ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জনগণের জন্য...

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

জনগণের জন্য...

দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরের যে সময়টা থাকে সে সময়টায় প্রত্যেকের নিজের বাড়িতে নিরক্ষর আছে কিনা খুঁজে বের করে তাদের অক্ষরজ্ঞান দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে চাই। প্রতিটি মানুষ শিক্ষার আলোয় আলোকিত করাই সরকারের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিকেলে গণভবনে ছাত্রলীগের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ছুটিতে যখন বাড়িতে যাবে দেখবে আশপাশে কোন গৃহহীন আছে কিনা, কেউ না খেয়ে আছে কিনা। দেশে কোন দারিদ্র্য থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। কেউ গৃহহারা থাকবে না। আমরা সবার জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করব। শুধু তাই নয়, দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়তে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তোমাদের মধ্য থেকেই তো গড়ে উঠবে আগামী দিনের নেতা, মন্ত্রী, এমপি। এক সময় তোমাদেরই দেশের নেতৃত্ব দিতে হবে, দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশ ও জাতির সেবা করতে হবে, দেশপ্রেমিক হতে হবে। শেখ হাসিনার এই আহ্বান দেশ ও জাতির কল্যাণের পথে এক নির্দেশিকার মতো। রাজনীতিবিদ হতে হলে দেশ ও মানুষের চিন্তা করতে হবে। আদর্শের কর্মী হতে হবে, তেমনি অন্যদেরও দেখতে হবে যেন কেউ বিপথে না যায়। জীবনে কী পেলাম না পেলাম সেটা এখানে মুখ্য নয়। জনগণকে কী দিতে পারলাম আর কী পারলাম না সেটাই বিবেচনায় নিতে হবে। সময়কে কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই দেশের আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠা সম্ভব। বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যশূন্য। এই স্বপ্নই বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। তাই দারিদ্র্যশূন্য দেশ হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে সরকার। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচীও গ্রহণ করা হয়েছে। যা এখন সফলতার মুখ দেখছে। কয়েক বছর ধরে হতদরিদ্রের হার কমছে। আজকের বাংলাদেশের সঙ্গে কয়েক বছর আগের বাংলাদেশের মিল খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন ও সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আগের চেয়ে অনেক দৃঢ় হয়েছে। অতীতে প্রতিটি ছাত্র সংগঠনের লক্ষ্য ছিল মানব কল্যাণ। আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনে ছাত্রসমাজের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। নানা কারণে ছাত্র-সংগঠনগুলোর সেই ঐতিহ্য আজ ম্লান হতে চলেছে। বিগত কয়েক বছরে ছাত্রলীগের কিছু কর্মকা-েও নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। এই বিষয়গুলো ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীকে মনে রাখতে হবে। এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জনকল্যাণমূলক কর্মকা- যায় না। তাই জনকল্যাণে ব্রতী হওয়ার জন্য নিজেকে আদর্শ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আসলে পরোপকার মানবিক সহজাত গুণাবলীর মধ্যে একটি অন্যতম গুণ। এই মহৎ ও সুন্দর গুণটি যার মধ্যে বিদ্যমান, তিনি সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে উত্তম কাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন। বিভিন্নভাবে মানব ও মানব সমাজের উপকার সাধন করা যায়। এই উপকার বা সেবাদান, পরিশ্রম বা আর্থিক সাহায্য কিংবা সৎ পরামর্শ দিয়ে হতে পারে। মহৎ লোকেরা বরাবরই পরের কল্যাণ সাধনে নিজেদের উৎসর্গ করেন। প্রত্যেক ধর্মেই মানব কল্যাণের কথা নিহিত। নিজেদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার মাধ্যমে যে কোন মহৎ কাজ পুরোপুরি সমাধা করা যায়। সেই পথই ছাত্রলীগ কর্মীদের অনুসরণ করতে বললেন শেখ হাসিনা। কারণ, এখনও আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, লক্ষ্য প্রথমে মধ্য আয়ের দেশ ২০২১ এবং উন্নত বিশ্বের সমকক্ষ হওয়ার স্বপ্ন ২০৪১। এই স্বপ্নের পথে ছাত্রলীগ হতে পারে প্রধান সহায়ক।
×