ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৭ নবেম্বর রাজধানীতে শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৩১ অক্টোবর ২০১৬

৭ নবেম্বর রাজধানীতে শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতি বছরের মতো এবারও ৭ নবেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করবে বিএনপি। তবে সরকারী দল আওয়ামী লীগ জাঁকজমকভাবে একটি সফল কাউন্সিল করার পর দ্রুত কমিটি দিয়ে দলকে চাঙ্গা করায় বিএনপিও দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে ৭ নবেম্বর উপলক্ষে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করতে চায়। এজন্য দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রস্তুতি সভা করার পর এখন বিভিন্ন ইউনিট কমিটিও মতবিনিময় সভা করে প্রস্তুতি জোরদার করছে। এদিকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে বিএনপি। জানা যায়, ৭ নবেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি পেলে বিএনপি রাজধানীর প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড এবং আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক জড়ো করে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের চেয়ে বেশি লোক জড়ো করতে চায়। আর এ ধরনের সমাবেশ সফল করতে তারা জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোরও সহযোগিতা চেয়েছে। ঢাকা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করে সমাবেশে বিপুলসংখ্যক লোক নিয়ে জড়ো হতে স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিএনপি কার্যালয় থেকে জানা যায়, ৭ নবেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি পেলে বিকেলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের জড়ো করে বড় ধরনের শোডাউন করবে দলটি। আর ৭ নবেম্বর না দিয়ে ৮ নবেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিলেও তারা সেভাবেই প্রস্তুতি নেবে। কোন কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না দিলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বড় ধরনের সমাবেশ করার চেষ্টা করবে তারা। আর যদি এই স্পটেও সমাবেশ করার অনুমতি না পায় তাহলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বা মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করবে। তবে বিএনপি নেতারা আশা করছেন তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করার অনুমতি পাবেন। উল্লেখ্য, ১৯ মার্চ জাঁকজমকভাবে জাতীয় কাউন্সিল করে ৫৯১ সদস্যের ঢাউস কমিটি দিয়েও দলকে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় করতে পারেনি বিএনপি। বরং দলের ভেতর এখন নতুন করে নানামুখী সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যে ইস্যুভিত্তিক কিছু ঘরোয়া কর্মসূচী পালন করলেও এসব কর্মসূচীতে দলের নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি ঘটে না। এর ফলে এসব কর্মসূচী সফল হয় না। তাই ৭ নবেম্বর উপলক্ষে রাজধানীতে বড় সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে চান বিএনপি হাইকমান্ড। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ৭ নবেম্বর জাঁকজমকভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাই আমরা। আশা করছি সরকার সমবেশ করার অনুমতি দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেবে। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত বিএনপি নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ স্মরণে জিয়া পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ৭ নবেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবেই। সম্প্রতি আরেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ৭ নবেম্বরের সমাবেশে আওয়ামী লীগের চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি লোকসমাগম করা হবে। এর আগে ৭ নবেম্বরের সমাবেশ সফল করতে শনিবার রাজধানীর ভাসানী ভবন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত যৌথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে হবে। সেদিন যেন আমরা এমন একটা সমাবেশ করতে পারি, যা থেকে প্রমাণিত হবে যে, বিএনপি এখনও দেশে এক নম্বর রাজনৈতিক দল। দেশে বিএনপি থেকে বড় কোন রাজনৈতিক দল নেইÑ ৭ নবেম্বর এটা আমাদের প্রমাণ করতে হবে। তিনি বলেন, ৭ নবেম্বর সমাবেশ করতে পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
×