ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন উদ্যোক্তারা ;###;দেয়া হচ্ছে পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল ;###;সিমেন্ট ও কাগজ কারখানা স্থাপনে বিশাল অঙ্কের পেট্রোডলার আসছে ;###;আল রাজী গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই

আসছে সৌদি বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

আসছে সৌদি বিনিয়োগ

এম শাহজাহান ॥ চীন জাপান ভারত ও কোরিয়ার পর সৌদি আরবের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তেলসমৃদ্ধ মুসলিম বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশ এবার বিনিয়োগের জন্য নতুন নতুন উৎস খুঁজছে। তেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদনমুখী শিল্প ও অবকাঠামো খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দেশটি। আর এ ক্ষেত্রে সৌদি আরবের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। বিদ্যুত-গ্যাস, ঢাকা-চট্টগ্রাম সুপার হাইওয়ে, মংলা ও পায়রা পোর্ট উন্নয়নসহ এরকম বড় বড় দশটি খাতে বিনিয়োগ করবে সৌদি আরব। সৌদি আরবের উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে দেশটির বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকেও ইতোমধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এ লক্ষ্যে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সংগঠন জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা সফরে আসছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি বাদশার আমন্ত্রণে সে দেশ সফরের পর থেকে দু’দেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সম্ভাবনার নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। যদিও সামরিক জোটে সক্রিয় থাকা এবং ইরানবিরোধী পদক্ষেপের প্রক্রিয়ায় পাশে পাওয়ায় এবার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে রাজকীয় অতিথির মর্যাদা দিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁর প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত বৈঠক হয়েছে ওই সময়। সৌদি বাদশাহ সালমানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ইয়াসির আল-রমায়ান সে দেশের বিশেষায়িত সরকারী বিনিয়োগ তহবিল থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি সম্ভাব্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রের একটি তালিকাও ইতোমধ্যে চেয়েছেন। এখন সেই সফরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দ্রুত কাজ করতে আগ্রহী সৌদি আরব। আর এ কারণেই সৌদি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সফরে আসছেন। সফরের সময় প্রতিনিধিদল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের সূত্র ধরেই এবার জেদ্দা চেম্বারের ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সফরে আসছেন। সৌদি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দেশটি তেলের রাজস্বের ওপর আর নির্ভরশীল থাকতে চায় না। তাই অবকাঠামোসহ উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ এখন অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে তাদের পছন্দের প্রথম রয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, চীন, জাপান, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে। সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিও বাংলাদেশের দিকে। আশা করছি, তাদের এই সফরের মাধ্যমে দেশটি থেকে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ আসবে। শুধু তাই নয়, সৌদি আরবে ৩০/৩৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছে। এছাড়া মুসলিম রাষ্ট্র হওয়ায় সব ধরনের হালাল ভোগ্যপণ্য এদেশ থেকে সৌদি আরবে রফতানি হতে পারে। কিন্তু সেই রফতানি বাড়াতেও প্রয়োজন যৌথ বিনিয়োগ। ইতোমধ্যে এসব বিষয় নিয়ে কিছু কাজ করা হয়েছে। জানা গেছে, সৌদি ধনকুবেররা তাঁদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র তেল থেকে সরিয়ে অন্যান্য খাতে নেয়ার ওপর অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। পাশাপাশি সৌদি ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাইরে এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সিমেন্ট ও কাগজ কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বিসিআইসি এবং সৌদি আরবের আল রাজি গ্রুপের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকে বিসিআইসির পক্ষে সংস্থার সচিব হাছনাত আহমেদ চৌধুরী এবং সৌদি আরবের মেসার্স আল রাজী কোম্পানি ফর ইন্ডাস্ট্রি এ্যান্ড ট্রেডের পক্ষে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ আল রাজী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সে সময় বাংলাদেশের সার, কেমিক্যাল, চিনি, সিমেন্ট, কাগজসহ উদীয়মান শিল্পখাতগুলোতে বিনিয়োগের জন্য সৌদি উদ্যোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। ইতোমধ্যে আল রাজী গ্রুপের পক্ষ থেকে বিসিআইসির আওতাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি এবং কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লিমিটেড (কেপিএম) এলাকায় সিমেন্ট ও কাগজ কারখানা নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যুত উৎপাদনের দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, সৌদি আল রাজী গ্রুপ ও বিসিআইসির যৌথ উদ্যোগে কিংবা সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বে (পিপিপি) বিদ্যমান ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি সংলগ্ন নিজস্ব জায়গায় ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রসহ বার্ষিক ১৫ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি আধুনিক প্রযুক্তির সিমেন্ট কারখানা স্থাপন করা হবে। এদিকে, সৌদি এরাবিয়ান জেনারেল ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির (সাগিয়া) ডেপুটি গবর্নর ও ন্যাশনাল কম্পিটিটিভ সেন্টারের প্রেসিডেন্ট সউদ কে. আল-ফয়সালের সঙ্গে বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে। বিনিয়োগ সংক্রান্ত পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও শিল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। সউদ কে. আল-ফয়সালকে এমন তথ্য জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আশা প্রকাশ করেন, শীঘ্রই এটি স্বাক্ষরিত হবে। এছাড়া সৌদি আরবের একটি বড় বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আল-বাওয়ানি গ্রুপ বাংলাদেশে কনস্ট্রাকশন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তারা চলতি বছরের আগস্টে সেনা কল্যাণ সংস্থার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া আল-রাজী গ্রুপ বেসামরিক বিমান কার্গো খাতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সৌদি আরবের আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান আল-জামিল গ্রুপ স্টিল কাঠামোর বাড়ি বানাতে আগ্রহী এবং তারা বাংলাদেশের স্টিল এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ জনকণ্ঠকে বলেন, অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন ভাল। এছাড়া সৌদি আরব অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়াতে তেলের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আর এ কারণে সেই দেশের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশে আসছেন। আশা করছি, বিদ্যুত, গ্যাস ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সৌদির বিনিয়োগ আসবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সৌদি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের দশটি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার হলেও দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে মাত্র ১০০ কোটি ডলার। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশী ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সৌদি আরব সফরে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যে ও বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলছে। এফবিসিসিআই’র সাবেক প্রথম সহসভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতিতে আকৃষ্ট হয়ে তেলসমৃদ্ধ আরব দেশটির ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের বিনিয়োগ কিভাবে আনা যায় সে বিষয়ে এখন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। আর বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সৌদি আরবে যদি রফতানি করা যায় তাহলে তাদের আশপাশে যেসব আফ্রিকান দেশ আছে সেখানে রফতানি করা যেতে পারে। বিজনেস টু বিজনেস (বি টু বি) ভিত্তিতে সৌদি আরবের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াতে হবে। গরুর মাংস রফতানি হবে ॥ সৌদি আরবে সব ধরনের হালাল মাংস রফতানি করা হবে। এ লক্ষ্যে দেশটির সৌদি ফুড এ্যান্ড ড্রাগ অথরিটির (এসএফডিএ) সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এ চুক্তি হবে বাংলাদেশের প্রাণিজ সম্পদ অধিদফতরের ডিপার্টমেন্ট অব লাইভ স্টক সার্ভিসেস (ডিএলএস) এবং সৌদি কর্তৃপক্ষ এসএফডিএ’র মধ্যে। সৌদি আরব এতদিন ব্রাজিলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া ও চিকেন মাংস আমদানি করত। কিন্তু এখন দেশটি বাংলাদেশ থেকে হালাল মাংস আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। দেশে এ মুহূর্তে গরুর কিছুটা সঙ্কট থাকলেও খাসিসহ অন্যান্য মাংসের কোন ঘাটতি নেই। তাই সৌদি আরবে মাংস রফতানি করে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে সব ধরনের হালাল মাংস রফতানির উদ্যোগ নিয়েছে। সৌদি আরব হচ্ছে বিশ্বের হালাল মাংসের অন্যতম ক্রেতাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবে বাংলাদেশী হালাল মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে দেশটিতে কিছু মাংস রফতানি হলেও তা যথেষ্ট ছিল না। তবে এবার দু’দেশের সরকারী প্রচেষ্টায় মাংস রফতানি বাড়ানো হচ্ছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হালাল মাংস রফতানির লক্ষ্যে সম্প্রতি ইপিবিতে একটি সভা হয়। সভায় হালাল মাংস রফতানির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রফতানি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে কাজ করছে। হালাল মাংস উৎপাদন হবে যেভাবে ॥ পণ্যটি রোগবিহীন এবং স্বাস্থ্যসম্মত হলেই তাকে হালাল পণ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেসব গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির মাংস রফতানি করা হবে সেগুলো খামারে উৎপাদন করা হবে। বেসরকারী খাতে বেঙ্গল মিট নিজস্ব খামারে উৎপাদিত গরু ও খাসির মাংস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করছে। এছাড়া বেসরকারী খাতে দেশে এখন গবাদি পশু পালনে বহুসংখ্যক খামার গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রাণিজ সম্পদ অধিদফতর, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশে পশু পালন উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে দেশে গরুর কিছু সঙ্কট থাকলেও খাসি, ভেড়া, মহিষসহ অন্যান্য প্রাণীর উৎপাদনে কোন ঘাটতি নেই। তাই সৌদি আরবে মাংসের বড় বাজার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
×