ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জেতার প্রত্যাশা মিরাজ ও ওকসের

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

জেতার প্রত্যাশা মিরাজ ও ওকসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দ্বিতীয়দিন শেষেই ম্যাচের তৃতীয় ইনিংস এগিয়ে গেছে অনেকখানি। চলমান মিরপুর টেস্টে অবশ্য এখন পর্যন্ত বেশ ভাল অবস্থানেই আছে বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের উইকেট হারানোটাই বাড়তি অস্বস্তির কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরও ১২৮ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেও ৬ উইকেট শিকার করা তরুণ ডানহাতি অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ দাবি জানালেন দলের স্কোর যেটাই হোক লড়াই করবে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ দলকে খুব বেশি দূরে যেতে দিতে চায় না ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ২৪ রানের লিড নিয়ে শেষ করলেও এবার তাদের লক্ষ্য দ্রুতই বাংলাদেশকে অলআউট করা। অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস সেই প্রত্যাশা জানিয়ে দাবি করলেন ২৫০ রানের মধ্যে জয়ের লক্ষ্য থাকলে সেটা তাড়া করা সম্ভব। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে চলমান টেস্টে শনিবার দ্বিতীয়দিনের খেলা শেষে এসব কথা বলেন এ দুই ক্রিকেটার। আরও আগেই হয়তো ইংল্যান্ডের ইনিংসটা গুটিয়ে যেতে পারতো। প্রথম ইনিংসেই এগিয়ে থেকে আরও ভালভাবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু নবম উইকেটে ৯৯ রানের বড় জুটি গড়ে উল্টো লিড নিয়েই শেষ করেছে সফরকারী ইংল্যান্ড। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘আসলে এটাই টেস্ট খেলার নিয়ম। এখানে এমন নয় যে জুটি হবে না। এখানে ১০-১১ নম্বর পর্যন্ত জুটি হতে পারে। ওই সময় আমাদের বোলাররা ভাল বোলিং করেছে। কিন্তু ওরাও ওই সময় ভাল ব্যাটিং করেছে।’ তবে ক্যারিয়ারের প্রথম দুই টেস্টে নৈপুণ্যের দিক থেকে বাংলাদেশের সেরা হয়ে গেছেন মিরাজ। কিন্তু উইকেট পাওয়ার বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি উদগ্রীব থাকেন না বলেই দাবি জানালেন। স্পিনাররা সাধারণত পুরনো বলে বোলিং পছন্দ করলেও তিনি আত্মবিশ্বাস পান নতুন বলে। সেই সঙ্গে নিজের ব্যাটিংটার উন্নতি করে অবদান রাখতে চান। মিরাজ বলেন, ‘দুইবার পাঁচ উইকেট পেয়েছি। আমার কাছে খুব ভাল লাগছিল। আমি কখনই আশাকরি না যে পাঁচ উইকেট নেয়া লাগবে। চেষ্টা করি সবসময় যেন স্বাভাবিক পারফর্মেন্স করতে পারি দলের জন্য। আমার জন্য অবশ্যই ভিন্ন চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের দলে সিনিয়র বড় ভাইয়া যারা ছিল, আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি অবশ্য নতুন বলেই বেশি আত্মবিশ্বাস পাই। তিনটা ইনিংসে এক রান করে আউট হয়ে গেছি। ক্রিকেট খেলায় এমন হতেই পারে। ভবিষ্যতে চেষ্টা করব ব্যাটিংয়ে উন্নতি করার।’ দিনের শেষ বলে উইকেট হারানোয় পুরো দিনটা বাংলাদেশের পক্ষে থাকেনি। প্রথম ইনিংসের শেষদিকে দ্রুত উইকেট হারিয়েছে দল। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভাল ব্যাটিং করেছে। সামনে যে ব্যাটসম্যানরা আছে আশাকরি তারা দায়িত্ব নিয়ে খেলবে। সবাই মিলে চেষ্টা করব স্কোরটা যেন বড় হয়। যে স্কোরটাই হোক না কেন আমরা সেটা নিয়েই লড়াই করব। আমরা যদি ভাল ব্যাটিং করি তাহলে স্পিনারদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। রিয়াদ ভাই যদি থাকতো আমাদের জন্য ভাল হতো। উইকেটটা যে খারাপ হচ্ছে তেমন কিছু না। মনে হয় না বল খুব বেশি টার্ন করছে!’ ওকস এমনটা হোক কোনভাবেই চান না, এমনকি সেটা চায় না ইংল্যান্ড দলও। এ বিষয়ে ওকস বলেন, ‘নিশ্চিত না, প্রথম ইনিংসে যেমনটা পেয়েছি সেভাবেই আমরা রিভার্স সুইং পাব কিনা। আশা করছি আগামীকাল আমরা এটা করতে পারব। দিনের শেষ ওভারে উইকেট তুলে নিতে পারা সবসময়ই দারুণ। কারণ এটা পরদিন ভাল অনুপ্রেরণা হয়। আমরা অবশ্যই বেশ কিছুটা পিছিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে। কিন্তু লক্ষ্যের কাছাকাছি হওয়ার জন্য ভাল শুরু করার পর আবার সেটাকে ছাড়িয়ে যাওয়াই আমাদের জন্য জরুরী। যদি আমরা তৃতীয় ইনিংসে ৮০-১০০ রানে পিছিয়ে থাকতাম সেক্ষেত্রে খেলাটা আমাদের হাতের নিয়ন্ত্রণে থাকত না। কিন্তু এখন খেলাটা ভাল পর্যায়ে আছে এবং কিছুটা সুবিধা করে দিয়েছে আমাদের জন্য।’ ইংল্যান্ডের চাওয়া আজ দ্রুতই বাংলাদেশকে অলআউট করে দেয়া। ওকসের দাবি লক্ষ্য হিসেবে ২৫০ রান তাড়া করা এই উইকেটে সম্ভবপর, এর বেশি হলে কঠিন হয়ে যাবে যে কোন দলের জন্য। ওকস বলেন, ‘আমি মনে করি ১৩০ রান এগিয়ে, সুতরাং ২৫০ বেশ হবে। এ উইকেটে আপনি ২৫০ রানের বেশি তাড়া করতে চাইবেন না। কারণ সেটাই হবে চলতি ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোর। যে কোন খেলায় যখন সর্বোচ্চ স্কোরটা আপনাকে তাড়া করতে হবে সেটা করা অবশ্যই কিছুটা কঠিন হবে। এর নিচে যদি রাখা যায় সেটাই ভাল। আমরা যদি আগামীকাল ভালভাবে শুরু করে দ্রুত উইকেট নিতে পারি এবং বাংলাদেশের টেলএন্ডে পৌঁছুতে পারি তাহলে আশা করি তাড়াতাড়ি বাংলাদেশকে শেষ করে দিতে পারব।’
×