ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা রায়ের বিরুদ্ধে আপীল এক মাসের মধ্যে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা রায়ের বিরুদ্ধে আপীল এক মাসের মধ্যে

বিকাশ দত্ত ॥ বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এক মাসের মধ্যে আপীল করবে। এদিকে আইনকমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রায়ের পরপরই বলেছিলেন, আমি হাইকোর্টের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিনীতভাবে বলতে চাই যে, এ রায় দ্বারা বাংলাদেশের সার্বভৌম জনগণ এবং তাদের প্রতিনিধি জাতীয় সংসদকে অপমান করা হয়েছে। আমি বিনীতভাবে সুপ্রীমকোর্টের উপর সম্পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই যে, এই রায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের সফল ফসল সংবিধানকে অপমান করেছে। অপরদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের অধীনে নিতে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে আপীল করা হবে। তিনি সোমবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “জাবেদা নকল পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আমরা আছি। এটা পেয়ে গেলেই আমরা আপীল করব। এক মাসের ভেতরে আমরা হয়ত (আপীল) দাখিল করতে পারব।” সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকের অপসারণ ক্ষমতা আগের মতো আইনসভার হাতে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন হয়েছিল। এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারপতি রায় দিয়েছেন এটাকে অবৈধ ঘোষণা করে, একজন বলেছেন বৈধ। এর বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আপীল বিভাগে আপীল করব। আমরা সর্বোচ্চ আদালতে হাইকোর্টের রায়কে বাতিল অথবা পরিবর্তন করার চেষ্টা করব।” ৫ মে রায় ঘোষণার পর আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানবিচারপতি এবিএম খায়রুল হক জনকণ্ঠকে বলেছিলেন, আমি হাইকোর্টের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিনীতভাবে বলতে চাই যে, এ রায় দ্বারা বাংলাদেশের সার্বভৌম জনগণ এবং তাদের প্রতিনিধি জাতীয় সংসদকে অপমান করা হয়েছে। টিভি রিপোর্টিং দেখে যতটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছি, তাতে আমি যদিও এই রায়ের সঙ্গে একেবারেই একমত নই, তবুও সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে পার্লামেন্ট ব্যাতীত এই রায় আমাদের সকলের উপর বাধ্যকর। যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা আপীল বিভাগ কর্তৃক স্থগিত বা বাতিল না হয়। আমি বিনীতভাবে সুপ্রীমকোর্টের উপর সম্পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই যে, এই রায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের সফল ফসল সংবিধানকে অপমান করেছে। আমি আরও বিনীতভাবে নিবেদন করতে চাই যে, আমাদের স্বাধীন হাইকোর্ট বিভাগ মূল সংবিধানের বিধান পরিত্যাগ করে প্রডাক্ট অব মার্শাল লকে কি করে গ্রহণ করতে পারল তা আমার চিন্তার বাইরে। তবে একই সঙ্গে আমি হাইকোর্টের রায়ের দ্বিমত পোষণকারী বিচারপতিকে তার সাঠিক সাহসী মতামতের জন্য সাধুবাদ জানাই। চলতি বছরের ৫ মে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় প্রদান করেন। আদালত তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী। সুপ্রীমকোর্টের ৯ আইনজীবীর করা একটি রিট আবেদনে দেয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামালের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে এই রায় দেন। ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দুই বিচারপতির দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ১১ আগস্ট সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এর পর ৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামালের রায় প্রকাশ পায়। ১১ আগস্ট বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ৬৫ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করেন। সে রায়ে বলা হয়েছে “বলতে দ্বিধা নেই, ষোড়শ সংশোধনী একটি কালারেবল লেজিসলেশন (কোনো কাজ সংবিধানের মধ্যে থেকে করার সুযোগ না থাকলে আইনসভা যখন ছদ্ম আবরণে ভিন্ন প্রয়োজনের যুক্তি দেখিয়ে একটি আইন তৈরি করে), যা রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন। “এটা সংবিধানের দুটি মূল কাঠামো ৯৪(৪)ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন। একইসঙ্গে সংবিধানের ৭(বি) অনুচ্ছেদকেও আঘাত করে।” সংবিধানের ৭ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি রূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সঙ্গে অসমঞ্জস্য হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে ? ৯৪ (৪) অনুচ্ছেদে রয়েছে- এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন। আদালত তার রায়ে করেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী। সংসদ কর্তৃক বিচারপতি অপসারণের বিধান একটি দুর্ঘটনা মাত্র। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এটা সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ এবং সংবিধানের ৭(খ) তে মৌলিক স্তম্ভ পরিবর্তন করে আইন করার বিধান নেই। তা সত্ত্বে¡ও ১৬তম সংশোধনী মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ করা সংসদের হাতে নেয়া একটি ঐতিহাসিক দুর্ঘটনা। এর পর ৮ সেপ্টেম্বর ঐ বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি আশরাফুল কামাল ভিন্নমত পোষণ করে রায় প্রদান করেন। তিনি ১২৫ পৃষ্ঠার এই রায়টি বাংলায় লিখেছেন। রায়ে তিনি রায়ে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জের রায়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘একজন আর্মি রুলস ভঙ্গকারী অবৈধ দখলদার রাষ্ট্রপতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। যে বিচার বিভাগ এবং এর বিচারকদের ওপর আইনগত দায়িত্ব ছিল সংবিধান সামান্যতম বিচ্যুতিকে রক্ষা করা, সংরক্ষণ করা এবং নিরাপত্তা প্রদান করা