মনন আসাদ। এ সময়ের মেধাবী ও সম্ভাবনাময় নির্মাতা। এক যুগেরও অধিক সময় ধরে সাংস্কৃতিক মিডিয়ায় বিচরণ। সম্প্রতি তিনি একটি বিজ্ঞাপন এবং একটি খ- নাটক নির্মাণ করেছেন। অচিরেই শুরু করতে যাচ্ছেন একাধিক নাটক ও টেলিফিল্মের কাজ। আগামীকাল রাত ১০-৫৫ মিনিটে এটিএন বাংলায় প্রচার হবে তার নির্দেশিত প্রথম নাটক ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’। এই নাটক এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়।
আপনার নির্দেশিত প্রথম একক নাটক ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ কাল প্রচার হচ্ছে। অনুভূতি কেমন?
মনন আসাদ : অনুভূতি অনেক ভাল। অনেক দিন থেকেই দেশের বিভিন্ন গুণী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। সলো ডিরেকশনের জন্য নিজের ভেতরেও একটা তাগিদ অনুভব করছিলাম। তাছাড়া কাছের মানুষরাও কিছু একটা করতে বলছিলেন। তো শুরু করলাম। আমার নির্দেশনার ক্যারিয়ারের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।
‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ নাটকের বিষয়বস্তু কী?
মনন আসাদ : নাটকের বিষয়বস্তু ডিভোর্স। আমি মনে করি মানুষের জীবনে যে কোন ভাঙ্গনই অসুন্দর। অন্তত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এর প্রতিক্রিয়া মারাত্মক। আর বেশিরভাগ সময়েই এর করুণ শিকার হচ্ছে মেয়েরা। তবে ব্যাপারটি যে শুধু পুরুষের পক্ষ থেকে ঘটছে তাও নয়। নারীর দিক থেকেও হরহামেশাই হচ্ছে। এ রকমই একটি গল্পের চিত্রায়ন ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ। আশা করি নাটকটি দর্শকদের ভাল লাগবে।
আপনার প্রথম নাটক হিসেবে ডিভোর্স বিষয়টি বেছে নেয়ার কারণ কী?
মনন আসাদ : দেখুন একটি স্বাধীন উদারনৈতিক জীবনের আকাক্সক্ষা আমাদের সবার থাকে। তবে বাংলাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদের গড় হার বেড়ে চলেছে ক্রমে। ডিভোর্স নামের এই শব্দটি মিথ্যা স্বাধীনতার নামে বড় বেশি সস্তা হয়ে গেছে ইদানীং। দীর্ঘ সময় চেনা-জানা এবং প্রেমের সম্পর্কের পরও বিয়ে ভেঙ্গে পড়ছে অবলীলায়। এই অবস্থায় সংস্কৃতি আমাদের সমাজে সচেতনা তৈরি ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি। বলতে পারেন সামাজিক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যেই আমি আমার প্রথম নাটকের জন্য এই বিষয়টা বেছে নিয়েছি।
‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ নাটকে কুশীলব কারা?
মনন আসাদ : লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমানের কাহিনী ও চিত্রনাট্যে তৈরি হয়েছে ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ নাটকটি। নাটকে অভিনয় করেছে জাকিয়া বারী মম, নাঈম, মনিরা মিঠু, আহমেদ অপু, ইশরাত তৃষা, সুমন আচার্য, সঞ্জয় রাজ, নিলয় রহমান প্রমুখ।
আপনার মিডিয়ায় কাজের শুরুর দিকটা জানতে চাই।
মনন আসাদ : ২০০২ সালের কথা। চলচ্চিত্রে হিরো হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় আসি। পরিচালক গাজী জাহাঙ্গীরের সহায়তায় অভিনয় শুরু করি। এ সময় ‘দুর্দান্ত’, ‘জীবন সীমান্তে’, ‘ঢাকাই যত গ-গোল’ চলচ্চিত্রে, কামাল খানের ‘শ্যাম সুন্দর পাল জয়’, ‘মঙ্গল ছায়া’, নাদের খানের ‘পরাণ কান্দে দুঃখে’, ‘সহজ মানুষ’সহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করি। এরপর কিছু মিউজিক ভিডিও পরিচালনাও করি। এক সময় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেই। অভিজ্ঞতা অর্জনে বিভিন্ন পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করি। ২০০৪ সালের দিকে অভিনেতা নির্দেশক মাসুম আজিজ এবং জিএম সৈকতের সঙ্গে কাজ করি। এরপর ক্রমান্বয়ে একে একে শতাধিক পরিচালকের সঙ্গে খ- নাটক, ধারাবাহিক নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপন নির্মাণের অভিজ্ঞতা হয়। এভাবেই কেটে যায় ১৩ বছর।
আপনি একটি বিজ্ঞাপনও নির্মাণ করেছেন?
মনন আসাদ : হ্যাঁ। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন গুণী মানুষের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাজ কামাল গুঁড়া মসলার বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেছি। এ রকম আরও ভাল ভাল কাজের ইচ্ছে আছে।
মিডিয়ায় আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
মনন আসাদ : দেখুন আমার ১৩-১৪ বছরের নির্দেশনা ক্যারিয়ারে অনেক গুণী মানুষের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের মেধা খাটিয়ে ভাল ভাল নাটক টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাই। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ও দোয়া চাই। এখন থেকে নিয়মিতভাবে কাজ করতে চাই। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ও আশীর্বাদ চাই। নিজের মেধা, ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং এতদিনের অর্জিত নানা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মিডিয়াকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখতে চাই।
-সাজু আহমেদ
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: