ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গীরা মসুলে হাজার হাজার ইরাকীকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ইরাকী বাহিনীর অগ্রাভিযানের মুখে এই ঘাঁটি রক্ষা করতে জঙ্গীরা এই পদক্ষেপ নেয়। তারা ইরাকী বাহিনীর সঙ্গে লড়াইকালে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য হাজার হাজার মানুষকে মসুল নগরী অভিমুখে পশুর মনে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ একথা জানিয়েছে। জাতিসংঘ শুক্রবার জানায়, আইএস জঙ্গীরা বুধবার কমপক্ষে ২৩২ বেসামরিক লোককে গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া জঙ্গীগোষ্ঠীর স্বঘোষিত খেলাফত সঙ্কুচিত হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে তাদের আরও অনেক নৃশংসতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। খবর গার্ডিয়ানের।
আইএস জঙ্গীদের সর্বশেষ হত্যাযজ্ঞের শিকার ইরাকীদের অনেককে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে হত্যা করা হয়। নিহত অপর ইরাকীরা হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য। জঙ্গীদের আশঙ্কা তাদের প্রতিপক্ষ বাহিনী মসুলের দিকে অগ্রাভিযান শুরু করলেই এরা তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে পারে। জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাখানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মসুলের কয়েকটি অংশে ইরাকী বাহিনীর সামরিক অভিযান মোকাবেলার অপকৌশল হিসেবে বেসামরিক নাগরিকদের জিম্মি করে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শামদাখানি বলেন, হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আইএস জঙ্গীরা দুরাচার ও কাপুরুষের মতো অপকৌশল গ্রহণ করেছে। তারা এভাবে মসুলের কয়েকটি পয়েন্টকে প্রতিপক্ষ ইরাকী বাহিনীর হামলা থেকে মুক্ত রাখতে চাইছে। এদিকে ইরাকী বাহিনী তাদের মসুল নগরী পুনরুদ্ধার অভিযানে শুক্রবার খ্যান্ত দেয়। পিছন দিক থেকে জঙ্গী হামলা মোকাবেলার কৌশল হিসেবে অগ্রাভিযানে এই বিরতি দেয়া হয়। এ অবস্থায় মসুলের বেসামরিক অধিবাসীদের জন্য বহুমুখী সঙ্কট অপেক্ষা করছে। জঙ্গী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় থাকলে তাদের মসুলে জঙ্গীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হতে হবে নিজেদের বাড়িঘরে ভয়াবহ লড়াইয়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে অথবা অন্য এলাকায় পালিয়ে যেতে হবে, কিন্তু মসুলের বাইরে পালিয়ে গেলে সেখানে আবার তাদের আইএস জঙ্গীদের দালাল বা সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। মসুল পুনরুদ্ধারে ৩০ হাজার সৈন্যের জোট বাহিনীর অগ্রাভিযান মোকাবিলায় নগরীর চারদিকে অপেক্ষা করছে ৬ হাজার আইএস জঙ্গী। তাই তারা সাধারণ ইরাকীদের জিম্মি করে সামরিক সুবিধা গ্রহণের অপকৌশল নিয়েছে।