ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চগড়ে প্রেমের ফাঁদে পড়ে কর্মকর্তা জেলহাজতে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

পঞ্চগড়ে প্রেমের ফাঁদে পড়ে কর্মকর্তা জেলহাজতে

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সুন্দরী নারীকে দিয়ে বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তার সঙ্গে প্রেম অতঃপর ফোন সেক্সের কথোপকথন রেকর্ড করে তা প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কর্মকর্তার মোটরসাইকেল, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন সেট ছিনতাই করে নেয়ার পরও উল্টো মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় বর্তমানে তিনি জেলহাজতে আটক রয়েছেন। কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আসাফুদৌল্লার স্ত্রী জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে জানা যায়, গত কয়েক মাস আগে কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আসাফুদৌলার ফোনে কল করেন আটোয়ারী উপজেলার সিকুপাড়া গ্রামের আব্দুর রবের মেয়ে রুপা বেগম ওরফে তামান্না। ওই নারী নিজেকে ইতালি প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসাফুদৌল্লাকে তার নিঃসঙ্গতায় সঙ্গ দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। এরপর ঐ কর্মকর্তাকে পালসার মোটরবাইক, দামী ফোন সেট কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ফোনে কথা বলতে বলতে এক সময় ফোন সেক্সে জড়িয়ে পড়েন ঐ কর্মকর্তা। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে ওই নারী তাদের সবকিছু কথোপকথন ফোনে রেকর্ড করে প্রতারণা শুরু করেন। রুপা বেগম একই উপজেলার রসেয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে বিএনপি নেতা জহির হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলার কলেজ পাড়া এলাকার মসিউর রহমান এবং মসিউরের বন্ধু আটোয়ারী উপজেলার সুকাতী গ্রামের ব্যবসায়ী জাকিরের সঙ্গে যোগসাজোশ করে আসাফুদৌল্লার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নেয়ার অপচেষ্টা করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২ সেপ্টেম্বর রুপা বেগম ঠাকুৃরগাঁও বুড়িরবাঁধে সকাল ১১টায় আসাফুদৌল্লাকে জরুরী কথা আছে বলে মোবাইলে ডেকে পাঠান। সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মসিউর রহমানসহ অজ্ঞাত কয়েকজন আসাফুদৌল্লাকে আটক করে তার কাছ থেকে পালসার মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয় এবং বেধড়ক মারপিট করে একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। আফাফুদৌল্লার স্ত্রী আমিনুন নাহার অভিযোগ করেন, মসিউরের কথা মতো রুপা বেগম তার স্বামীকে জড়িয়ে ধরলে মসিউর তা ভিডিও করেন। পরে আসাফুদৌল্লার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। দাবিকৃত টাকা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে না দিলে মোবাইল রেকর্ড, ভিডিওর ভিত্তিতে এলাকাবাসীকে ডেকে রুপা বেগমের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হবে। অন্যথায় জেলহাজতে পাঠানো হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। সম্মানের কথা ও প্রাণের ভয়ে আসাফুদৌল্লা ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করে ওইদিনই দুপুরে ৫০ হাজার টাকা বিকাশ করেন। টাকা পাওয়ার পর আসাফুদৌল্লাকে ছেড়ে দেয় ওই প্রতারক চক্র। কিন্তু ঘটনার কয়েকদিন পরেই রুপা বেগম জহির ও জাকিরের মাধ্যমে আরও টাকা দাবি করে। এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রুপা বেগম মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আসাফুদৌল্লার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বর্তমানে আসাফুদৌল্লা জেল হাজতে। এ বিষয়ে রুপা বেগমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করার পর কোন কথা না বলে ফোনটি কেটে দেন। অপরদিকে মসিউরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সকল বিষয় অস্বীকার করে তিনি নিজেকে কখনও মডেল আবার কখনও ঠাকুরগাঁও জেলা রোভার স্কাউটের সভাপতি পরিচয় দেন।
×