ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রেফারিদের ক্ষোভ পারিশ্রমিক নিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

রেফারিদের ক্ষোভ পারিশ্রমিক নিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রেফারি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে নির্দিষ্ট যে কোন ধরনের খেলা পরিচালনা করেন। পাশাপাশি তিনি নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সবধরনের সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সংশ্লিষ্ট খেলা পরিচালনা করেন। খেলার পরিচালক হিসেবে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলায় দুইপক্ষের খেলোয়াড়দের ভুল-ত্রুটি নির্দেশ করেন এবং মধ্যস্থতাকারীরূপে হুইসেল বা বাঁশি বাজান। একজন রেফারির মাধ্যমে ফুটবল খেলা পরিচালিত হয়। ফুটবলের আইন-কানুনের ৫নং ধারার মাধ্যমে রেফারিকে খেলা পরিচালনার জন্য মনোনীত করা হয়। তিনি খেলায় মূল কর্তৃপক্ষ হিসেবে যাবতীয় আইন-কানুন প্রয়োগ করেন। দুইজন সহকারী রেফারি (লাইন্সম্যান) এবং প্রয়োজনবোধে চতুর্থ রেফারিও তাকে খেলায় সহায়তা করে থাকেন। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ফুটবল। আর ফুটবল খেলার প্রাণ হচ্ছে রেফারিরা। কেমন আছেন বাংলাদেশের রেফারিরা। ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আয়োজিত এই লীগে খেলে দেশের শীর্ষস্থানীয় ১২ ক্লাব। এই লীগ ছাড়াও প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের আসর। সবমিলিয়ে অসংখ্য ম্যাচ। অথচ এই ম্যাচগুলো চালাতে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের আছে মাত্র ১৫ রেফারি (৫ রেফারি, ১০ সহকারী রেফারি), যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। বাফুফের বর্তমান কমিটি যেমন গত নয় বছরে তৃণমূল ফুটবলের প্রতি নজর দেয়নি, তেমনি নজর দেয়নি রেফারিদের প্রতিও। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেফারিরা অনেকদিন ধরেই বাফুফের অবহেলার শিকার হচ্ছে নানাভাবে। একজন রেফারি লীগের প্রতিম্যাচ পরিচালনা করে কত পারিশ্রমিক পান? উত্তর মাত্র দুই হাজার টাকা করে (লীগ ম্যাচ বাদে অন্যান্য টুর্নামেন্টে ম্যাচপ্রতি পারিশ্রমিকের হার এরচেয়ে একটু কম)! যেখানে ফুটবলাররা পুরো মৌসুমে খেলে পেয়ে থাকেন দশ থেকে ষাট লাখ টাকা পর্যন্ত, সেখানে স্থানীয় রেফারিরা সারাবছর রেফারিং করে যা পান তা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই পারিশ্রমিক কি যথেষ্ট? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেফারি বলেন, ‘ভাই, এই টাকায় আমাদের চলে না। আমাদের ট্রেনিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। নিজেদেরই যা করার করতে হয়। যা পাই, তা যাতায়াত ভাড়াতেই বেশিরভাগ খরচ হয়ে যায়।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক রেফারি জানিয়েছেন, বাফুফে তাদের পাওনা বাবদ ২০ লাখ টাকা এখনও আটকে রেখেছে (আগে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টাকা)। বাফুফেকে বারবার তাগাদা দেয়া হলেও এই টাকা দিতে টালবাহানা করেছে তারা। শুধু আশ্বাসের পর আশ্বাসই দিয়ে যায়, টাকা আর দেয় না। রেফারিদের দুঃখের কাহিনীর এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। বাফুফের রেফারিজ কমিটির অবহেলা-অদক্ষতা এবং হিংসার শিকার হয়ে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রেফারিরা। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আর কোন দক্ষ রেফারি তৈরি করতে পারেনি। তৈয়ব হাসানের অবসরের পর ফিফার এলিট প্যানেলে নেই আর কোন বাংলাদেশী রেফারি।
×