ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জলাবদ্ধতায় ৫০ একর কৃষিজমি

সরকারী খাল ভরাট

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

সরকারী খাল ভরাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ২৮ অক্টোবর ॥ চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে সরকারী খাল বালু দিয়ে ভরাট করার কারণে ৫০ একর জমি জলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। এতে এ বছর দুই শতাধিক কৃষকের মৌসুমী সবজিসহ রোপা আমন ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় ওই এলাকার গফুর আলী শেখের বাড়ির রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, সরকারী খাল ভরাট করে পাকা দেয়াল করা হয়েছে এবং ওই স্থানে থাকা কাঠের পুলটির কাঠ, বাঁশ বালু ভরাটকারী ব্যক্তি ও তার লোকজন নিয়ে গেছে। এখন শুধুমাত্র কাঠের পুলের উপরের কাঠগুলো রাস্তার পাশে পড়ে আছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম বেপারী জানান, বহু বছর যাবত এই সরকারী খাল দিয়ে ফসলি জমির পানি মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হতো। কিন্তু প্রভাবশালী লোকজন ড্রেজার দিয়ে সরকারী খাল ভরাট করার কারণে কৃষকরা এখন চরম বিপাকে পড়েছে। স্থানীয় আলী আকবর খান বাড়ির হারুন খান খালসহ জমি ভরাট করার সময় কৃষকরা বাধা দিলে তিনি কোন কর্ণপাত করেননি। জলাবদ্ধতা দূর করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করা হয়েছে। কৃষক আব্দুল বাতেন বেপারী জানান, তিনি প্রতি বছর এ এলাকায় চার একর জমিতে মৌসুমী সবজির চাষ করতেন। এ বছর তার রোপা আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বর্তমানে কোন চাষাবাদ করতে পারছেন না। স্থানীয় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, খাল ভরাটকারী প্রভাবশালী হওয়ার কারণে আমরা কিছু বলতে পারিনি। গত ছয় মাস পূর্বে ইউপি নির্বাচনের সময় যখন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত, ওই সুযোগে খাল ভরাটকারী হারুন খান ড্রেজার দিয়ে খাল ও জমি ভরাট করেন। আমাদের জমিগুলো জলাবদ্ধ হওয়ার কারণে এখন আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। স্থানীয় বাসিন্দা ছলেমান মিজি জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে এখানে সরকারী খাল এবং কাঠের পুল ছিল। হারুন খান কোন প্রকার সরকারী অনুমতি ছাড়াই খাল ও জমি ভরাট করেছেন। এ অঞ্চলের প্রায় দুই শতাধিক কৃষক শাকসবজি চাষ করে এলাকার চাহিদা মেটাতো। কিন্তু এখন সব কৃষকই হতাশাগ্রস্ত। এ বিষয়ে ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, নির্বাচনের সময় হারুন খান খাল ও জমি ভরাট করেন। তিনি আমাদের কাঠের পুলের কাঠসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে গেছেন। কৃষকরা এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দরখাস্ত করেছেন, ওই দরখাস্তের একটি অনুলিপি আমাকেও দিয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করব। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত হারুন খানের বাড়িতে গিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উদয়ন দেওয়ান জানান, কৃষকদের জমি থেকে জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য আমার কাছে শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত একাটি আবেদন জমা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়ালি উল্যাহকে সরেজমিন দেখে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×