ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডিলার ও কর্মকর্তাদের কারসাজি

ময়মনসিংহে ১২০ দরিদ্রের চাল ফেরত

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

ময়মনসিংহে ১২০ দরিদ্রের চাল ফেরত

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ জেলার অনেক উপজেলাতে এখনও শুরু করা যায়নি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণ। খোদ ময়মনসিংহ জেলা সদরের ভাবখালি ইউনিয়নে হতদরিদ্র ১২০ জন কার্ডধারীর মধ্যে সময়মত এই চাল বিতরণ না করায় ফেরত গেছে বরাদ্দের চাল। অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগে নান্দাইল উপজেলায় একযোগে ২৪ জনের ডিলারশিপ বাতিলের পর এখনও নিয়োগ দেয়া হয়নি নতুন ডিলার। এই উপজেলায় নতুন করে ডিলারশিপের জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের অনেকেই বাদ পড়া ডিলার পরিবারের সদস্য বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, ঈশ্বরগঞ্জ ও ত্রিশালসহ সদরের দাপুনিয়া ও বোররচর ইউনিয়নেও চাল বিতরণ নিয়ে শুরুতেই নয়ছয় কারবারের অভিযোগ উঠেছে। এসব নানা কারণে হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে ময়মনসিংহে। অথচ এসব অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ অব্যবস্থাপনায় জড়িতদের কেউ কেউ নামমাত্র শাস্তি পেলেও বেশিরভাগ রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে বহাল তবিয়তে। ফলে বন্ধ হচ্ছে না খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী নিয়ে কারসাজি। ময়মনসিংহ সদরের ভাবখালি ইউনিয়নের চুরখাই বাজারে মঙ্গলবার নির্ধারিত দিনে চলতি অক্টোবর মাসের জন্য সরকারের ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণ করছিলেন ডিলার শহীদুল ইসলাম। এই চাল নিতে আসা দড়িভাবখালি গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের যাদব আলীর পুত্র আছর আলী অভিযোগ করে জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ কেজি চাল পাননি তিনি। চলতি অক্টোবর মাসের গত ৪ তারিখে ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন দড়িভাবখালি গ্রামের ৯২১ নম্বর কার্ডধারী আব্দুল মালেক, সুতিয়াখালি গ্রামের ৯২৮ নম্বর কার্ডধারী আবু তালেব ও সুতিয়াখালির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাজেদা খাতুন। কিন্তু তাদের সেপ্টেম্বর মাসে কোন চাল দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ডিলার শহীদুলের সামনেই। ডিলার শহীদুলের নামে গত সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ১৮৪৫ জন হতদরিদ্র কার্ডধারীর বিপরীতে ৫৫ দশমিক ৩৫ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। ডিলার শহীদুলের দাবি সময়মতো এই চাল না নেয়ায় ১২০ জন হতদরিদ্রের চাল ফেরত গেছে। উইনারপাড় গ্রামের হতদরিদ্র ছাবেদ আলীকে গত শনিবার এক সঙ্গে দেয়া হয়েছে ২ মাসের ৬০ কেজি চাল। ছাবেদ আলী চাল পাননি বলে অভিযোগ করেছিলেন জনকণ্ঠের কাছে। খবরটি ছাপা হওয়ার পর পঙ্গু ছাবেদ আলী দু’মাসের চাল পেয়ে খুশি। সুতিয়াখালির হেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন এক মাসের চাল পাওয়ার পর স্থানীয় এক সাবেক ডিলার তার কার্ড কেড়ে নেন। ফলে তিনি নতুন করে চাল তুলতে পারছেন না। এরকম অব্যবস্থাপনা ও বরাদ্দের চাল ফেরত বিষয়ে কারা দায়ী প্রসঙ্গ এড়িয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার জনকণ্ঠকে জানান, ভাবখালিতে যে ১২০ জন হতদরিদ্র চাল পায়নি চলতি অক্টোবর মাসের বরাদ্দের সঙ্গে সেই চাল সমন্বয় করে কম দেয়া হয়েছে নিযুক্ত ডিলারকে।
×