ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেলা পরিষদ নির্বাচন পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩১ অক্টোবর ২০১৬

জেলা পরিষদ নির্বাচন পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জেলা পরিষদ নির্বাচন যে পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তা সংবিধানের মৌলিক বিষয়ের পরিপন্থী বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখানে ইলেক্টোরাল কলেজ আদালত তৈরি করা হয়েছে। যারা স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তারাই ভোট দিতে পারবেন। এতে জনগণ প্রত্যক্ষ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তাই এ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের অংশ নেয়া না নেয়ার ব্যাপারে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এর আগে কখনও জেলা পরিষদ নির্বাচন ভোটের মাধ্যমে হয়নি। সংবিধানে বলা আছে, স্থানীয় সরকারই হউক বা জাতীয় নির্বাচনই হোক তা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে হতে হবে। তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা আলোচনা করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন দেশে গত তিন মাসে বিনা বিচারে ১৫১ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মাওলানা আশরাফি ইয়াসিন তিন দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া জামায়াতের ঝিনাইদহের ১১ জন নেতাকর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। কোথাও কোন জবাবদিহিতা নেই। মানুষ তুলে নিয়ে মেরে ফেললে কোন জবাব দিতে হয় না। এ ধরনের ঘটনার জন্য আগে সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রেসনোট দেয়া হতো। এখন এই প্রথা চলে গেছে। ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ভোটের ফল তাদের অধীনে নিয়ে যাচ্ছে। কোথাও ভুয়া ভোট দেয়ার মাধ্যমে আবার ভোটের আগে রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে। এমনও হয়েছে বিরোধী দল জিতেছে তারপরও ফল কেড়ে নেয়া হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা এখন আর কাজ করছে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কখনই কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ভবিষ্যতে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন না। এ নির্বাচন কমিশনের কোন মেরুদ- নেই। তাই এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জেলা পরিষদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আর এ বিষয়ে কোন আইনও করা হয়নি। ফলে এ নিয়ে অস্পষ্টতা থেকে যায়। তিনি বলেন, জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে আমাদের শরিক দলের প্রায় সবাই প্রশ্ন রেখেছেন এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না। ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মনজুরুল ইসলাম ভুইয়া, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপি মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা, লেবার পার্টির মহাসচিব শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল করিম, জমিয়তে ওলামার মহাসচিব মুহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ। আগামী নির্বাচনে কাউকে ভোট কারচুপি করতে দেবে না বিএনপি- দুদু ॥ আগামী নির্বাচনে বিএনপি কাউকে ভোট কারচুপি করতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। তবে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন না। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত বিএনপি নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ স্মরণে জিয়া পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি নেতা অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ড. লুৎফর রহমান খান, আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
×