ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ আবদুল হালিম খসরু

ঘরে-বাইরে অসম্মান

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

ঘরে-বাইরে অসম্মান

এটা বাস্তব সত্য যে, আজকের শিশু একদিন হবে বৃদ্ধ পিতা বা মাতা। কে আর বৃদ্ধ হতে চায়! কেউই বৃদ্ধ হতে চায় না। যদিও সেটাই অমোঘ নিয়ম। সময়ই প্রবীণদের চেহারার ভাঁজ বা বলি রেখা সৃষ্টি করে, শরীর বাঁকিয়ে দেয় এবং অস্থি ভঙ্গুর করে তোলে। এটা প্রবীণদের নিরাপত্তাহীন করে, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি করে এবং অনেক সময় বৃদ্ধ ব্যক্তিকে ভীত করে তোলে। যে সকল প্রবীণ অথবা বৃদ্ধ একসময় পরিবারের প্রতিপালক, অভিভাবক ও রক্ষাকারীর দায়িত্ব পালন করতেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এখন তারা অসমর্থ; অনেকেই পরিবারের গলগ্রহ। যে সকল সন্তান সন্ততি একসময় মাতাপিতার দৃষ্টি আকর্র্ষণের জন্য প্রতিযোগিতা করত, তারাই পরে নিজেদের কাজে এত ব্যস্ত থাকে যে প্রবীণ পিতামাতার সঙ্গে সাক্ষাত বা খোঁজখবর নেয়ার সময়ই পায় না। যে সকল প্রবীণ মানুষ যারা সরকারী চাকরি করতেন, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তারা যখন প্রতি মাসে কোন ব্যাংক থেকে পেনশনের টাকা উত্তোলন করতে যান, তখন বিরূপ আচরণের সম্মুখীন হন। আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করি ব্যাংকের লোকেরা পেনশন হোল্ডারদের সঙ্গে অবহেলাসূচক এমন ব্যবহার করেন যেন তারা বিরক্ত; দয়া কৃপায় পেনশনের টাকার বিল পাস করে থাকেন। এখানেও অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণেরা অবহেলিত, অসম্মানিত। এটা বাস্তব সত্য যে, সামগ্রিকভাবে আমাদের সমাজে প্রবীণেরা অবহেলিত। এই সংস্কৃতি থেকে আমাদেরকে অবশ্যই বের হয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজ এ দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। রাষ্ট্র সমাজকে এগিয়ে আসতেই হবে। এই নিষ্ঠুরতা সামগ্রিকভাবে দূর হলে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রবীণদের সম্মান প্রতিষ্ঠা হলে প্রতিটি পরিবারে অবশ্যই শান্তি ফিরে আসবে। আলমনগর, রংপুর থেকে
×