সেই বিচার বিভাগ এবং এর তৎকালীন বিচারকরা সংবিধান এক কথায় হত্যা করলেন, জনগণের রায় ডাকাতি করে জনগনের নির্বাচিত সংসদকে বাতিল করলেন। অপরদিকে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান নিজে একজন সরকারী কর্মচারী হয়েও আর্মি রুলস ভঙ্গ করে জনগণের রায়ে নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে হত্যা করে দেশের সংবিধানকে হত্যা করে অস্ত্রের মুখে অন্যায়ভাবে অসৎভাবে হত্যাকারীদের দোসর হয়ে জনগণকে চরম অবজ্ঞা করে ক্ষমতা দখল করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তথা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং জামায়াতে ইসলামীকে এ দেশে পুনর্বাসন করেন। দ্বিমত পোষণকারী বিচারপতি তার রায়ে বলেন, সুপ্রীমকোর্টের আইনগত একজন আর্মি রুলস ভঙ্গকারী অবৈধ দখলদার রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্তৃক তার একক খেয়াল খুশি মোতাবেক সংবিধান সংশোধন করে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কর্তৃক বিচারক অপসারণ প্রক্রিয়া সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্তকরণ সংক্রান্তে সামরিক ফরমান উপড়ে ফেলা তথা অবৈধ এবং অসাংবিধানিক মর্মে ঘোষণা করে বাতিল করা, যা আমাদের তৎকালীন সুপ্রীমকোর্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সুপ্রীমকোর্টকে সেই লজ্জা থেকে তথা কলঙ্কমুক্ত করেছেন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক তার পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ের মাধ্যমে ২০০৫ সালে। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের আপীল বিভাগ ২৯-৩-২০১১ সিভিল রিভিউ দরখাস্ত নং ১৭-১৮/২০১১-এর রায়ে কফিনের শেষ পেরেকটি ঠুকে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সংবলিত ৯৬ অনুচ্ছেদটি কবরস্থ করেন। সে কারণে আমি বর্তমান জাতীয় সংসদকে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অর্থাৎ দরখাস্তকারী প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, সংবিধান (ষোড়শ সংশোদন) আইন, ২০১৪ আইনটি সংবিধানের বিধানাবলীর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্র্ণ তথা অসাংাবিধানিক। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নবেম্বর সুপ্রীমকোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে এ রিট আবেদন দায়ের করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৯ নবেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৫ সালের ২১ মে রুলের শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ এ রুলের শুনানি শেষে ৫ মে রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এই রুলের উপর ২০১৫ সালের ২১ মে শুনানি শুরু হয়। ওইদিন আদালত মতামত দিতে এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ পাঁচ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি এই শুনানিতে এ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। ১৭ দিন শুনানির পর গত ১০ মার্চ আদালত এ বিষয়ে রায়ের দিন ঠিক করে দিয়েছিল। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ শুনানিতে অংশ নেন। পরে ২০১৬ সালের ৫ মে রায় ঘোষণা করা হয়। ১৯৭২ সালে মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের উপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। ষোড়শ সংশোধনীর ৯৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যরে কারণে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ছাড়া কোন বিচারককে অপসারিত করা যাবে না।’ ৯৬(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, দফা (২) এর অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। সেই তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি এবং অপসারণের প্রক্রিয়া ঠিক করে তৈরি একটি আইনের খসড়ায় গত ২৫ এপ্রিল নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম মনে করেন, আপীল বিভাগ তাদের যে নির্দেশনা দিয়েছিল সেটি ষোড়শ সংশোধনীতে বাস্তবায়িত হয়েছে। “পঞ্চম সংশোধনীর রায়ে মার্শাল ল অর্ডার দ্বারা যে সমস্ত কার্যকলাপ করা হয়েছিল, সেগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। শুধু বিচারপতি অপসারণের ব্যাপারটা রাখা হয়েছিল, জনকল্যাণমূলক হওয়ার কথা বলে।” “যখন রায় রিভিউ করলাম, তখন আদালত বলল, সামরিক শাসনামলে যত রায় হয়েছিল সবগুলো অবৈধ এবং সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল যে এই সময় পর্যন্ত এটা বহাল থাকবে। এই রিভিউ রায়ের পরে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা বাহাত্তরের সংবিধানে যা ছিল সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” বর্তমান অবস্থায় কোন বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব কি না- এ প্রশ্নে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এখন এ অবস্থাতে ব্যবস্থা নেয়ার, আমার মতে, অবস্থা নাই।’ এদিকে রুলের শুনানিতে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, বিচারপতিদের অপসারণের প্রক্রিয়া আগে ছিল সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে। ষোড়শ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সংসদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি এই অপসারণ করবেন। আর সংসদ তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ দেবে। ওই তদন্ত কমিটি কীভাবে গঠিত হবে সে বিষয়ে একটি বিল এখন পর্যন্ত বিবেচনাধীন জানিয়ে তিনি শুনানিতে বলেন, “এটি আইনে পরিণত হলেই কিন্তু এ বিষয়ে কারণ (কজ অব এ্যাকশন) উদ্ভব হবে। কাজেই আমার বক্তব্য হলো, জনস্বার্থ মামলা হিসেবে যারা মামলাটি করেছেন তাদের মামলা করার সময় আসেনি। আইন হওয়ার পরে আইনে যদি কোন রকম ব্যত্যয় হয়, দেখা যায় সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক তখনই কারণ উদ্ভব ঘটবে এটা চ্যালেঞ্জ করার।” এ কারণে রিট আবেদনটি ‘মেইনটেনেবল না’ (গ্রহণযোগ্য নয়) বলে যুক্তি দেখান তিনি।
×