ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাছের মৃত্যুতে শোক!

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১ নভেম্বর ২০১৬

গাছের মৃত্যুতে শোক!

একটি গাছের মৃত্যু এ আর কী ঘটনা। তবে এবার একটি গাছের মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে শোক বইছে। গত শনিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রখ্যাত সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি জ্যাকারান্ডা গাছ হঠাৎ ভেঙে পড়ে। এ নিয়ে পরদিন সকালে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি প্রেসরিলিজ প্রকাশ করে দুঃখ প্রকাশ করে। খবরটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর পর সোস্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় লেখালেখি। অনেক সাবেক শিক্ষার্থী ছুটে যায় প্রিয় ক্যাম্পাসে। অনেকে গাছটির গোড়ার কাছে কিছুসময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অনেকে গাছটির গোড়ায় দাঁড়িয়ে স্যালুট দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এই গাছটিকে প্রিয়, বিখ্যাত, ঐদ্রজালিক, সুন্দর ও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে প্রিয় উপাদান বলে আখ্যা দেয়। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে এই গাছটি এতপ্রিয় কেন? আজ থেকে ৮৮ বছর আগে পরগাছাজাতীয় এই ফুলগাছটি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসের সামনে রোপণ করা হয়। শেষ পর্যন্ত গাছটির প্রস্থ হয়েছিল ১৮ মিটার। এতদিনে এই বিশ্বদ্যিালয়ের অসংখ্য শিক্ষাথী এই গাছটির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছে। আর সমাবর্তনের সময় গাছটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠত। সমাবর্তনে এই গাছের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি চলত। আবার একটি কুসংস্কারও ছিল সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। অনেকেই বলত- এই গাছের নিচে না দাঁড়ালে ভালভাবে স্নাতক শেষ করা যাবে না। গাছটির মৃত্যুকে অনেকে অত্যন্ত বিয়োগান্তক ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সারাহ ব্রেনান এক পোস্টে লিখেছে, আমার শিক্ষা জীবনে আমি একশ’বার নয়, হাজার হাজার বার এই গাছটির নিচে গিয়েছি। এটি আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল। সাংবাদিক এ্যানাবেল ক্রাব লিখেছেন, এটি অত্যন্ত দুঃখের সংবাদ। এই সৌন্দর্যের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। অস্ট্রেলিয়ার প্রখ্যাত লেখক পিটার ফিট্জসিমন লিখেছেন, ১৯৮০ সালের এক বসন্তে আমি দেখলাম গাছটিতে ফুল ধরা শুরু হয়েছে। এটি দেখার পর আমি বুঝলাম এখন আমার পড়াশোনা করার সময়। এর ছয় সপ্তাহ পর আমার পরীক্ষা শুরু হলো। আমি ভালভাবে পাস করলাম। খবরে বলা হয়েছে, ১৯২৮ সালে প্রফেসর গ্রোয়ি জি. এই গাছটি রোপণ করেন। এর পর থেকে এই গাছটি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাথীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেক শিক্ষক কর্মজীবন থেকে অবসরে যাওয়ার আগে এই গাছের নিচে বসে গ্রাজ্যুয়েশন ডিনারে অংশ নিতেন। -দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি অবলম্বনে
×