ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

শিক্ষার হার বাড়ছে, মান বাড়ছে কই

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৬

শিক্ষার হার বাড়ছে, মান বাড়ছে কই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও উপাচার্য ডক্টর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বাহাস আরেকবার শিক্ষাব্যবস্থার দৈন্যের দিকটাকেই প্রকটিত করেছে। প্রশ্নোত্তরে ছাত্রের মেধা জানার পদ্ধতিটি অতি পুরনো। কে যে কবে এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন, তা জানা নেই। কিন্তু এটা তো জানি যে, বছর শেষে শিক্ষার্থীর সামনে একটি লিখিত প্রশ্নমালা রাখার আগে একটা প্রস্তুতিপর্ব থাকে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে পুরো একটি বছর শিক্ষণীয় বিষয়গুলোতে পাঠদান করা হয়। এই পাঠদান চলে সিলেবাস কারিকুলাম অনুযায়ী। বলা যায়, পুরো প্রক্রিয়াটির একটি যুক্তি রয়েছে। পাশাপাশি শ্রেণী কক্ষে সমবেতভাবে শিক্ষা গ্রহণ করলেও পরীক্ষাদানকালে একজন ব্যক্তি সে তার নিজস্ব জ্ঞানবুদ্ধি অনুযায়ী প্রশ্নের জবাব দেয়। অবশ্য প্রশ্নের একাধিক জবাব দেয়া থাকলে জ্ঞানবুদ্ধির প্রয়োগ ততটা করতে হতো না দীর্ঘকাল ধরেই। মুখস্থ বিদ্যার সহায়তায় সঠিক উত্তরটিতে টিকচিহ্ন দিলেই ‘কেল্লাফতেহ’ বলা যায়। মুখস্থ বিদ্যা প্রকৃত জ্ঞান কিনা সে বিষয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার পর সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হয়েছে। কিন্তু এ পদ্ধতিও হয়ে পড়েছে গাইডবুকনির্ভর। এমনকি যারা পাঠদান করেন তারাও এ পদ্ধতিতে দক্ষ হতে পারেননি। মূলত সৃজনশীল পদ্ধতির জন্য যে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন তা অপ্রতুল। তদুপরি ব্যাপক পড়াশোনার প্রয়োজনও। সংবাদপত্রে প্রায়শই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল বিষয়ে কোচিংও করতে হচ্ছে। এখানেও মুখস্থ বিদ্যা প্রয়োগ করা হচ্ছে। যে উদ্দেশ্যে এই পদ্ধতির চালু, তা মাঠে মারা গেছে, সর্বার্থে বলা যায় না। শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ বহাল রেখে নয়া পদ্ধতি চালু সহজ কাজ যে নয়, তা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। তবে সৃজনশীল হোক আর নৈর্ব্যক্তিকই হোক, কিংবা জবাবদানের পদ্ধতি যাই হোক, পরীক্ষক মেধা বিচার করেন ব্যক্তির, সমষ্টির নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এ যাবতকালে সমন্বিত ও সুসংহত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। ইংরেজী মাধ্যমের নার্সারি স্কুল, ক্যাডেট কলেজ, পাশাপাশি বাংলা মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মাদ্রাসা শিক্ষাসহ নানামুখী শিক্ষার শীর্ষ স্থানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যার মধ্যে স্বাধীন জাতির বাস্তব প্রয়োজন উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা বলতে গেলে অনুপস্থিত। যে কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় এক ধরনের নৈরাজ্যের উপস্থিতি যেমন স্পষ্ট, তেমনি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিরাজমান প্রায় শূন্যতা। ইংরেজ শাসকরা কেরানি তৈরির উদ্দেশ্যে যে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল, বহুকাল ধরে এ কথা দেশবাসী শুনে আসছে। এই বক্তব্যে দেশবাসী বিভ্রান্ত হয়েছে। অনেকে এমনটাও বলতেন যে, একটি ‘অসভ্য’ দেশের মানব সমাজকে