ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাইগারদের প্রশংসা কুকের কণ্ঠে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

টাইগারদের প্রশংসা কুকের কণ্ঠে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পনেরো মাস পর ফিরে প্রথম টেস্টটা বাংলাদেশ এত কঠিন করে তুলবে, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক সেটি ভাবতে পারেননি। তবে শেষ দিনে ২ উইকেট তুলে নিয়ে দল সিরিজে এগিয়ে যাবে, এমন বিশ্বাসও তার ছিল। সাদা পোশাকে টাইগারদের লড়াকু মনোভাবের প্রশংসা করেছেন ইংলিশ সেনাপতি। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন, প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এ জন্য ম্যাচের ‘নায়ক’ বেন স্টোকসকে বিশেষ কৃতিত্ব দিয়েছেন। স্টোকসও টাইগারদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় মুগ্ধ। কুক বলেন, ‘আমি সত্যিই ভেবেছিলাম ২৮৫ রানের লিড যথেষ্ট। চিন্তুাও করতে পারিনি চতুর্থ ইনিংসে ওরা (বাংলাদেশ) এত কাছাকাছি চলে যাবে। বিশেষ করে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা যেভাবে স্পিন সামলেছে, সেটি ছিল মুগ্ধ করার মতো। টেস্টে দীর্ঘ বিরতির পর ফেরা বাংলাদেশের লড়াকু খেলার প্রশংসা করতেই হয়।’ শেষ দিনে ৩৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশের ২ উইকেট তুলে নিতে ইংলিশ অধিনায়কের ভেতর আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল না বলেও জানিয়েছেন কুক, ‘সত্যি বললে, আজ (পঞ্চম দিন) সকালেও আমি জয়ের ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। ২ উইকেটে ৩০Ñএর বেশি রান... তাদেরও (বাংলাদেশ) হয়ত হাফ চান্স ছিল। তবে জানতাম আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারব। স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত সেটা করতে পেরেছি।’ কঠিন থেকে কঠিন হতে থাকা চট্টগ্রামের উইকেটে শেষ ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২৮৬। ওই অবস্থায় কুক ধরেই নিয়েছিলেন তারা যথেষ্ট নিরাপদ। টাইগাররা এতটা কাছাকাছি চলে আসবে, সেটিই কেবল ভাবতে পারেননি ইংল্যান্ড ইতিহাসের সর্বোচ্চ টেস্ট রান সেঞ্চুরির মালিক। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতায় স্বস্তি পাচ্ছেন। অনুকূল কন্ডিশনে আদিল রশীদ-মঈন আলীদের স্পিন আক্রমণ এবং প্রতিকূলে পেস বোলিং-অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের দুরন্ত নৈপুণ্যে সন্তুষ্ট কুক। স্পিনবান্ধব উইকেটেও ইংলিশ পেসার যেভাবে বল করেছেন সেটি প্রশংসনীয়। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তুলে নিয়েছেন ৪ ও ২টি করে উইকেট। পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৮ ও ৮৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস উপহার দিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। অধিনায়ক কুক তাই স্টোকসকে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ ক্রিকেটার বলে অভিহিত করেছেন, ‘স্টোকস স্কোয়াডে দারুণ ভারসাম্য এনে দিয়েছে। ব্যাটিং কিংবা বোলিংÑ দলের প্রয়োজেন সে যে কোন সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সত্যি বলতে ওর নৈপুণ্যে দারুণ খুশি আমি।’ শেষ দিনের ২ উইকেট নয়, প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংটাই চট্টগ্রাম টেস্টে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন অতিথি অধিনায়ক, ‘এটা মনে রাখার মতো দুর্দান্ত একটা টেস্ট। শুরুতে ভাবতেও পারিনি খেলা পঞ্চম দিনে গড়াবে। অনেক চড়াই-উৎরাই ছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তৃতীয় দিনের শুরুটা। তখনও বাংলাদেশ ৭০-৮০ রানে পিছিয়ে, হাতে ৫ উইকেট। এরপরও আমরা লিড পেয়েছি। সেটিই ছিল আসল পার্থক্য। ওই মুহূর্তেও স্টোকস অসাধারণ বল করেছে।’ আর ম্যাচের নায়ক স্টোকস বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ২৮০ (আসলে ২৮৬) রান আমাদের জন্য অনেক। কখনই ভাবিনি এ ম্যাচ এত ক্লোজ হবে। তারা (বাংলাদেশ) যেভাবে স্পিন খেলেছে, তা খুবই অভূতপূর্ব।’ চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ২৮৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ইংল্যান্ড। লক্ষ্যটা খুব বড় না হলেও চট্টগ্রামের টার্নিং সেøা উইকেটে এ লক্ষ্যই ছিল বিশাল। স্বাভাবিকভাবে এমনটাই ভেবেছিলেন স্টোকসও। তবে উল্টো টাইগার ব্যাটসম্যানদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় সফরকারীদের। এমন লড়াই করার পর বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি স্টোকস। নিজেদের কন্ডিশনে অভ্যস্ত থাকায় স্বাগতিকরা এমনটা খেলতে পেরেছে বলেও মনে করেন তিনি, ‘বাংলাদেশ তাদের কন্ডিশনে নিয়মিত হওয়ায় স্পিন বল দারুণ মোকাবেলা করেছে। অবশ্যই তাদের কৃতিত্ব দিতে হবে, বিশেষ করে যেভাবে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করেছে।’ ৩৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে সোমবার শেষ দিন সকালে মাঠে নামেন বাংলাদেশের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান এবং তাইজুল ইসলাম। আর ১০ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে পার্থক্য গড়েন ‘নায়ক’ বেন স্টোকস।
×