ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লালমনিরহাট-সান্তাহার সেকশনে ১২টি স্টেশন বন্ধ ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ

কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত রেলওয়ে

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত রেলওয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ জনবল সঙ্কটের অজুহাতে কয়েক বছর থেকে পঞ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট-সান্তাহার সেকশনের ১২টি স্টেশন বন্ধ (ক্লোজডাউন) করে দেয়া হয়েছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি এসব স্টেশনে সকল প্রকার বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে প্রতিবছর কমপক্ষে ৭ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত রেলওয়ে। বন্ধকৃত এসব রেল স্টেশন চালু করারও কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। লালমনিরহাট-সান্তাহার সেকশনে মোট ২৬টি রেল স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে মহেন্দ্রনগর, চৌধুরী রাণী, হাসানগঞ্জ, নলডাঙ্গা, কামারপাড়া, কুপতলা, বাদিয়াখালী, মহিমাগঞ্জ, সুখানপুকুর, আলতাফ নগর, নশরতপুর ও পাঁচপীর মাজারসহ ১২টি স্টেশন বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে নলডাঙ্গা, কামারপাড়া, বাদিয়াখালি ও মহিমাগঞ্জ স্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্রে অবস্থিত এগুলোতে প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় আসত। এ রুটে চলাচলকারী বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ২১-আপ ও ২২-ডাউন পদ্মরাগ এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি সব ট্রেন সরকারী ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে চালু রয়েছে। বেসরকারী পরিচালিত ট্রেনগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট বন্ধ স্টেশনে তাদের নিজস্ব স্টাফ যথারীতি দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব কোন স্টাফ সেগুলোতে নেই। ফলে সেখানে রেল কর্তৃপক্ষ পরিচালিত ট্রেনের টিকিট কাটতে না পেরে নানা দুর্ভোগের কবলতে পড়তে হচ্ছে ট্রেন যাত্রীদের। ওইসব বন্ধ স্টেশনগুলোর মধ্যে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেস শুধু থামে না। বাকি লোকাল ও আন্তঃনগর সব ট্রেন যথারীতি এসব স্টেশনে থামে। ফলে বন্ধের কারণে যাত্রীরা এসব স্টেশনে টিকিট করতে না পারায় বিকল্প চলাচলের সুযোগ না থাকায় বিনা টিকেটেই যাতায়াত করছে। এজন্য তারা অনেক ক্ষেত্রেই ট্রেনে উঠে রেল কর্মীদের কাছে হয়রানির শিকারও হতে হচ্ছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, জনবল সঙ্কটসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে বেশ ক’টি ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন নতুন করে সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে স্টেশন বন্ধ হওয়ায় যাওয়ায়। প্রতিমাসেই বিভিন্ন স্টেশনে মাস্টার, পোর্টার, পয়েন্টসম্যান অন্যান্য কর্মচারীরা অবসর গ্রহণ করলেও নতুন নিয়োগ তেমন না দেয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে বন্ধকৃত স্টেশনগুলোতে কোন স্টাফ না থাকায় ওইসব স্টেশনে ট্রেন আসার সংকেত দেয়ার কেউ থাকে না। ট্রেনগুলো নিয়ম মাফিক আসছে, স্টেশনে থামছে এবং যথারীতি চলে যাচ্ছে। টিকেট নেয়ার কেউ নেই, দেখারও কেউ নেই। এ অবস্থা চলছে বন্ধ স্টেশনগুলোতে। এতে স্টেশনে স্টেশনে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ ব্যাপারে লালমনিরহাটের বিভাগীয় ট্রাফিক তত্ত্বাবধায়ক (ডিটিএস) মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নানা কারণে রেল বিভাগ জনসঙ্কটের মুখে রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী লোক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। শীঘ্রই এসব সমস্যা কেটে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তখন স্টেশনগুলো ক্লোজড ডাউন মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
×