ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ ময়মনসিংহের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ ॥ আজ শুনানি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩১ অক্টোবর ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ ময়মনসিংহের ৮ রাজাকারের  বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ ॥ আজ শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ও তার ছেলে সাজ্জাদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন পক্ষ। আজ এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কক্সবাজারের পলাতক আসামি ওসি সামসুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তী আদেশের জন্য ৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর রানাদাশ গুপ্ত, প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন ও প্রসিকিউটর সুলতান মুহাম্মদ সিমন। গ্রেফতারি পরোয়ানা ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কক্সবাজারের পলাতক রাজাকার ওসি সামসুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তী আদেশের জন্য ৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ৭ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে কারাগারে থাকা অবস্থায় ৭ আসামির মধ্যে ১ জন মারা যান। বাকি ৬ জন কারাগারে রয়েছেন। ৩৬ বছর পর... ১৯৮০ সালে পরিবারসহ ভিয়েতনাম থেকে পালিয়েছিলেন ইয়েন সিয়াও। সমুদ্রে ছোট একটা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় সবার সঙ্গে মরতে বসেছিলেন তিনি। একটি জাহাজ তখন তাদের সবাইকে উদ্ধার করেছিল। সেদিন তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন এমন একজনকে ৩৬ বছর পরে খুঁজে পেয়েছেন সিয়াও। ১৯৮০ সালের অক্টোবর মাস। সিয়াওয়ের বয়স তখন চার বছর। ভিয়েতনামে যুদ্ধ শেষ হয়েছে কয়েক বছর হলো। মার্কিন সেনাদের হারের পর দক্ষিণ ভিয়েতনামের পতন হলো উত্তর ভিয়েতনামের সেনাদের কাছে। সে সময় প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছিলেন দক্ষিণ ভিয়েতনামের অনেকেই। যাদের মধ্যে ছিল ইয়েন সিয়াও ও তার পরিবার। সমুদ্র পথে পাড়ি জমানোর পর মৃত্যুর মুখে পড়েছিল ছোট একটা নৌকায় গাদাগাদি করে থাকা ৮২ জন মানুষ। পথ হারিয়ে সমুদ্রে পাঁচ দিন ধরে ভাসছিল নৌকাটি। তখনই দেখা মেলে একটি জাহাজের। সম্প্রতি ফেসবুকে ইয়েন সিয়াও লিখেনÑ যখন আমি আমার জীবনের পিছনে ফিরে তাকাতে চাইলাম তখন দেখলাম একটা জায়গায় শূন্যতা রয়ে গেছে। আমার জীবনের প্রথম পাঁচ বছর হারিয়ে গিয়েছিল। আমার বাবা-মা যুদ্ধের সময়টা এবং কেন আমরা পালিয়েছিলাম সেটা নিয়ে একেবারেই কথা বলতেন না। আমি চেয়েছিলাম আমার জীবনের হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টুকু খুঁজে বের করতে। যে জাহাজ তার জীবন বাঁচিয়েছিল তার একটা ছবি পোস্ট করেছিলেন। ফেসবুকে তিনি আরও লিখেনÑ ‘আমি যখন ছবিটা পোস্ট করি তখন লিখেছিলামÑ আমার শুধু জাহাজটার নাম মনে আছে। ভেবেছিলাম সেটা খুঁজে পেতে ফেসবুকে কেউ আমাকে সাহায্য করবে।’ জাহাজটির নাম ছিল বার্জ টাস্টা। নরওয়ের মালিকানাধীন একটি তেলের ট্যাঙ্কার। দীর্ঘ ৩৬ বছরে জাহাজটির কোম্পানি বদলে গেছে। কিন্তু ফেসবুকে অসংখ্য শেয়ারের বদৌলতে খুঁজে পাওয়া গেল বার্নার্ড ওয়েগেনকে। সেদিন ইয়েনি সিয়াওকে উদ্ধার করা বার্জ টাস্টার ক্রুদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণত সমুদ্রের মাঝে মূল ইঞ্জিন বন্ধ করি না। সেদিন সেটা করা হয়েছিল। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে। ডেকে উঠে দেখলাম বহু মানুষ নিয়ে একটা নৌকা।’ ইয়েনি বলেন, বার্জ টাস্টা জাহাজটি সেদিন থেমেছিল বলেই মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে গিয়েছিল অনেক মানুষ। সেদিন ওই জাহাজটি যদি আমাদের উদ্ধার না করত আমরা নির্ঘাত মারা যেতাম। আমাদের জাহাজে পানি ও খাবার ফুরিয়ে গিয়েছিল। যমদূত এসে আমাদের দরজায় কড়া নাড়বে বলে আমরা ভয়ে ছিলাম।’ বার্নার্ড ওয়েগেনের এখন অনেক বয়স হয়েছে। মাথার চুল হারিয়েছেন। চোখে চশমা। ইয়েনি সিয়াও এখন সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন। তবে ৩৬ বছর পরে এসে সেদিনকার সেই চার বছরের মেয়েটি অবশেষে ধন্যবাদ জানানোর সুযোগ পেলেন অন্তত একজন উদ্ধারকারীকে। বিবিসি অবলম্বনে।
×