্মরোগ। যারা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বয়সের দিক থেকে এরা তরুণ। বড়দের মধ্যেও এ রোগ হতে দেখা যায়। এটি একটি ছোঁয়াছে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির আঁচিল স্পর্শ করলে এ রোগ হতে পারে। প্রথমে একটি দিয়ে শুরু হলেও বাড়তে বাড়তে তা এক সময়ে অসংখ্যটিতে পরিণত হতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থায়ই এর চিকিৎসা করা প্রয়োজন। কি দিয়ে হয় এটিও একটি জীবাণু বাহিত রোগ। চধঢ়রষষড়সধ এৎড়ঁঢ় -এর ভাইরাস দ্বারা এই রোগটি হয়ে থাকে। আঁচিলের ধরন এটি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন (১) Common Wart (2) Plane Wart (3) Filiform Wart (4) Planter Wart (5) Venereal Wart Common Wart : এটি একটি ব্যথাবিহীন, শক্ত এবং উঁচু গোলাকৃতির দানা বা গোটার আকারে দেখা দেয়, যার (দানার) বাইরের দিক অস্বচ্ছ (জড়ঁময) এবং ছোট ছোট কাটার মতো (ঢ়ৎড়লবপঃরড়হ) দেখতে পাওয়া যায়। কখনও কখনও একাধিক হতে পারে। বড়দের চেয়ে বাচ্চাদের বেশি হতে দেখা যায়। তবে বড়দের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি অথবা ২টির বেশি হয় না। নখের কোণ, নখের নিচে এবং হাঁটু অথবা কনুই, অস্থি সন্ধিতে হতে দেখা যায়। ঋরষরভড়ৎস ডধৎঃ : এটা সুরু লম্বা আকৃতির হয় যা ১-২ মিঃ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এই প্রকৃতির আঁচিল মূলত ঘাড়, মুখম-ল ও মাথায় বেশি হতে দেখা যায়। এরা লম্বা ধরনের হওয়ার কারণে সাধারণ ভাবে এদের আঁচিল মনে হয় না। চষধহব ডধৎঃ : আকারে ছোট ত্বক থেকে খুবই সামান্য উঁচুতে উঠে থাকে। উপরের অংশ চ্যাপটা, ত্বকের রং নিয়ে ছোট গুটির আকারে দেখা যায়, যা মুখে এবং হাতে হয় এবং সাধারণত বাঁচ্চাদের হয়। সংখ্যার দিক থেকে এরা সাধারণত অসংখ্য হয়। সাধারণত এই ধরনের আঁচিল একত্রে এক স্থানে অনেক থাকে। চষধহঃবৎ ডধৎঃ : যা সাধারণত পায়ের পাতায় হতে দেখা যায় এবং তালুর অনেক গভীর থেকে শুরু হয়, গোলাকার, তালুর বাইরের অংশ অস্বচ্ছ ও শক্ত। তাই অনেকেই এ রকম আঁচিল নিয়ে চলাফেলা করতে ব্যথ্যা পেয়ে থাকেন বলে। ইষধফব দিয়ে কেটে পাতলা করে ফেলেন। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো আবার একাধিক হতে দেখা যায় এবং একটির সঙ্গে একটি মিলে এমন এক অবস্থায় সৃষ্টি হয় যে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মধ্যখানে বড় একটি এবং তার আশপাশ জুড়ে ছোট অনেক। এগুলিকে দেখতে মোজাইকের মতো মনে হয় বলে নামকরণ করা হয় গড়ংধরপ আঁচিল। ঠবহবৎবধষ ডধৎঃ : একে পড়হফুষড়সধ ধপপঁসরহধঃধও বলা হয়। অন্যান্য আঁচিলের মতো এরা শক্ত নয়। এরা নরম (ঝড়ভঃ) থলের মতো ঝুলে থাকে (চবফঁহপঁষধঃবফ)। এ ধরনের আঁচিল সাধারণত যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমে এরা ছড়িয়ে থাকে। তাই মূলত এরা পায়ু এবং যৌনাঙ্গ অথবা এর আশপাশের এলাকায় হয়ে থাকে এ ধরনের আঁচিল অত্যন্ত সংক্রামক এবং যেহেতু যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এরা ছড়িয়ে থাকে তাই এই ধরনের আঁচিলে যারা আক্রান্ত হয় তারা বেশির ক্ষেত্রেই যুবক-যুবতী। আঁচিলের সঙ্গে গোলমাল বেধে যায় এমন একটি রোগের নাম মোলাস্কাম কনটাজিওসাম। এটি দেখতে আঁচিলের মতো এবং সাধারণভাবে দেখলে আঁচিল বলে মনে হয়। এটিও একটি ভাইরাস জনিত চর্মরোগ এবং এটিও আঁচিলের মতো ছোঁয়াছে। তবে এই ভাইরাস আর আঁচিলের ভাইরাস এক নয়। এই রোগটি সাধারণত চড়ী মৎড়ঁঢ়-এর ভাইরাস দিয়ে হয়। এটি দেখতে গোলাকার এবং ২-৫ মি. মি. ব্যাসার্ধযুক্ত। সাদা অথবা গোলাপি রংবিশিষ্ট শক্ত এবং মোমের মতো স্বচ্ছ আবরণ যুক্ত যার মধ্য খানেকটি গর্ত দেখতে পাওয়া যায়। এটিতেও সাধারণত বাচ্চারাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। মুখ, হাত, তলপেট এবং যৌনাঙ্গ আক্রান্ত হতে দেখা যায়। পায়ের তলার চষধহঃবৎ আঁচিলের সঙ্গে ঈড়ৎহ-এর গভীর মিল দেখতে পাওয়া যায়। তবে অনেকেই দেখবেন পায়ের নিচে শক্ত হয়ে যাওয়া ঈড়ৎহ-এর কারণে হাঁটতে পারে না। হাঁটলে ব্যথা পায়। এটা আঁচিল নয়, আবার এটা কিন্তু ভাইরাস দিয়েও হয় না। এটা শুধু পায়ে খাওয়া চৎবংংঁৎব- এর কারণেই হয়। কাজেই ঈড়ৎহ-এর ক্ষেত্রে চৎবংংঁৎব যেন না খায় তার ব্যবস্থা করতে পারলেই উপসর্গ কমে যেতে থাকে। আবার আঁচিল বা মোলাস্কাম দুটোই এমনি এমনিই চলে যেতে পারে। তবে মোলাস্কাম ছড়িয়ে পড়ার আগেই কিউরেট বা চেঁছে ভেতরের জিবাণুসহ তুলে ফেললে খুবই ভাল ফল পওয়া যায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ঘাড়ের ভাঁজে কিম্বা বগলের ভাজে ছোট ছোট আঁচিলের মতো হতে দেখা যায়। এটা কিন্তু আঁচিল নয়। এটা ভারইরাস জনিত রোগ নয়। এটা বড় এবং মোটা মানুষদেরই বেশি হয়। একে বলে ঝশরহ ঃধম। দেখতে মনে হয় যেন আঁচিল। আঁচিল নিজের থেকেই ভাল হয়ে যেতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার প্রয়োজন জরুরী হয়ে পড়ে। তবে কোন ক্ষেত্রে কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন হবে তা কেবল একজন বিশেষজ্ঞের সিদ্ধান্তই নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে ঞৎরপযষড়ৎড়ধপবঃরপ ধপরফ, চযবহড়ষ, ংধষরপুংষরপ ধপরফ, বষপপঃৎড় পধঁঃবৎরুধঃরড়হ, পঁৎৎবঃধমব, পৎুড়ঃযবৎধঢ়ু ষরয়ঁরফ হরঃৎড়মধস ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ডা. দিদারুল আহসান চর্ম, যৌন, এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ
×