ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে ॥ হিউম্যান রাইটস

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে ॥ হিউম্যান রাইটস

অনলাইন ডেস্ক॥ মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে বিচ্ছিন্নতবাদ বিরোধী সাম্প্রতিক অভিযানকালে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এরমধ্যে শুধু গত ১৯ অক্টোবর একটি গ্রামেই ৩০ জন রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা মানবাধিকার সংস্থা 'আরাকান প্রজেক্টের' পরিচালক ক্রিস লেওয়া। তিনি জানান, গত ২০ অক্টোবর একটি গ্রামের দুই নারী ও ২৫ অক্টোবর ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী পাঁচ কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (বিএইচআরএন) এক বিবৃতিতে বলেছে, চরম উদ্বেগের ব্যাপার যে, সামরিক বাহিনীর অভিযানের সময় মংডু এলাকায় অন্তত ১০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাসের গর্ভবতী একজন নারীও আছেন। ধর্ষণের ফলে তার গর্ভের শিশুটি নিহত হয়েছে। বিএইচআরএনের কর্মকর্তা উ কেয়াও উইন বলেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করছে এবং অপরাধ করেই যাচ্ছে। মিয়ানমার সরকার রাখাইনে যৌন নিপীড়ন বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অঙ্গীকার করলেও তা মানছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গত ৯ অক্টোবর রাখাইন প্রদেশের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অভিযুক্ত করে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামরিক বাহিনী রাখাইন প্রদেশটি ঘিরে ফেলে অভিযানের নামে ব্যাপকহারে হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের মতো কাজ করছে। মিয়ানমার টাইমস জানিয়েছে, রাখাইনে কঠিন সামরিক নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয়ার কারণে সঠিক তথ্য যাচাই করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে, যাতে ধারাবাহিকভাব সংঘটিত মানবাধিকার হরণের অভিযোগগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করা যায়। এদিকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অধিকার হরণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও নারী অধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যৌন নিপীড়ন এবং ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে। ২০০৮ সালে প্রণীত মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির সেনাবাহিনী যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি পেয়ে আসছে। কিছু মানবাধিকার সংগঠন মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের মুখোমুখি করতে এই সাংবিধানিক দায়মুক্তির পরিবর্তন দাবি করে আসছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানকালে নারীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ বহু পুরনো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি ও মিয়ানমার সরকার এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেয়, তাই দেখার।
×