ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

জনগণের দুঃখ-দুর্দশা, সমস্যা খুঁজে বের করে সরকারকে জানান

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

জনগণের দুঃখ-দুর্দশা, সমস্যা খুঁজে বের করে সরকারকে জানান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সমস্যা, দুঃখ-দুর্দশা খুঁজে বের করে তা সরকারকে জানানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এখন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আনতে হবে। আমরা দেশকে কত দ্রুত উন্নত করতে পারি সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। সরকারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। শুক্রবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম সভাপতিম-লীর সভায় সূচনা বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কাজী জাফরউল্লাহ, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, পীযূষ ভট্টাচার্য্য ও এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান উপস্থিত ছিলেন। বিদেশে যাওয়ায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান। জন্মলগ্ন থেকেই এ দলটি জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে। আজ দেশের প্রবৃদ্ধি ৭.১১ ভাগ অর্জিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যাপরবর্তী দীর্ঘ ২১টি বছর ক্ষমতায় থাকা সামরিক সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীরাই ক্ষমতায় ছিল। দীর্ঘ ২১টি বছর তারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে চেয়েছিল, যাতে স্বাধীনতার সুফল দেশের জনগণ ভোগ করতে না পারে। স্বাধীনতার মর্যাদা, আদর্শ, নীতি ধ্বংস করাই ছিল এদের চক্রান্তের অংশ। দীর্ঘ ২১টি বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশ সঠিক ধারায় ফিরে আসে, সরকার যে জনগণের সেবক তা প্রথম উপলব্ধি করতে পারে। দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, কষ্ট, সমস্যাগুলো স্ব স্ব এলাকায় খুঁজে বের করে তা সরকারকে জানানো দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা একটি লক্ষ্য স্থির করেই সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগই একটি সুনির্দিষ্ট ঘোষণাপত্র, ইশতেহার ও অর্থনৈতিক নীতিমালা নিয়ে কাজ করে এবং তা বাস্তবায়নেও কাজ করছে। প্রত্যেক বাজেট প্রণয়নের আগেই আমরা নির্ধারণ করি, জনগণকে দেয়া ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে, তা স্থির করি এবং বাস্তবায়ন করি। আমরা জনগণকে দেয়া প্রতিটি ওয়াদাই পূরণ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী সদ্যসমাপ্ত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলকে অত্যন্ত সফল উল্লেখ করে বলেন, এ সম্মেলনে আগত বিদেশী অতিথিরাও বাংলাদেশ যে আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে সেটি উল্লেখ করেছেন এবং এর প্রশংসা করেছেন। মনে রাখতে হবে, বাঙালী জাতি বিজয়ী জাতি। প্রতিটি বাঙালী যাতে বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে চলতে পারে এ প্রতিজ্ঞা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং কাজ করে যাব। তিনি বলেন, সভা থেকে কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যপদ পূরণ করা হবে। অবশিষ্ট যে কয়েকটি পদ বাকি থাকবে তা দ্রুতই পূরণ করে আমরা পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকব। ওই বৈঠকেই আমাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে কার্যনির্বাহী সদস্যপদের নির্বাচন চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠক শেষে তা ঘোষণা করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
×