ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঝিনাইদহে বন্দুকযুদ্ধে জামায়াত আমিরসহ নিহত ২

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

ঝিনাইদহে বন্দুকযুদ্ধে জামায়াত আমিরসহ নিহত ২

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ ও স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঝিনাইদহে দুই জামায়াত-শিবির নেতা নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো জেলা জামায়াতের আমির জহুরুল ইসলাম (৩৮) ও শিবির নেতা তারিক হাসান সজীব (৩২)। মঙ্গলবার ভোররাতে শহরের বাইপাস সড়কের ভুটিয়ারগাতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অস্ত্র, গুলি, বোমা, মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়। নিহত জহুরুল ইসলামের নামে নাশকতাসহ ৭টি ও সজীবের নামে ১টি মামলা রয়েছে। এদিকে বাগেরহাট জেলার কচুয়ায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) চার সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমাসহ আটক করেছে পুলিশ। অভিযোগ আছে, এরা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। এ সময় জেএমবি সদস্যদের ছোড়া হাতবোমার আঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, মঙ্গলবার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটের সময় বাইপাস সড়ক দিয়ে ৩টি মোটরসাইকেলযোগে কিছু লোক ভুটিয়ারগাতি গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। টহল পুলিশের একটি দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ৩টি বোমা ছুড়ে মারে এবং গুলিবর্ষণ করে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে ২৯ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়া হয়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ২টি সার্টারগান, ৫টি বোমা, ২ রাউন্ড গুলি, ২টি চাপাতি, ১টি ছোরা, ১টি মোটরসাইকেল ও ২টি ব্যাগ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বুলবুল, আলম ও নাসির নামে ৩ পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছে। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে নিহতদের স্বজনরা হাসপাতালে তাদের মৃতদেহ শনাক্ত করেন। নিহত জহুরুল ইসলাম ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকার শমসের আলী মোল্লার ছেলে ও পৌর জামায়াতের আমির অপরজন তারিক হাসান সজীব শহরের আরাপপুর এলাকার খন্দকার আব্দুল লতিফের ছেলে ও ঢাকা মহানগর (পশ্চিম) শিবিরের উপদেষ্টা ছিলেন। দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, জহুরুল ইসলাম জেলা জামায়াতের বর্তমান আমিরের দায়িত্বে ছিলেন। জহুরুল ইসলামের নামে নাশকতাসহ ৭টি ও সজীবের নামে ১টি মামলা রয়েছে। বাগেরহাট ॥ মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাটের কচুয়া থানা পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশের যৌথ দল মঘিয়া ইউনিয়নের খলিসাখালি গ্রামের সাফায়েত শেখের বাগানবাড়ি থেকে জেএমবির চার সদস্যকে আটক করে। আটককৃতরা হলো বাগেরহাটের কচুয়ার কাকারবিল গ্রামের বেদার উদ্দিন মোল্লার ছেলে আকাশ (১৯) ওরফে বাবু, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের রগুনাথপুর গ্রামের লোকমান ফরাজীর ছেলে কবীরুল (২৬) ও মাছিমপুরের আব্দুল হাই সেখের ছেলে মোঃ ঘাবিবুল্লা (১৯) এবং মঠবাড়িয়ার উত্তর সোনাখালী গ্রামের সাহাজাহান হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমান (২৮)। তাদের কাছ থেকে একটি রিভলবার, দুটি গুলি ও পাঁচটি হাতবোমা, পাঁচটি মোবাইলসেট ও একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটককৃতরা জেএমবির সক্রিয় সদস্য বলে কচুয়া থানার পুলিশ জানায়। অভিযানের সময় জঙ্গীদের ছোড়া বোমার আঘাতে আজিজ, মতিন ও আজাদ নামে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতদের চিকিৎসা চলছে। বোমাগুলো পানিতে ভিজিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় জনকণ্ঠকে জানান, খলিসাখালি গ্রামের সাফায়েত শেখের বাগানবাড়িতে ১০/১২ জন জেএমবি সদস্য নাশকতার পরিকল্পনা করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
×