ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান জোরদারে কাজ শুরু

হিলারির চোখে ভোটপরবর্তী দৃশ্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

হিলারির চোখে ভোটপরবর্তী দৃশ্য

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনপরবর্তী দৃশ্যপটের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। তিনি কংগ্রেসে তার দলের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছেন এবং জয়ী হলে তিনি বাস্তবে কী অর্জন করতে পারবেন সে সম্পর্কে ভোটারদের প্রত্যাশা নিরূপণের চেষ্টা করছেন। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র দু’সপ্তাহ আগে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে তার অগ্রগামী অবস্থানকে সুসংহত করার চেষ্টাও জোরদার করছেন। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার জনপ্রিয়তার ব্যবধান এরই মধ্যে বাড়িয়ে তুলেছেন। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও এএফপির। হিলারি সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের সঙ্গে তিনবার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে অবতীর্ণ হওয়ার পর আর তার সঙ্গে বাগ্বিত-ায় গিয়ে সময় নষ্ট করতে চান না। গত সপ্তাহে তিনি তার নির্বাচনী অভিযানে ব্যবহৃত বিমানে বলেন, আমি তার সঙ্গে সাড়ে চার ঘণ্টা বিতর্ক করেছি। আমি আর তার কথার জবাব দেয়ার বিষয়েও ভাবছি না। তার নির্বাচনী উপদেষ্টারা তিনি জয়ী হলে যাতে নির্বাচনজনিত তিক্ততার নিরসন করা যায় সেই উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। শনিবার গভীর রাতে ফিলাডেলফিয়াতে এক সমাবেশে ট্রাম্পের ভোটারদের উদ্দেশে হিলারি বলেন, আমি আপনাদেরও প্রেসিডেন্ট হতে চাই এবং আমাদের জন্য কাজ করব এবং আপনাদের জন্যও লড়াই করব। কিন্তু হিলারির এজেন্ডা সহজেই বাধাগ্রস্ত হতে পারে, যদি না ডেমোক্র্যাটরা ৮ নবেম্বর আরও অন্যান্য নির্বাচনেও জয়ী হয়ে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১০ সালের মধ্যবর্র্তী নির্বাচনে ওই দুটি কক্ষে দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর তার এজেন্ডা কংগ্রেসে আটকে পড়তে দেখেন। হিলারির বক্তৃতার এক বড় অংশই এখন প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দিকে কেন্দ্রীভূত। এ নির্বাচনই ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যদি হিলারি নির্বাচিত হন, তবে ডেমোক্র্যাটদের সিনেটের নিয়ন্ত্রণ লাভের জন্য অতিরিক্ত চারটি আসনে জয়ী হতে হবে। যদি সিনেটে কোন বিষয়ের পক্ষে ও বিপক্ষে সমসংখ্যক ভোট পড়ে, তবে কেইন ভোট দিয়ে সেই অচলাবস্থার নিরসন করতে পারবেন। ডেমোক্র্যাটদের প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেয়ার কাজটি বেশি কঠিন; তাদের অতিরিক্ত ৩০টি আসনে জয়ী হতে হবে। রলিতে রবিবার প্রায় ৩,৫০০ লোকের সমাবেশে হিলারি নর্থ ক্যারলিনার ডেমোক্র্যাট ডেবোরাহ রসের পক্ষে ভোট চান। রস রিপাবলিকান সিনেটর রিচার্ড বারের বিরুদ্ধে লড়ছেন। হিলারি বলেন, ডেবোরাহ ঠিক সেই ধরনের ব্যক্তি, আমার জন্য মার্কিন সিনেটে যিনি প্রয়োজনীয়। তিনি পেনসিলভেনিয়ায় শনিবার ক্যাটি ম্যাকজিন্টি পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে একই কথা বলেন। ম্যাকজিন্টি রিপাবলিকান সিনেটর প্যাট টুসির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বলেন, ক্যাটি ঠিক সে ধরনের অংশীদার, যাকে আমরা সিনেটে চাই। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে শতকরা ৫০-৩৮ ব্যবধানে রিপাবলিকান রিয়াল এস্টেট মোগল ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জয়ী হলে হিলারিই হবেন আমেরিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। এনবিসি নিউজ জরিপে এটি দেখা যায়। প্রেসিডেন্ট পদে বারাক ওবামার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হওয়ার পর এ জরিপেই হিলারি সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে এগিয়ে রইলেন। রবিবার এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার কোরিয়ান কনওয়ে ‘আমরা পিছিয়ে আছি’ বলে স্বীকারোক্তি করেন। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষ হয়ে যায়নি বলে জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। হিলারির শিবির রিপাবলিকান পার্টিকে কংগ্রেসে সংখ্যালঘু দলে পরিণত করতে অর্থ ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। সেপ্টেম্বরের শেষনাগাদ হিলারি ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তহবিলে ছিল ১৫ কোটি ডলার। সম্প্রতি রিপোর্টারদের সঙ্গে এক কনফারেন্স কলে হিলারির ক্যাম্পেইন ম্যানেজার বরি মুক ইন্ডিয়ানা ও মিসৌরিতে ১০ লাখ ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। হিলারি নবেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মন্থরগতিতে ভোটাররা যাতে হতাশ না হয়ে পড়েন, তিনি তা নিশ্চিত করতে চান বলে মনে হয়। তিনি পিটসবার্গের একটি হাই স্কুল জিমে আয়োজিত এক সমাবেশে বলেন, আমি এমন ভাব দেখাতে যাচ্ছি না যে, আমরা কেবল আঙ্গুল দিয়ে টিপ দেব আর আমাদের সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন। বাস্তব পৃথিবীতে তা ঘটে না।
×