ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নের রোল মডেল

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

উন্নয়নের রোল মডেল

উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আজ দৃষ্টান্ত। সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন ও সূচকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের চিত্রটি বার বার তুলে ধরা হয়েছে। আবার এই সত্যটি প্রমাণিত হলো শনিবার রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে, আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের অতিথিদের বক্তব্যে। তারা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। যারা একদিন বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে তিরস্কার করত তারা বা তাদের উত্তরসূরিদের মুখে এই ধরনের প্রশংসা সত্যিই গর্বিত হওয়ার মতো। এ কথা সত্য যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ নাগরিক অধিকারের প্রায় সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মডেল। বলা যায় দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন নয়। এই স্বপ্নকে যিনি বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার ভূমিকার কথাও স্মরণ করেছেন বক্তারা। এমনকি আগামীতে বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গীকারও করলেন বিদেশী অতিথি বক্তারা। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের জননেত্রীও। বলা যায় তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্ব আজ সারাবিশ্বে প্রমাণিত ও প্রশংসিত। ্একুশ শতকের নাগরিক হিসেবে আমরা প্রতিদিনই দেশের উন্নয়নমূলক নানা ইতিবাচক দিকের কথা শুনতে পাই। উঠে আসছে দেশের অর্থনেতিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ সংরক্ষণে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগামিতার সংবাদ। সম্প্রতি বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। দেশের নাগরিকদের সন্তুষ্টি, গড় আয়ু, পরিবেশের ওপর প্রভাব ও বৈষম্য- এ চার মানদ- বিবেচনায় নিয়ে সুখী দেশের তালিকা তৈরি করা হয়। তার প্রতিটি সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থান ইতিবাচক। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম। শুধু এসব খাতেই নয়, মানবাধিকারের সব খাতেই বাংলাদেশ এখন অগ্রগামী। বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে অনেক দূর এগিয়েছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে। নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করতে বর্তমানে বিভিন্ন স্তরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ। বর্তমানে আবাসন, জাহাজ, ওষুধ প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য, শিল্প, অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, নারী ও শিশু উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জ্যামিতিক গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুমবার্গ বলেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। আইএমএফ বাংলাদেশকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে মনে করছে। বিএমআই রিসার্চে উঠে এসেছে আগামী ১০ বছর যে ১০টি দেশ উদীয়মান বাজার হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালকের আসনে থাকবে তার একটি বাংলাদেশ। উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এসব পূর্বাভাস দেয়া হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এই চ্যালেঞ্জ অর্জন করতে বিশাল কর্মযজ্ঞ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সেই লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজও এগিয়ে চলেছে। সরকারী ও বেসরকারী মিলিয়ে ৭৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদনও দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে দারিদ্র্যমুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হওয়া। সেই পথ ধরে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্নও দেখছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নে, সন্ত্রাসবাদ দমনে, জঙ্গীবাদ নির্মূলে দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতোই পদক্ষেপ এগুলো। তা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার মতো সুযোগ্য, দক্ষ নেতৃত্ব এবং আওয়ামী লীগের মতো দেশপ্রেমিক সংগঠন থাকায়। এমন সুযোগ্য নেতৃত্বই আমাদের দীর্ঘ সময় দরকার, তাহলেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
×