ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাটিং ব্যর্থতার দায় স্বীকার তামিমের

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

ব্যাটিং ব্যর্থতার দায় স্বীকার তামিমের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ ব্যাটিং করছিল বাংলাদেশ দল। শুরুতেই ১ উইকেট হারালেও আর কোন ব্যাটসম্যানকে না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেছিল ১৭১ রান। সে সময় মনে হচ্ছিল মিরপুরের চার নম্বর উইকেটটা ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। কিন্তু চা বিরতির একঘণ্টা আগে থেকে খেলার চালচিত্রই পাল্টে গেছে। মাত্র ৪৯ রানে বাকি ৯ উইকেট হারিয়ে ২২০ রানের স্বল্প ইনিংসে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। অনেকে তাই মনে করছিলেন উইকেটে হয়তো দিনের শেষভাবে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া ডানহাতি অফস্পিনার মঈন আলী ভিন্ন কথা জানালেন। তিনি দাবি করলেন উইকেটে কোন সমস্যা তৈরি হয়নি, ইংল্যান্ড দলের বোলাররাই ভাল বোলিং করেছে। একই কথার ছাপ পাওয়া গেল বাংলাদেশের পক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানো ওপেনার তামিম ইকবালের কণ্ঠে। তিনিও জানালেন শেষদিকে যেভাবে ৭/৮টি উইকেট বাংলাদেশ দল হারিয়েছে সেটা ছিল ব্যাটিং ব্যর্থতা। শুক্রবার শুরু হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে দু’দলের দুই সেরা পারফর্মার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। ওপেনার ইমরুল কায়েস দ্রুতই সাজঘরে ফিরে গেলেও সেটা দারুণ সামলেছেন তামিম ও মুমিনুল হক। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় উইকেটে ১৭০ রানের সেরা জুটিও গড়েছেন তারা। এরপরই যেন ধসে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমি বিপর্যয় নিয়ে অজুহাত দেখাতে আসিনি। প্রথম ১০ ওভার ছাড়া এভাবে ৩০-৩৫ ওভার ব্যাটিং করা হয়তোবা কঠিন ছিল। প্রথম অংশটা পার হওয়ার পরের ২০-২৫ ওভার একটু সহজ ছিল। একটা কারণ হতে পারে ওই সময় আমরা আক্রমণাত্মক ছিলাম। যখন আপনি রানের মধ্যে থাকেন যে কোন উইকেটেই ব্যাটিং করা সহজ মনে হবে।’ কিন্তু দারুণ যে ভিত এ দুই ব্যাটসম্যান গড়ে দিয়েছিলেন সেটাকে ধরে রাখতে পারেনি বাকিরা। একের পর এক উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমরা কিছু ভুল শট খেলেছি। ৪৫ ওভারের পর আমাদের জুটি যখন ভাঙল, তখন বল রিভার্স করা শুরু করল, বল টার্ন করছিল। যতই আমি উইকেটের কথা বলি, আমরা যেভাবে ৭-৮ উইকেট হারিয়েছি সেগুলোর কোন ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। আমাদের অবশ্যই ব্যাটিং বিভাগের ব্যর্থতা ছিল। সবাই মিলে যদি ১০০ রান বেশি করতাম তাহলে দলের অবস্থান ভাল থাকত। আমাদের এ বিষয়টা আরও ভালভাবে সামলানো উচিত ছিল।’ শেষ পর্যায়ের এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার পরই নিজের শতকটাকে বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে তামিমের কাছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হঠ্যাৎ করে উইকেট যেভাবে পরেছে এখন আমার সেঞ্চুরি স্পেশাল মনে হচ্ছে। তবে জিতলে আমরা যেমন দলীয়ভাবে জিতি ঠিক তেমনি ব্যাটিংয়ে আমরা দলীয়ভাবে ভাল করতে পারিনি। ১০০ রান যদি বেশি করতাম তাহলে খুব ভাল অবস্থানে থাকতাম। তারপরও গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উইকেট পেয়েছি। কাল (আজ) সকালটা যদি ভাল হয় এ রানের মধ্যেই একটা ভাল খেলা সম্ভব।’ ইংলিশরা ব্যাটিংয়ে নামার পরও দ্রুত তিনটি উইকেট হারিয়েছে। আর এটাকেই দিনের সবচেয়ে হতাশাজনক দিক মনে করছেন ৫৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করা ইংলিশ অফস্পিনার মঈন। তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলাম অবশ্যই খুশি সেজন্য। তবে আরও খুশি হতাম যদি আমরা শেষদিকে তিনটা উইকেট না হারাতাম। সার্বিকভাবে আমাদের খুব ভাল দিনই গেছে। কিন্তু শেষটা তেমন ভাল না হওয়াতে দিনটা পুরোপুরি আমাদের হাতে থাকল না।’ তামিম মনে করছেন এই উইকেট দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও কঠিন হতে থাকবে। ম্যাচের তৃতীয় ও চতুর্থ ইনিংসে ৩শ’ রান করাটাও দুষ্কর হয়ে যাবে। এ কারণে ভালভাবে শুরুর পর প্রথম ইনিংসেই তিন বা সাড়ে তিন শ’ রান করার প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন তিনি। তামিম বলেন, ‘আমি যেটা মনে করি এটা প্রতিদিনই একটু কঠিন হতে থাকবে। আমরা যদি ৩০০-৩৫০ রান করে ফেলতাম তাহলে দ্বিতীয় দলের জন্য এ উইকেটে রান করা কঠিন।’ তবে মঈন অবশ্য দাবি করছেন উইকেট কঠিন হয়ে যায়নি তেমন, বরং বোলাররাই দারুণ বোলিং করে সাফল্য ছিনিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, ‘তামিম কঠিন ব্যাটসম্যান বোলিং করার জন্য। দারুণ ভাল ব্যাটিং করেছে। পরের দিকে আমার মনে হয়নি উইকেট খুব কঠিন হয়ে গেছে ব্যাটিংয়ের জন্য। বরং আমরা ভাল বোলিং করে উইকেট নিয়েছি। অবশ্যই কিছুটা স্পিন ধরেছে, কিন্তু স্কোর করার জন্য অবশ্যই ভাল ব্যাটিং করতে হবে।’ ভাল ব্যাটিং করার বিষয়টা তামিমও বললেন। তিনি স্বীকার করেছেন ইংলিশরা পরের দিকে ভাল বোলিং করেছে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘সন্দেহ নেই ওরা ভাল বোলিং করেছে। তবে সতর্ক হয়ে আমাদের সেটা ভালভাবেই সামলানো উচিত ছিল।’
×