সভ্য, শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিবান করার জন্যই ইংরেজ এ দেশে এসেছিল। ইংরেজ না এলে উপমহাদেশবাসী অন্ধকার বর্বর যুগেই থেকে যেত। কিন্তু এর বিপরীত ধারণার মানুষজনও রয়েছেন। যারা মনে করেন ইংরেজের অধীনে না এলেই বরং এ দেশ স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে যেত। ইংরেজ যখন এ দেশে প্রথম আসে তখনকার উপমহাদেশবাসী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতায় অগ্রগামী ছিল। ইংরেজদের শিক্ষাব্যবস্থা শুধু কেরানীই তৈরি করেনি, পুলিশ, মিলিটারি, সিভিল সার্ভিসের উচ্চপদস্থ দেশীয় অফিসার এবং ইঙ্গ-বঙ্গ সমাজও তৈরি করেছে। তাদের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে শোষণযন্ত্রের অচ্ছেদ্য যোগসূত্র ছিল। শোষণযন্ত্রের চাহিদা পূরণের জন্যই এ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা এবং দেড়শ’ বছর ওই চাহিদা পূরণ করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে শোষণযন্ত্রের নাট-বল্ট, শ্যাফট, গোলাগুলি, বন্দুক, কামান, পিস্টন, বল ও বলবিয়ারিং, মোটর প্রভৃতি তৈরি কারখানারূপে কাজ করেছে। ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে’Ñ এই একটি পঙ্ক্তি বাঙালী কবি এ শিক্ষাব্যবস্থার দর্শন ব্যক্ত করেছেন অনেককাল আগেই। এ শিক্ষাযন্ত্র হতে উৎপন্ন লোকদের কাছে নিরক্ষর দেশবাসী ‘চাষাভূষা’ এবং ‘তুই তুমি’ হিসেবে পরিগণিত হতো বিশ শতকেও। শোষক ও শোষিত, শাসক ও শাসিত এবং প্রভু ও ভৃত্যে বিভক্ত একটি সামাজিক কাঠামো সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইংরেজ কর্তৃক সৃষ্ট সেই শিক্ষাব্যবস্থা পাকিস্তান যুগে এবং পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশে অবিকল বিদ্যমান বলা যায়। শ্রেণীর তৈরি শিক্ষা ব্যবস্থায় পাসের হার অত্যধিক ছিল না, আবার শিক্ষার মানও ছিল উন্নত। এ দেশে বহুমুখী শিক্ষা পদ্ধতি দেশের মানুষকে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিল। নিচে হচ্ছে ভুখানাঙ্গা অথবা নেংটি গামছা সম্বল মোট জনসংখ্যার কমপক্ষে শতকরা ৮০ জনের ‘তুই তুমি’ খেটে খাওয়া শ্রেণী। তার ওপরে ছিল লুঙ্গি ও পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত। কিন্তু কায়ক্লেশে জীবনযাপনরত কায়িক শ্রমবিমুখ ‘আপনি’র মধ্যবিত্ত শ্রেণী। এই শ্রেণীতে ছিল শতকরা আঠারো জন, তার ওপরে ছিল মোট জনসংখ্যার উর্ধপক্ষে দু’জন নিয়ে গঠিত স্যার, ম্যাডাম, মিসদের কায়িক শ্রমবিমুখ শ্রেণী। অফিসার, ব্যবসায়ী, আমদানি-রফতানিকারক, শিল্পপতি, ঠিকাদাররূপে কিংবা বড় বড় উকিল-ডাক্তার এবং প্রকৌশলীরূপে এই শেষোক্ত শ্রেণীটিই ঠিক ব্রিটিশ এবং পাকিস্তানী আমলে দেশের ওপর প্রভুত্ব করেছেন এবং শতকরা আশিজন মানুষকে ক্ষাত্রবলের সাহায্যে শাসন ও শোষণ করেছেন। মধ্যবিত্ত এ শ্রেণীটিকে লোকবল এবং ক্ষাত্রবল দিয়ে সহায়তা করেছে। এরা পরস্পরের সঙ্গে প্রবঞ্চনার প্রতিযোগিতায়ও লিপ্ত হতো। এই ছিল প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ফসল আমাদের সমাজজীবন ও দেশের প্রকৃত চেহারা। তাই বার বার শিক্ষা আন্দোলন হয়েছে পাকিস্তানকালে, বাংলাদেশেও শিক্ষাব্যবস্থায় অরাজকতা পুরনো বিষয়। তবে এ অরাজকতা আকস্মিক কিছু নয়। সামরিক জান্তা শাসকরা এ অরাজকতা জিইয়ে রেখেই অভিজাত শ্রেণীকে দেশের মানুষের শ্রমের বিনিময়ে উৎপন্ন ধনৈশ্বর্য ভোগ দখল করিয়েছে। এ অরাজকতা বজায় রাখতে পেরেছিল বলেই তারা দেশের মানুষের ওপর চাবুক ঘোরাতে পেরেছে। করতে পেরেছে