আমাদের তরুণ প্রজন্মের কয়জন ভবিষ্যত নিয়ে অন্যকিছু ভাবতে পারে? ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন সবারই। নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে কাজে লাগিয়ে ক্যারিয়ার গঠনের ইচ্ছা হয়ত কেউ কেউ করে। তবে যারা এই স্বপ্ন দেখে তাদের পথটা অনেকখানি কঠিন হয়েই পড়ে। ইচ্ছা করলেই নিজের মনমতো কিছু একটা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে আশার খবর কিছু মানুষ আছে যারা অন্যের চাকরি না করে নিজেরাই উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন। এমনই ভিন্নরকমের চিন্তা নিয়ে দিনরাত কাজ করে চলেছে ছয় তারুণ্য। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে ইফফাত রঙের পথে চলেছে তানভীর অরণ্য, জিহাদ কবি, সারোয়াত রাখি, রাহা চৌধুরী এবং মুবাসসির সাকিব। দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে তাদের অনলাইন ক্লোথিং হাউস, ‘প্যাস্টেলস’।
আপনার হয়ত মার্কেটে একটি জামা পছন্দ হলো। কিন্তু বিধিবাম! জামার দাম লেখা আছে ৩০ হাজার টাকা।
সর্বনাশ! এত টাকা দিয়ে জামা কেনা তো আপনার পক্ষে এখন সম্ভব না! এক কাজ করুন, ফেসবুকে গিয়ে শুধু তাদের পেজে একটি মেসেজ দিন, যে আপনার এই জামাটি দরকার, বাজেট জানাবেন। ব্যস! আপনি দামের অর্ধেক টাকা তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে বা বিকাশের মাধ্যমে এ্যাডভান্স করে দিন, মাপ দিন এবং ২০ দিনের ভেতর আপনার জামাটি আপনার কাছে হাজির! কো-ফাউন্ডার তানভীর অরণ্যের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন, ‘আসলে পুরো আইডিয়াটা ছিল রঙের। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে কাজ করার তার আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল। তবে সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বন্ধু সাকিবের সহায়তায় শুরু। তবে আমাদের বিজনেসে রঙের কন্ট্রিবিউশন সব থেকে বেশি। ও যেভাবে এটা নিয়ে নতুন নতুন আইডিয়া বের করে এবং পরিশ্রম করে, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।’
জিহাদের ভাষায়, ‘আমরা এই বিজনেসকেই প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা বন্ধুরা মিলে আলহামদুলিল্লাহ্ অনেকদূর এগিয়েছি। এখন আমাদের নিজেদের ফ্যাক্টরি আছে, ওয়ার্কার আছে। বিজনেসটা আরও বড় করতে চাই।’ ফাউন্ডার ইফফাত রঙ জানালেন, ‘ব্যাপারটা হঠাৎ করেই শুরু করেছিলাম। আমাদের কাছে কোন পুঁজিও ছিল না। ধীরে ধীরে আমরা টাকা জমালাম, প্রচুর পরিশ্রম করলাম এবং এতদূর আসতে পারলাম। অনেক কষ্ট করেছি। দিনরাত খাটাখাটনি করেছি, টাকার অভাবে বন্ধুদের কাছে ধার নিয়েছি, কাস্টমারদের কিভাবে সন্তুষ্ট করা যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়েছে।
ই-কমার্স আমাদের দেশে এখনও তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে আগের চেয়ে বেশি মানুষ দেখছে আমাদের কাজ, ভুল থেকে শিখছি, নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি। আশা করি, প্যাস্টেলস যেন আরও উন্নতি করতে পারে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সাধ্যের মধ্যে আশা পূরণ করার সঙ্গে ভাল জিনিসের জন্য মানুষকে যেন বিয়ের বাজার করতে ইন্ডিয়া-পাকিস্তানে ছুটতে না হয় আর সেদিকেও।’ শুধুমাত্র মেয়েদের পছন্দসই পোশাক তৈরি করে বলে তাদের প্রধান আকর্ষণ হলো ট্র্যাডিশন আর ফ্যাশনের মিশেলে তৈরি সুন্দর বিয়ের পোশাক।
ডি.প্রজন্ম ডেস্ক
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: