ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তুরস্কে সিরীয় শরণার্থী শিশুরা ব্রিটেনের জন্য পোশাক বানাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

তুরস্কে সিরীয় শরণার্থী শিশুরা ব্রিটেনের  জন্য পোশাক বানাচ্ছে

যুক্তরাজ্যের ক্রেতাদের জন্য তুরস্কে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ার শরণার্থী শিশুরা পোশাক তৈরি করছে। বিবিসির টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্যানোরমা তুরস্কের বিভিন্ন কারখানায় গোপন অনুসন্ধান চালায় এবং এতে দেখা গেছে, ওই শিশুরা মার্কস এ্যান্ড স্পেন্সার (এমএ্যান্ডএস) এবং অনলাইনভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা এ্যাসোসের জন্য পোশাক তৈরির কাজ করছে। শরণার্থীরা অবৈধভাবে জারা ও ম্যাঙ্গো জিন্সের পোশাক তৈরিতেও কাজ করছে। অনুষ্ঠানে যে ব্র্যান্ডগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা সবাই দাবি করেছে, তারা তাদের সাপ্লাই চেন সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে এবং শরণার্থী ও শিশুদের অপব্যবহার বরদাস্ত করে না। মার্কস এ্যান্ড স্পেন্সার জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধানে তুরস্কে তাদের সাপ্লাই চেনে একজনও সিরীয় শরণার্থী পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিবিসি প্যানোরমার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ব্রিটিশ এই পণ্যের প্রতিষ্ঠানটির মূল কারখানাগুলোতেই সাতজন সিরীয় শরণার্থী কাজ করছে। এসব শরণার্থী প্রতিঘণ্টার কাজের জন্য এক ব্রিটিশ পাউন্ডেরও কম মজুরি পেয়ে থাকেন। তুরস্কের সর্বনিম্ন মজুরি থেকে এর পরিমাণ অনেক কম। দালালের মাধ্যমে কাজ পাওয়া এসব শরণার্থীকে কারখানার বাইরে রাস্তাায় তাদের কাজের মজুরি পরিশোধ করা হয়। এমন একজন শরণার্থী প্যানোরমাকে জানিয়েছে, কারখানায় তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। সামান্য ভুল হলেই তাদের কাপড়ের মতো ছুড়ে ফেলা হয়। সবচেয়ে কম বয়সী কর্মীর বয়স ১৫ বছর এবং সে দিনে ১২ ঘণ্টারও বেশি কাপড় ইস্ত্রি করার কাজ করে। ইস্ত্রি করা ওই কাপড়গুলো এরপর যুক্তরাজ্যগামী জাহাজে তোলা হয়। মার্কস এ্যান্ড স্পেন্সারের এক মুখপাত্র জানান, প্যানোরমার উদ্ঘাটন ‘খুব গুরুতর’ এবং ‘এমএ্যান্ডএসের পক্ষে অগ্রহণযোগ্য’। তাদের কারখানায় কোনো কাজ করা যে কোনো সিরীয়কে বৈধভাবে স্থায়ী কর্মী করা হবে। ইস্তানবুলে ম্যাঙ্গো ও জারা জিনসের একটি কারখানায় সিরীয় শরণার্থীদের দিয়ে ১২ ঘণ্টা কাজ করানো হয় বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ইস্তানবুলে ম্যাঙ্গো জিনসের আরেকটি কারখানায়ও সিরীয় শরণার্থীর পাশাপাশি তুরস্কের শিশুদের কর্মরত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১০ বছরের বয়সের কম বয়সী কর্মীও রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্র্যান্ড শপগুলো শিশুশ্রম প্রতিরোধে খুব বেশি কোনো ব্যবস্থা নেয় না। যুক্তরাজ্যের বিজনেস এ্যান্ড হিউম্যান রাইটস রিসোর্স সেন্টারের এক কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ম্যাকমুলান বলেন, এ দায় যে ব্র্যান্ডগুলোর তা তাদের বোঝা উচিত। এ ব্যাপারে কিছু জানতাম না, এটা আমাদের দোষ নয়- এটুকু বলাই যথেষ্ট নয়। -বিবিসি
×