ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একজনের পালিয়ে রক্ষা, আরেকজন উদ্ধার

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

একজনের পালিয়ে রক্ষা, আরেকজন উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ অপহরণের একদিন পর অপহরণকারীদের আস্তানা থেকে পালিয়ে মুক্তি পেয়েছে রাসেল মিয়া (২৬) নামে এক যুবক। তার বাড়ি নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার বয়রা গ্রামে। অপরদিকে কলমাকান্দা থানা পুলিশ অপহরণের পাঁচদিন পর নূরুজ্জামান(১৪) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে টাঙ্গাইলের সখিপুর থেকে উদ্ধার করেছে। নূরুজ্জামানের বাড়ি কলমাকান্দার কয়রা গ্রামে। এ ঘটনায় রমজান আলী নামে অপহরণ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, খালিয়াজুরির বয়রা গ্রামের বজলু মিয়া (রাসেলের বাবা) বছরখানেক আগে একটি মামলার আসামী হিসেবে ময়মনসিংহ কারাগারে ছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে আজিজুল হক নামে অপর এক বন্দীর সখ্যতা হয়। ওই সখ্যতার সূত্র ধরে আজিজুল হক চার-পাঁচদিন আগে বয়রা গ্রামে বজলু মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে গত শনিবার আজিজুল হক তাড়াইলে এক আত্মীয়ের কাছে যাবার কথা বলে বজলু মিয়ার ছেলে রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে যায়। তাড়াইলে গিয়ে আজিজুল হক আরও কয়েক সঙ্গীর সহায়তায় রাসেলকে মোটরাসাইকেলের মাঝে বসিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজীবপুর ইউনিয়নের নতুনচর নামক ব্রহ্মপুত্রের একটি চরে নিয়ে যায়। সেখানে দু-তিন জনের একটি চক্র হাত-পাঁ বেধে তাকে চরে ফেলে রাখে। পরে রবিবার সন্ধ্যায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বললে অপহরণকারীরা তার বাঁধন খুলে দেয়। এ সুযোগে রাসেল দৌড়ে ও সাতঁড়িয়ে ব্রহ্মপুত্র নদী পার হয়ে পাশ্ববর্তী ত্রিশাল উপজেলার ইছামতি গ্রামের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে ওই বাড়ির লোকজন তার স্বজনদের খবর দিলে তারা তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। খালিয়াজুরি থানার ওসি শওকত আলী সোমবার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে গত বুধবার কলমাকান্দার পাঁচকাঠা বাগেজান্নাত ইসলামিয়া দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশ থেকে ওই মাদ্রাসার ছাত্র নূরুজ্জামান নিখোঁজ হয়। পরদিনে তার বাবা কয়রা গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়ার মুঠোফোনে ফোন করে পঁচিশ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করেন অপহরণকারীরা। রশিদ মিয়া অপহরণকারীদের দেয়া মোবাইল নম্বরে বিকাশ এর মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান এবং বিষয়টি কলমাকান্দা থানা পুলিশকে জানান। পরে কলমাকান্দা থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান জানার পর রবিবার সন্ধ্যায় সখিপুর উপজেলার ৬ নং ওয়ার্ডের আব্দুস সামাদের ভাড়া দেয়া বাসা থেকে নূরুজ্জামানকে উদ্ধার এবং রমজান আলীকে গ্রেফতার করে। উদ্ধারের পর নূরুজ্জামান পুলিশকে জানায়, ঘটনার সময় মাদ্রাসার পাশে রমজান আলী তাকে একটি চকলেট খেতে দেয়। সেটি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে অজ্ঞান হয়ে পরে। পরে সুস্থ হয়ে দেখতে পায় তাকে একটি বাসায় আটক করে রাখা হয়েছে। কলমাকান্দার থানার ওসি আব্দুর রহমান সোমবার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া অপহরণকারী রমজান আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
×