ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জয়দেব বিশ্বাসের সৃজনে উদ্ভাসিত কারুশিল্পের বহুমাত্রিকতা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

জয়দেব বিশ্বাসের সৃজনে উদ্ভাসিত কারুশিল্পের বহুমাত্রিকতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একসঙ্গে তিনটি শখের হাঁড়ির অবয়ব জুড়ে গড়া হয়েছে নারীর প্রতিকৃতি। পিতল আশ্রিত ফিগার কম্পোজিশন শীর্ষক শিল্পকর্মের সেই নারীকে দেখা যায় নৃত্যের ভঙ্গিমায়। রয়েছে একই মাধ্যমের গড়া আরও কয়েকটি নারী প্রতিকৃতির সঙ্গে নজর কাড়ে পল্লীবধূ কিংবা লতাপাতা আচ্ছাদিত জলাশয়। চমৎকার রঙের প্রলেপে বাটিক মাধ্যমে সৃজিত আরেকটি শিল্পকর্মে মেলে ধরা হয়েছে শ্রমজীবী নারী ও পুরুষকে। বাটিকের আরেকটি কাজে দৃশ্যমান হয়েছে গহীন বনের ভেতর দিয়ে উড়ে যাওয়ার এক জোড়া পাখি। ট্যাপেস্ট্রি মাধ্যমে গড়া গাছের ডালে বসে থাকা দোয়েল পাখি বা গাছে ঝুলে থাকা সূর্যমুখী ফুলগুলো যেন হাতছানি দেয় শিল্পরসিককে। কাঠ খোদাই মাধ্যমের কাজগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে প্রদর্শনীর বহুমাত্রিকতা। কারুশিল্পের এমন বহুমাত্রিকতার সন্ধান মেলে তরুণ শিল্পী জয়দেব বিশ্বাসের শিল্পসম্ভারে। চারুকলা অনুষদের দুই নং জয়নুল গ্যালারিতে চলছে এই নবীন শিল্পীর প্রদর্শনী। শিরোনাম ভার্সেটিলিটি অব ক্র্যাফটস। শিল্পকর্ম সৃজনে জয়দেব বিশ্বাস ঐতিহ্যের অভিমুখী হয়েছেন নিরীক্ষার পথ ধরে। সেই সঙ্গে ছুঁয়ে গেছেন যাপিত জীবনকে। সৃষ্টির তাড়নায় নিসর্গের সৌন্দর্যকেও অবলম্বন করেছেন। ঘটিয়েছেন প্রাণ ও প্রকৃতির মেলবন্ধন। কাঠ ও মেটালকে নানাভাবে নাড়াচাড়া করেছেন নানাভাবে। মনোগ্রাহী টেক্সচারের ব্যবহারে মানুষ, মুখোশ, সাপসহ মাছ ও ধর্মীয় বিশ্বাসজাত নানা আঙ্গিক উন্মোচন করেছেন। বিন্দু আর রেখার টেক্সচার এই দুই শৈল্পিক উপাদানের সঙ্গে শিল্প সৃজনে যুক্ত হয়েছে শিল্পীর আবেগ। মেটালের কাজে চমৎকারভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে নারীর নৃত্যভঙ্গিমা। কাঠের কাজে মানুষ, মুখোশ, মাছি ও পাখির সঙ্গে নক্সার সম্মিলন ঘটেছে। সেই সঙ্গে আছে পৌরানিক কাহিনীর বিবরণ। ব্যবহারিক বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে নান্দনিকতার মিশেলে নানা লোকজ বিষয় যুক্ত হয়েছে আয়নায়। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে উডওয়ার্ক, মেটাল ওয়ার্ক, ট্যাপেস্ট্রি, বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, মুখোশ ইত্যাদি মাধ্যমের ৩০টি শিল্পকর্ম। বিভিন্ন মাধ্যমের সৃজনশীল কাজগুলো দর্শকদের আনন্দ দান করবে। ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া প্রদর্শনী চলবে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ শিল্পকলা একাডেমির বিশাল আঙ্গিনাজুড়ে চলছে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব। ইতোমধ্যেই নাট্যানুরাগীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে এ উৎসব। গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসব পর্ষদ আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবের পঞ্চম দিন ছিল মঙ্গলবার। প্রতিদিনের মতো এদিন বিকেলেও নাট্যশালার সামনের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছেন নাচ-গান ও কবিতায় সাজানো সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বে সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও উজান। আবৃত্তি পরিবেশনা করে মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র ও চারুকণ্ঠ। নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ও সুরাইয়া পারভীন। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মিজানুর রহমান সজল ও জেবিন। সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয়েছে তিনটি নাটক। নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় থিয়েটারের (বেইলী রোড) নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় দৃষ্টিপাত নাট্য সংসদের নাটক ‘কয়লা রঙের চাদর’। স্টুডিও থিয়েটার হলে পরিবেশিত হয় কক্সবাজার থিয়েটারের নাটক ‘টু ইডিয়টস’। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। প্রতিটি হলে নাটক শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু হবে বিকেল ৪টায়। শেক্সপিয়রের মৃত্যুবার্ষিকী উদ্্যাপন উপলক্ষে কর্মশালা ॥ বিখ্যাত নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ৪০০তম মৃত্যুবার্ষিকী উদ্্যাপন উপলক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচী নিয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। এ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে চলছে ‘শেক্সপিয়রের নাটক : বিষয়বস্তু, বৈশিষ্ট এবং অভিনয় শৈলী’ শীর্ষক পক্ষকালব্যাপী বিশেষ কর্মশালা। এতে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন নাট্য সংগঠনের ৮০ জন প্রশিক্ষণার্থী। কর্মশালায় মুখ্য প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন নাট্যসারথী আতাউর রহমান।
×