ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলায় স্থাপনের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলায় স্থাপনের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব রকম সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। সংবিধানের ২২ ও ১১২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আজকের বাস্তবতা হচ্ছে সরকার বিচার বিভাগের কোন বিচারিক কাজেই হস্তক্ষেপ করে না’। তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জনগণের চাওয়া। এক্ষেত্রে অনেক কিছু ভাবনা-চিন্তার আছে। বুধবার সকালে ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের জুডিসিয়াল কর্মকর্তাদের ১০ দিনের এক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলায় জেলায় স্থাপনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি আইন মন্ত্রণালয়’। স্পর্শকাতর মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে এবং এ সমস্ত ক্ষেত্রে প্রসিকিউশনকে বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেয়া হবে। আশা করব ধর্ষণে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয়। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে কেউ সাহস না পায়। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলা পর্যায়ে সরানোর বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দেয়া বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার দেয়া বক্তব্য নিয়ে আইনমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সুপ্রীমকোর্ট এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়ে সুপ্রীমকোর্র্ট প্রশাসনের দেয়া চিঠির জবাব দেয়া হবে। এই বিচার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে ও সহজে মামলা নিষ্পত্তির কৌশল প্রয়োগের পাশাপাশি মানসম্পন্ন বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আইনী প্রক্রিয়া বা আইনী জটিলতা কিংবা মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে মানুষের মধ্যে জুডিসিয়ারি সম্পর্কে যাতে কোন হতাশা বা বিরূপ ধারণা সৃষ্টি না হয় সেদিকে বিচারকদের খেয়াল রাখতে বলেন তিনি। তিনি বলেন, বিচারকগণ মামলার প্রতিটি পর্যায়ে সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বিচারকদের মাধ্যমে মানসম্পন্ন বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং কিছু পদক্ষেপের বাস্তবায়নও সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এ পথ পরিক্রমায় সমস্যা বা চ্যালেঞ্জও নিতান্ত কম নয়। দেশের আদালতসমূহে বিদ্যমান মামলাজটসহ বিচার ব্যবস্থার সমস্যাদি সম্পর্কে সরকার ওয়াকিফহাল এবং যথেষ্ট সচেতন। যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরনো আইনের পরিবর্তন-পরিবর্ধন-পরিমার্জন, আদালতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি, অব্যাহত প্রশিক্ষণ, বিচারকদের পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে বিচার বিভাগের কাক্সিক্ষত সংস্কার কার্যক্রম সরকার আরও এগিয়ে নিতে চায়। অনুষ্ঠান শেষে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের বিচারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের স্পর্শকাতর মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে এবং এ সমস্ত ক্ষেত্রে প্রসিকিউশনকে বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমি আশা করব ধর্ষণে অভিযুক্তদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে কেউ সাহস না পায়। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হকও বক্তব্য রাখেন। এদিকে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের মানবাধিকার বিষয়ক দূত কিস ভ্যান রায়ারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। এ সময় আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বৈদেশিক অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৬ বাংলদেশে এনজিও কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে না।
×