ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোল্লাহাটে দেবরকে বেঁধে রেখে গৃহবধূ নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

মোল্লাহাটে দেবরকে  বেঁধে রেখে গৃহবধূ নির্যাতন, মুক্তিপণ  আদায়

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের মেল্লাহাটে এবার দেবরকে বেঁধে রেখে দুর্বৃত্তরা এক গৃহবধূকে (২৬) পৈশাচিক নির্যাতন করেছে। ৭/৮ জনের দুর্বৃত্তদল গৃহবধূ ও তার দেবরের কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ও টাকা কেড়ে নিয়ে বাগানে নিয়ে অত্যাচার করার পরও মুক্তিপণ আদায় করেছে। চাহিদামত মুক্তিপণ না পেয়ে আবার তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়ে গৃহবধূ প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। বর্বর এ ঘটনায় মোল্লাহাট থানায় বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হয়েছে। রবিবার রাতে উপজেলার হাড়িদাহ ও জয়ডিহি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। তবে শুক্রবার এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামিকে আটক করতে পারেনি। চিতলমারী উপজেলার শিবপুর গ্রামের গৃহবধূ ও মোল্লাহাটের কোদালিয়া গ্রামের মেয়ে তার আপন দেবরকে সঙ্গে নিয়ে হাড়িদাহ গ্রামের ফয়েজ হুজুরের বাড়ি রোগের চিকিৎসার জন্য সাক্ষাতের সিরিয়াল দিয়ে রবিবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। হুজুরের বাড়ি থেকে অল্প পথ যেতেই হাড়িদাহ গ্রামে পথিমধ্যে ৬/৭ জনের একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর চড়াও হয়। তারা গৃহবধূ ও তার দেবরকে জোরপূর্বক অন্ধকার বাগানে নিয়ে যায় এবং স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইলসহ নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা লুটে নেয়। এরপর দেবরকে বেঁধে রেখে গৃহবধূর ওপর নির্যাতন চালায়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তারের ওপর অত্যাচার শেষে বন্দীদশা থেকে মুক্তির জন্য আরও নগদ টাকা দাবি করে নতুবা হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে বাড়িতে মোবাইল করে বিকাশের মাধ্যমে নেয় মুক্তিপণের টাকা আনতে বাধ্য করে দুষ্কৃতিকারীরা। কিন্তু চাহিদামতো মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়। তখন ওই গৃহবধূকে মোটরসাইকেলে তুলে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতে থাকে দুষ্কৃতকারীরা। একপর্যায়ে জয়াডিহি বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ওই গৃহবধূ মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকে। ওই সময় অবস্থা বেগতিক বুঝে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নেয়। পরে নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় মামলা করেন ভিকটিম। মামলায় হাড়িদাহ গ্রামের ফজলে সেখের ছেলে মোজাহিদ (২৫), হানেফ সেখের ছেলে মিলন (২৬) ও বাসাবাড়ি গ্রামের মনির গাজীর ছেলে মঈন গাজীসহ (২৫) অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় চরকুলিয়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট মেহেদী হাসান মোতালেব জানান, ওই রাতে হাড়িদাহ গ্রামের মোজাহিদ তাকে মোবাইল করে বলেছিল, ‘তোর মোবাইলে দুই হাজার টাকা এসেছে এই মাত্র, আমি তারেককে পাঠাচ্ছি ওই টাকা তার কাছে দিবি।’ এরপর তারেক সেই টাকা এনে মিলন ও মোজাহিদকে দেয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে শুক্রবার এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামিকে আটক করতে পারেনি। এ বিষয়ে মোল্লাহাট থানার ওসি জানান, ধর্ষণ চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে জোর চেষ্টা চলছে।
×