ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর খুন্তির ছ্যাঁকায় দগ্ধ গৃহবধূ হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

স্বামীর খুন্তির ছ্যাঁকায় দগ্ধ গৃহবধূ হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৮ অক্টোবর ॥ প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বেধড়ক মারধর করা হয়। গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়া হয় পিঠের বিভিন্ন জায়গায়। পাষণ্ড স্বামী রিপন গাজী যখন মারধর করত তখন শাশুড়ি রেহেনা বেগম মারধরের উপকরণ এগিয়ে দিতেন। বিয়ের দুইটি বছরে কতবার মারধর নির্যাতন করা হয়েছে তা এখন আর এই তরুণী গৃহবধূ ডলি বেগম মনে করতে পারছে না। শুধু নির্যাতনের দগদগে পোড়ার চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে ডলিকে তার বাবা খলিল খাঁ কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করান। ডলি আরও জানায়, মদ্যপায়ী এবং স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় সর্বশেষ গত রবিবার রাতে তাকে নির্দয় মারধর করা হয়। স্বামী রিপন যখন অফিসে যায় তখন উত্তর বাড্ডার বাসা থেকে কাউকে না বলে সোমবার সকালে রামপুরায় এক মামার বাসায় চলে আসে। সেখান থেকে বুধবারে চাকামইয়ার চুঙ্গাপাশা গ্রামের বাড়িতে চলে আসে ডলি। প্রায় দুই বছর আগে ডলির বিয়ে হয় বাউফল উপজেলার বগার রিপন গাজীর সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই রিপন তার মা এবং স্ত্রী ডলি একত্রে থাকত। রিপন একটি বায়িং হাউসে এবং তার মা একটি গার্মেন্টে চাকুর করছে। কোন সন্তান নেই এ দম্পতির। ডলির অভিযোগ নানা ছলছুতোয় তাকে মারধর-নির্যাতন করা হতো। যা চরম পর্যায়ে পৌঁছে। অভিযুক্ত রিপন জানান, রবিবার রাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়েছে। তাও তাকে বোঝানো হয়েছে। সকালে তিনি অফিসে যান। দুপুরে জানতে পারেন বাসা থেকে জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেছে। গ্রামের (কলাপাড়ায়) শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে জানতে পারেন সেখানে যায়নি। খুঁজতে যান ডলির মামার বাসায়। প্রথমে তারা অস্বীকার করেন। পরে বাসার এক কোণে দেখতে পায়। তখন নিয়ে আসতে চাইলে আসেনি। মারধরের কিংবা শরীরের ক্ষতের ব্যাপারে রিপনের ভাষ্য, ‘অর শরীলে ক্যাডা ওইভাবে করছে হেইডা আল্লায় জানে। আর অয় জানে, আমি কিছু কইবার জানি না’। তিনি মারধরের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। চিকিৎসক জেএইচ খান লেনিন জানান, যে নির্যাতন করা হয়েছে তা অমানবিক। ডলির সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
×