ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুশফিকের ৫০তম টেস্ট

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

মুশফিকের ৫০তম টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১১ বছর পেরিয়ে গেছে। ২০০৫ সালের মে মাসে টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল মুশফিকুর রহীমের। ৬ বছরে মাত্র ২৪ টেস্ট খেলার পরই হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক। সেটারও ৫ বছর পেরিয়ে গেছে। অবশেষে পঞ্চাশে পা দিচ্ছেন ২৯ বছর বয়সী এ নির্ভরযোগ্য উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। আজ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টস করলেই ক্যারিয়ারের ৫০তম টেস্ট খেলার মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ২৬ নম্বর টেস্ট। মোহাম্মদ আশরাফুল (৬১) ও হাবিবুল বাশার সুমনের (৫০) পর তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ৫০ টেস্টের মাইলফলক স্পর্শ করবেন আজ মুশফিক। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ৫০ টেস্ট খেলার মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সর্বাধিক ৬১ টেস্ট খেলে তিনি করেছেন ২৪.০০ গড়ে ২৭৩৭ রান। পরবর্তীতে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনও ৫০ টেস্ট খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারের সংখ্যা অনেক। এমনকি ১০০ টেস্ট খেলেছেন এমন সংখ্যাই ৬৩! কিন্তু বাংলাদেশ দল এমনিতেই টেস্ট ক্রিকেট খেলে তুলনামূলকভাবে কম। এ কারণে বাংলাদেশের হয়ে ৫০ টেস্ট খেলাও অনেক বড় এক প্রাপ্তি। আশরাফুল ও হাবিবুলের পর সবেমাত্র তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে সেই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন আজ মুশফিক। ২৯ টেস্ট খেলেই তিনি রান করার দিক থেকে ছুঁয়ে ফেলেছেন আশরাফুলকে। আশরাফুলের সমান ২৭৩৭ রান করলেও ব্যাটিং গড়ে এগিয়ে মুশফিকÑ তার গড় ৩২.৫৮। আরেক ৫০ টেস্ট খেলা হাবিবুল ৩০.৮৭ গড়ে করেছেন ৩০২৬ রান। বাংলাদেশের পক্ষে এই তিন সর্বাধিক টেস্ট খেলা ক্রিকেটারের মধ্যে রানের গড়ে এগিয়ে তাই মুশফিক। টেস্ট ক্যারিয়ারটা শুরু হয়েছিল এই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই। ২০০৫ সালের মে মাসে লর্ডসে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবে টেস্ট অভিষেক ঘটে মুশফিকের। সেই ইংলিশদের বিরুদ্ধেই ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামছেন। অথচ প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের বর্তমান অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক তার পরে টেস্ট অভিষেক হয়েছে। সেই কুক ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বাধিক ১৩৪ টেস্ট খেলে ফেলেছেন। এ বিষয়টা ঘটেছে শুধু দল কম পরিমাণে ম্যাচ খেলার কারণে। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘দুঃখ তো অবশ্যই। আমার শুধু নয়, বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারের দুঃখ যে টেস্ট আমরা খুবই কম খেলি। আমি অনেকবারই বলেছি, যত বেশি টেস্ট খেলব, তত বেশি শিখব।’ তবে শেষ পর্যন্ত ৫০তম টেস্ট খেলতে নামার বিষয়টা নিয়ে দারুণ খুশি মুশফিক। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভাল লাগছে। বাংলাদেশে ৫০টি টেস্ট খেলা খুব সহজ নয়। চেষ্টা করব ব্যক্তিগতভাবে ভাল খেলতে এবং দল যেন ভাল করে। দলের ভালর জন্য আমার যা যা অবদান দেয়া দরকার, আমি চেষ্টা করব সেভাবে।’ ধারাবাহিকভাবে ব্যাট হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ক্যারিয়ার শুরুর কিছুদিন পর থেকেই। বিপদের মুহূর্তে উইকেটে থিতু হয়ে দলকে বাঁচিয়েছেন বড় বিপর্যয় থেকে অনেকবার। সে কারণে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ তকমাটাও পেয়েছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ব্যাট হাতে আরও সফল মুশফিক। দেশের পক্ষে সর্বাধিক ২৫ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই টেস্টগুলোতে ৩৮.৫৫ গড়ে ১৫৪২ রান করেছেন তিনি যা ক্যারিয়ার গড়ের চেয়েও বেশি। আবার অধিনায়ক হিসেবেই প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিনি ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে গল টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর গৌরব দেখান। দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৮ টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাবিবুল বাশার। সর্বাধিক ৪ টেস্ট দলকে জিতিয়ে তিনিই সফলতম টেস্ট অধিনায়ক বাংলাদেশের।
×