ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

টাকার বিনিময়ে কারাগারের বন্দি জীবনের অনুভূতি

প্রকাশিত: ০১:২৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

টাকার বিনিময়ে কারাগারের বন্দি জীবনের অনুভূতি

অনলাইন রিপোর্টার ॥ কারাগারে বন্দি জীবনের অভিজ্ঞতা কেমন হতে পারে, তা জানতে আগ্রহীদের জন্য অভিনব এক পরিকল্পনা করছে কারা কর্তৃপক্ষ। ‘ফিল দ্য জেল’ নামের এ প্রকল্পে টাকার বিনিময়ে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে রাত কাটানো এবং খাওয়ার সুযোগ মিলবে। পাওয়া যাবে বন্দি জীবনের অভিজ্ঞতা আর সেই সঙ্গে জানা যাবে কারাগারের ভেতরের নিয়ম-কানুন। শুক্রবার পুরনো কারাগারের ভেতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন সংবাদিকদের জানান, বিষয়টি এখনও ধারণার পর্যায়ে রয়েছে। তবে তারা আশাবাদী, এ প্রকল্প চালু করা যাবে। তিনি জানান, ‘সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেকে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়, কারাগারে থাকতে কেমন লাগে সে বিষয়টা ‘ফিল’ করতে চান তারা। আমরা হয়ত সে সুযোগটা এখানে রাখতে পারি।’ কারা মহাপরিদর্শক জানান, ফিলিপিন্স ও ভারতে জাদুঘরে রূপান্তরিত পুরনো কয়েকটি কারাগার সম্প্রতি পরিদর্শন করে তারা ‘ফিল দ্য জেল’ আইডিয়াটি পেয়েছেন। ইফতেখার উদ্দীন বলেন, এই কারাগারকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে তাদের যে মূল প্রজেক্ট, তা বাস্তবায়ন করতে অন্তত তিন বছর সময় লাগবে। তারপর পুরোপুরি উন্মুক্ত করা যাবে। ‘তবে তার আগে চেষ্টা করব সরকারের অনুমতি নিয়ে সপ্তাহে একদিন বা দুই দিনের জন্য যদি খুলে দিতে পারি।’ জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ‘সংগ্রামী জীবনগাথা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনী উপলক্ষে আগামী ২ নভেম্বর কারাগার সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ৫ নভেম্বর পর্যন্ত দর্শনার্থীরা এই কারাগার ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। কার কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারটির ২২৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। গত জুলাই মাসে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুরোনো কারাগারকে এখন জাদুঘরে পরিণত করার কথা ভাবছে কারা কর্তৃপক্ষ। কারা মহাপরিদর্শক বলেন, জাদুঘর স্থাপনের জন্য একটি উন্মুক্ত ডিজাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সেখান থেকে বিচারকেরা যে ডিজাইন চূড়ান্তভাবে করবেন, সেটিই এখানে কার্যকর করা হবে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কারাগার পরিদর্শনে ব্যক্তিগত ইচ্ছা পোষণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় তিনি অনেকবার এখানে এসেছেন। তাঁরও অনেক স্মৃতি আছে, কিছু ইতিহাস জানা আছে। কোন কোন ভবনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে, সংরক্ষণ করতে হবে—সে বিষয়ে তাঁর নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছি। তাঁর পরিদর্শন শেষেই কাজ শুরু হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘জেলটা আমাদের ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গবন্ধুসহ অনেক রাজনীতিবিদের স্মৃতিকথা এই জেলের মধ্যে আবদ্ধ আছে। এগুলো উত্তরসূরিদের জানানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১ নভেম্বর আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হবে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার দুর্লভ ১৪৫টি আলোকচিত্র থাকবে প্রদর্শনীতে। ২ নভেম্বর থেকে প্রদর্শনী সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ১০০ টাকা দিয়ে যে কেউ প্রদর্শনীটি দেখার জন্য কারাগারে ঢুকতে পারবেন। একজন দর্শনার্থী সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা প্রদর্শনী দেখতে পারবেন।
×