ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফল পৌর শহরে দুই কোটি টাকার সরকারী জমি বেদখল

প্রকাশিত: ০১:৩৫, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

বাউফল পৌর শহরে দুই কোটি টাকার সরকারী জমি বেদখল

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ বাউফল পৌর শহরের বাজার রোড এলাকায় প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১১ শতাংশ সরকারি জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মান করছেন জাহাঙ্গীর হোসেন নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী। ওই জমিতে তিনি ৬তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরীর যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, দখল করা ওই জমির চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে সেখানে পাইল করার জন্য আনা হয়েছে যন্ত্রপাতি, রড, সিমেন্ট, বালিসহ অন্যান্য নির্মান সামগ্রী। কাজ দেখভাল করার জন্য সেখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে একজন প্রকৌশলীকে। উপজেলা ভুমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাউফল পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে বাউফল মৌজায় সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত ১০৬৬ দাগের ৭শতাংশ জমি যা প্রত্যাহ দৈনন্দিন বাজারের জন্য নির্ধারিত, ১০৫৪ নং দাগের ১শতাংশ জমি জনসাধারনের যাতায়েতের জন্য নির্ধারিত, এছাড়াও খাল ভরাট করে ৪শতাংশ জমি এবং দেড় শতাংশ অর্পিত সম্পতি ( “ক” তফসিলভূক্ত) দখল করে বহুতল ভবন নির্মানের যাবতীয় কাজ চূড়ান্ত করেছেন তিনি। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি হাট বাজার, খরস্রোত খাল এবং জনসাধারনের যাতায়েতের জন্য সরকারি হালট এবং অর্পিত সম্পত্তি বন্দোবস্ত কিংবা ডি সি আর দেয়ার কোন আইনগত বিধান না থাকলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০০৯-১০সালে পার্ট টু বাউ নামজারি কেসের মাধ্যমে উক্ত সম্পত্তি নিজ নামে রেকর্ড সংশোধন করেছেন মর্মে ৫১৬ এবং ৫৪৩ নামে দুইটি খতিয়ান খুলেন। কিন্তু রেকর্ড সংশোধনের পৃষ্ঠায় দেখা যায়, সেখানে সহকারী কমিশানার (ভূমি) এর কোনো স্বাক্ষর নেই। এছাড়াও খালের মধ্যে ১৪২২/১ নামে অপর একটি নতুন দাগ ম্যাপে সৃষ্টি করে ২শতাংশ জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেন। কিন্তু ওই ম্যাপে অঙ্কিত ওই দাগের (১৪২২/১) কোনো অনুমোদন নেই। এমনকি সেখানেও নেই সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর স্বাক্ষর। সম্পূর্ন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রভাবশালী ওই ব্যাক্তি সরকারি বাজার, খাল এবং হালটের জায়গা দখল করে ভবন নির্মানের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বাউফল বাজারের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফল বাজারের প্রবীন এক ব্যবসায়ী বলেন, আজ থেকে প্রায় ২০বছর আগেও এখানে নিয়মিত দুধ ও পানের বাজার বসত। নৌকা থেকে মালামাল ওঠত নামত। জনগসাধারনরে যাতায়েতের জন্য একটি সরকারি হালট ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সবই দখল হয়ে যাচ্ছে। জনাকীর্ন এই বাজারে আগুন লাগলে খাল থেকে যে পানি সংগ্রহ করবে দখলের কারনে সেই সুযোগটুকোও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত এই খাস জমি উদ্ধার করে জনস্বার্থে ওই জমি ব্যবহার উপযোগী করার দাবী জানায় স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর হোসেনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি দখলের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি কবলা সূত্রে এই জমির মালিক। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) এর দায়িত্বে থাকা বাউফল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, বিষয়টি আমি জানার সাথে সাথে ওই জায়গায় নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×