ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গার্ডিয়ানের নথি ফাঁস

সিরিয়ার ত্রাণ কার্যক্রমে আসাদের আত্মীয় নিয়োগ জাতিসংঘের

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

সিরিয়ার ত্রাণ কার্যক্রমে আসাদের আত্মীয় নিয়োগ জাতিসংঘের

জাতিসংঘ নিজেদের নিরপেক্ষ সংস্থা বলে দাবি করলেও ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে দেখা গেছে, ত্রাণ সংস্থাগুলোর বেতনের তালিকায় সিরিয়ার শীর্ষ মন্ত্রীদের আত্মীয়রা রয়েছেন। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের ফাঁস করা নথির বরাতে জানা যায়, সিরিয়ার ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বহু বন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোগীদের নিয়োগ করেছে জাতিসংঘ। খবর গার্ডিয়ানের। কর্মীদের তালিকায় দেখা যায়, দামেস্কে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর বেতন তালিকায় সিরিয়ার শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীদের আত্মীয়স্বজনের নাম রয়েছে। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে, শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জাতিসংঘের সাবেক এক ম্যানেজার গার্ডিয়ানকে বলেছেন, জাতিসংঘের প্রত্যেক সংস্থায় এমন একজন লোক আছেন যিনি এক সিরীয় কর্মকর্তার নিকটাত্মীয়। এই তালিকার সদস্যদের নিরাপত্তার খাতিরে তাদের নাম না প্রকাশ করতে গার্ডিয়ানকে অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘ। এক মুখপাত্র বলেছেন, যখন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয় তখন পারিবারিক সম্পর্ক বিবেচনায় নেয়া হয় না এবং তদন্তও করা হয় না। জাতিসংঘ সম্ভাব্য শ্রমিকদের তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে কোন প্রশ্ন করে না। আসাদের ঘনিষ্ঠ লোকদের উপস্থিতি জাতিসংঘের কাজের জন্য কোন হুমকি নয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি এবং বলেছে, সিরীয় সমাজের কাঠামোর প্রতিফলনে এমন কর্মী প্রয়োজন। প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ জোর দিয়ে বলেছে, তারা এখনও নিরপেক্ষ এবং সংঘাত অবসানে সকল পক্ষের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। সিরিয়া ক্যাম্পেইন নামে একটি স্বাধীন প্রচার গ্রুপ বলেছে, শরণার্থীদের সমর্থনে নিবেদিত একটি সংস্থা আসাদের ঘনিষ্ঠ লোকদের কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেবে এটা একেবারেই ভাবা যায় না। জাতিসংঘ বলেছে, তারা কঠিন ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে এক কোটি ৩৫ লাখ সিরীয় নাগরিকের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে। তবে তারা সিরীয় সরকারের দ্বারা সীমাবদ্ধতার কথাও স্বীকার করেছে যে, শুধু দামেস্ক-অনুমোদিত নির্দিষ্ট অংশীদারের সঙ্গেই সংগঠনগুলো কাজ করতে পারবে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, সিরিয়ায় প্রয়োজনীয় জরুরী স্বাস্থ্য সরঞ্জামের দুই-তৃতীয়াংশ যায় সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে। জানুয়ারি থেকে ডব্লিউএইচও’র সরবরাহ করা সরঞ্জাম ও ওষুধের ৬৪ শতাংশ আসাদের নিয়ন্ত্রিত ও সমর্থিত এলাকায় চলে যায়। মাত্র ১৩ শতাংশ সরবরাহ যায় সিরিয়ায় অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে। এই এলাকার বেশিরভাগই সরকারবিরোধী বাহিনীগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। জাতিসংঘ বলেছে, আমরা নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক বাধার মধ্যে যেভাবে কাজ করেছি তা সামগ্রিকভাবে ভাল ও সুষম হয়েছে। এক মুখপাত্র বলেন, কিছু ক্ষেত্রে, কিছু সেক্টরে, এমনকি সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন এলাকায় আমরা ভালভাবে কাজ করেছি। জাতিসংঘের মানবিক ও জরুরী ত্রাণ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি স্টিফেন ও’ব্রিয়েন বলেছেন, সাম্প্রতিক চলমান অস্ত্রবিরতির সময় রোগীদের সরিয়ে নিতে অবরুদ্ধ পূর্বাঞ্চলীয় আলেপ্পোয় পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপগুলো।
×