ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার এক্সচেঞ্জ উন্নয়নের কাজ চলছে

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন শুরু হচ্ছে নবেম্বরে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন শুরু হচ্ছে নবেম্বরে

ফিরোজ মান্না ॥ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করার কাজ আগামী মাসে শুরু হচ্ছে। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বিটিসিএল। প্রকল্পে চীন সরকার এক হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা অর্থ সহযোগিতা দেবে। সরকারী তহবিল থেকে ৪০৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। চীনা সরকার অর্থ সহযোগিতার টাকা ছাড় করা শুরু করেছে। এনজিএনভিত্তিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার টেলিফোন এক্সচেঞ্জগুলোরও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় বিটিসিএলের (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) দেশব্যাপী বিদ্যমান সব এক্সচেঞ্জের পুরনো ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি ও কপার বেজড টেলিফোন নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করে আধুনিক ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি এবং অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মধ্যে যুক্ত করবে। এজন্য বিটিসিএল একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৭ সালের জুনে। এদিকে, বিটিসিএল আলাদা একটি প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীর এক লাখ পুরনো টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও যন্ত্রপাতিসহ অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ প্রায় শেষ করেছে। এখন নতুন এক্সচেঞ্জগুলো থেকে আরও ৭১ হাজার নতুন টেলিফোন সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের কাজ কয়েকটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এক্সচেঞ্জে ফাইবার অপটিক কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। বাকি একচেঞ্জগুলো অল্পদিনের মধ্যে আধুনিকায়ন করা হবে বলে বিটিসিএল জানিয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন পলিসি (আইসিটি) ২০০৯ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই নীতিমালার আওতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে দেশের গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনে ব্যবস্থাকরণ, জাতীয় পর্যায়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করে সব সরকারী প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্তকরণ ও ইন্টারনেট (আইপিপি) টেলিফোন এবং ভিডিও কনফারেন্সিং চালুর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিটিসিএলের বিদ্যমান ল্যান্ড টেলিফোন নেটওয়ার্ক পুরনো টেকনোলজি-নির্ভর হওয়ায় তা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভয়েস কল ছাড়াও যুগের চাহিদার অনুসারে ইন্টারনেট, ডাটা ও ভিডিও আদান-প্রদানের সুযোগ নেই। এজন্য দেশব্যপী বিদ্যমান পুরনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে আধুনিক ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি এবং ফাইবার অপটিক কেবল নেটওয়ার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল) ও চীন সরকার নির্বাচিত মেসার্স চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের (সিএমইসি) সঙ্গে এরই মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপনের পাশাপাশি প্রতিটি এক্সচেঞ্জের পুরনো ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি ও কপার-বেজড টেলিফোন নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। সারাদেশে বিটিসিএলের ৯ লাখ ৩০ হাজার ল্যান্ডফোন গ্রাহক রয়েছে। এখনও ৬ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের বাইরেই রয়ে গেছে। এজন্য চীনের অর্থায়নে নেয়া এ প্রকল্পটির মাধ্যমে সাত লাখ গ্রাহককে ফাইবার কেবল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সারাদেশেই ল্যান্ডফোনের মাধ্যমে ভয়েস-ডাটা ও ভিডিও সুবিধা পাওয়া যাবে। ঢাকায় কয়েকটি এলাকায় ত্রিমাত্রিক সুবিধা চালু করেছে বিটিসিএল। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে একটা সংযোগ দিয়েই এই তিনটি সেবা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা শহরের পুরনো ডিজিটাল টেলিফোন সিস্টেম প্রতিস্থাপন (১৭১ কেএল) প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি এই সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে গত বছরের শেষ দিকে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) শেরে বাংলা নগর এক্সচেঞ্জে এক লাখ ৭১ হাজার নামে পরিচিত প্রকল্পের আওতায় ত্রিমাত্রিক সেবা দেয়া হচ্ছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সরকারের গৃহীত রূপকল্প-২১ সালের মধ্যে পরিপূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে। এই সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনে ‘ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন পলিসি’ (আইসিটি) বাস্তবায়ন করবে বিটিসিএল।
×