ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী

কার্ডপ্রতি এক শ’ টাকা

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

কার্ডপ্রতি এক শ’ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নে ফেয়ার প্রাইজের চাল বিতরণ কর্মসূচীর এক ডিলারের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কার্ডপ্রতি এক শ’ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে কার্ডধারীদের কার্ড বাতিল করে দেয়া হবে বলে হুমকিও দিচ্ছে ওই ডিলার। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বেড়ারওপানি ও পারবেড়ারওপানি গ্রামে গিয়ে কার্ডধারী দরিদ্র মানুষ অভিযোগ করেন ডিলার আশরাফুল ইসলাম স্বপন চাল দেয়ার সময় তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। ওই গ্রামের মরিয়ম বেগম, আছিয়া বেগম, আব্দুল আলিম, ববিতা খাতুন, আব্দুর রাজ্জাক, মর্জিনা বেগম, শহিদুল ইসলাম, মফিজুর রহমান, বেগম খাতুন, রিজিয়া বেগম, জায়দা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ডিলার আশরাফুল ইসলাম স্বপন প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে এক শ’ টাকা নিয়েছে। যারা টাকা দিতে চাইনি তাদের কার্ড কেটে দেয়ার কথা বলে জোরপূর্বক টাকা নিয়েছে। কার্ডধারী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। গ্রামের লোকজন সাহায্য তুলে আমার চিকিৎসা করেছে। অথচ আমার কাছ থেকেও টাকা নিতে বাদ দেয়নি। পারবেড়ারওপানি গ্রামের মৃত ওবায়দুল ইসলামের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান, কার্ড দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৮০ টাকা নিয়েছে। অথচ আমাকে কার্ড দেয়নি। আমার টাকা এখনও ফেরত দেয়নি। এসময় আরও অনেকে অভিযোগ করেন, যারা ১০ টাকা দরের চাল পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে কার্ড না দিয়ে যারা ধনী তাদের এই কার্ড দেয়া হয়েছে। ওই এলাকার ইউসুফ আলীর বিধবা কন্যা আলেয়া বেগম, জুয়েল রানার স্ত্রী মিনা খাতুন, শফিকুল ইসলামের স্ত্রী শরবানু বেগম, আক্তারুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, আলাউদ্দীনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম, তোফাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী কদবানু বেগম, আরশাদ আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম, আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী তাসলিমা বেগম দাবি করেন তারা কার্ড পাওয়ার দাবিদার হলেও তাদের কার্ড দেয়া হয়নি। অনেকের মাঠে ১৫/২০ বিঘা জমি আছে তাদের কার্ড করা হয়েছে। মশিয়ার রহমান নামে এক ভ্যানচালক জানান, যারা কার্ডের প্রাপ্ত তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এদিকে ডিলার আশরাফুল ইসলাম স্বপনের বিরুদ্ধে দুর্র্নীতির অভিযোগ এনে ৪৩ ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাগমারায় শুরু হয়নি চাল বিক্রি স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা এখনও পায়নি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল। তালিকা অনুমোদন হওয়ার পরও চাল কিনতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। বিভিন্ন অজুহাতে খাদ্য বিভাগ এ ইউনিয়নে চাল বিক্রির ডিও দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বাগমারার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোছা. পারভীন বলেন, তারা অনুমোদিত তালিকা পেয়েছেন। ইউএনওর সঙ্গে বসে আলোচনা করে দ্রুত চাল বিক্রি শুরু করবেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর গণিপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ ইউনিয়নের ৯০০ জন হতদরিদ্র ব্যক্তির তালিকা তৈরি করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গত ৯ অক্টোবর জমা দেয়া হয়। এর আগে তালিকা তৈরি নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরোধ দেখা দেয়। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হয়। তালিকা প্রস্তুত কমিটির ১৭ জন সদস্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর তা অনুমোদন করেন। এরপর কমিটির সভাপতি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ আবদুল মুমীত তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দেন। এরপরও চাল বিক্রি শুরু করা হয়নি। গত ৭ অক্টোবর থেকে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে চাল বিক্রি শুরু হলেও গণিপুর ইউনিয়নের তালিকভুক্তরা এখনও চাল পাননি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। ইউএনও নাছরিন আক্তার স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, তালিকায় কয়েকজনের নাম নিয়ে বুধবার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের পর চাল দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
×