প্রভুত্ব। যা ছিল সুপরিকল্পিত অরাজকতা। সে সময়ও দাবি উঠেছিল সমগ্র জাতির জন্য একটি মাত্র সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থা চালুর। কারণ, সমন্বিত অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারী-বেসরকারী এবং স্পেশালের ব্যবধান তথা এক জাতিকে তিন-চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করার ব্যবস্থা থাকতে পারে না। যদিও এটা হচ্ছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কোন সরকারই আর অভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতির প্রতি সদয় হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়েছিলেন, চক্র এবং চক্রান্তের দুর্গ ভাঙ্গার। কিন্তু তার আগেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এটা বাস্তব যে, উচ্চবিত্ত, অভিজাত শ্রেণী এবং আমলাদের হাতের ক্রীড়নক কোন সরকার অভিন্ন শিক্ষানীতি চালুর মতো বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহসী নয়। আর বর্তমানের শিক্ষা ব্যবস্থা নানামুখী। হরেক কিসিমের শিক্ষা পদ্ধতি হরেক কিসিমের শিক্ষার্থী তৈরি করছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর চিন্তাভাবনা আলাদা, আবার একই শিক্ষার্থী বিপরীতধর্মী নানা চিন্তাভাবনাও করে। সুতরাং তাদের মধ্যে পারস্পরিক চিন্তাভাবনা আদান-প্রদান সহজসাধ্য নয়। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা চিন্তার লক্ষ্য ছিল দেশবাসীর বৃহত্তর অংশকে প্রকৃত জ্ঞান এবং বিদ্যার আলোকে হতে বঞ্চিত রেখে একটি ক্ষুদ্র শিক্ষিত শ্রেণীর সহযোগিতা এবং সহায়তায় জনগণকে শোষণ ও শাসন করার যে প্রথা তা আমূল বদলে ফেলা। বঙ্গবন্ধুর জানা ছিল শত শত বছর বিদেশী শাসনাধীন থাকার ফলে বৃহত্তর জাতীয় প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে এদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। পাকিস্তানীরা দেশবাসীকে ধর্মের নামে গোঁড়ামি ও সনাতন প্রথা পদ্ধতির নামে নানা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন রাখার সজ্ঞান চেষ্টা অবিরত চালিয়েছে। এজন্য ভাড়াটে লোকের অভাব হয়নি। ড: কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সুপারিশে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনায় প্রতিফলন রয়েছে। সেই প্রতিবেদন এখন ঘুণপোঁকার খাদ্য। সরকার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যে নানা নিরীক্ষা–পরীক্ষা চালু রেখেছে তার সুফল শুধু মেলে পাসের হারে। কিন্তু জ্ঞানের বহরে সে পশ্চাদপদে অবস্থান করে। শিক্ষা বহুমুখী হবার কারণে বহুমুখী অব্যবস্থা বিরাজমান। দেশে নিরক্ষরের হার কমছে কিন্তু সুশিক্ষার হার বাড়ছে না। এদেশের মানুষ এখনও অশিক্ষা, কুশিক্ষা এবং নানা অন্ধ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। এখানে শ্রেণীভেদে শিক্ষার ভেদাভেদ বিদ্যমান। বিদ্যান ও সুশিক্ষিতরা একটি আলাদা শ্রেণী। এরা শাসকশ্রেণীও বটে। ভদ্র বা উচ্চ শ্রেণীর জন্য এক ধরনের এবং সাধারণ লোকদের জন্য ভিন্ন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ করা না গেলে অরাজকতা বাড়াবেই। শিক্ষা খাতে দুনীর্তি ও অনিয়মের লাগাম টানা যাচ্ছে না। তার দাপট দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষই জানেন দেশের এই খাতটি ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার আকীর্ণ হয়ে পড়েছে। সময় মতো পরীক্ষা গ্রহণ ও নিয়মিত তার ফল প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যবই ছাপিয়ে তা বিতরণ করার কৃতিত্ব যেমন সত্য, তেমনি শিক্ষাখাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিষটিও মনে রাখা জরুরী। গত শনিবার জনকণ্ঠেই ছাপা হয়েছে বদলির তদ্বিরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসার নিষেধাজ্ঞা। তদ্বির ছাড়া এই মন্ত্রণালয়ে কোন কাজ হয় না এটা সর্বজনবিদিত। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা বেশ মজবুত বলে প্রচার রয়েছে। একসময় তো বলা হতো শিক্ষা ভবনের প্রতিটি ইটই দুর্নীতিগ্রস্ত। উপরি ছাড়া কোন কাজ হয়না। সে অবস্থা থেকে খুব একটা উত্তরণ ঘটেছে বলা যায় না। যদি হতো তবে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হতো না। শিক্ষামন্ত্রী দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি সুশৃক্সক্ষল, দক্ষ ও যোগ্য কাঠামোর ওপর দাঁড় করানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন। তার তৎপরতা গোড়ার দিকে প্রশংসিত হলেও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কবলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঠেলে দেয়ার পর অসুস্থ ব্যাধি আক্রমণ হেনেছে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। মন্ত্রীর শুরুর দিকের নুমনা এখন আর মেলে না। পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ নিয়ে অনিয়ম দূর করা যায়নি। দুর্নীতিও আষ্টেপিষ্ঠে গেঁথেছে শিক্ষার দেহে মননে মেধায়। যে কারণে কেজি দরে ছাপা পাঠ্যপুস্তক বিক্রি করা হয়েছে অথচ এসব পুস্তুক প্রকাশে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দেশে এসএস সি ও এইচ এসসি পরীক্ষায় মেধাবীরা জিপি গোল্ডেন বা জিপি ফাইভ। পেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হচ্ছে। বিরাট অংশই উত্তীণ হতে পারছে না। শিক্ষামন্ত্রী দেশে শিক্ষার হার বাড়াচ্ছেন, কিন্তু এরা কেউ উচ্চশিক্ষার উপযোগী হতে পারছে না। সে কারণেই শিক্ষামন্ত্রী ক্ষোভ জানান। ক’দিন আগেই বলেছেন, ঢাবির একটি সিটের বিপরীতে ৪০ জন আবেদন করেছেন। ওখানে পাস-ফেলের ব্যাপার নেই। এক ঘন্টায় তারা একটা বাছাই করেছেন। কি করে ৩৯ জনকে বাদ দেয়া যায়।৩৯ জনকে বাদ দেয়ার জন্যই এই ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়। দু’বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন ইংরেজিতে মাত্র তিন জন পাস করেছে। অথচ শেষপর্যন্ত তারা সব আসনই পূর্ণ করেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষোভ এখানেই। তিনি মনে করেন এতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে। আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থার উপর অন্যদের আস্থা কমে যাচ্ছে। একজন শিক্ষক বলেছেন, নীলখেতের ফুটপাত থেকে আনা বই থেকে কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন করেন। এতে বিভ্রান্তি বাড়ছে। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যকে অসত্য বলেছেন উপচার্য। তার মতে টেক্সট বই থেকে প্রশ্ন করা হয়। তাদের বাহাস থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়, পরীক্ষা পদ্ধতিতে যেমন গোলমাল রয়েছে তেমনি প্রশ্নপত্রেও। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তো বহুল প্রচলিত। শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা থেকে দেশবাসী উত্তরণ চায়। এভাবে বাহাস না করে উচিত বিষয়ের গভীরে যাওয়া। তাতেই শিক্ষার মান ক্ষুণেœর কারণ মিলবে।
×