ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা অভিবাসন সম্মেলনে বান কি মুনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

ঢাকা অভিবাসন সম্মেলনে বান কি মুনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বজুড়ে নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আগামী ১০-১২ ডিসেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভিবাসন ও উন্নয়ন বিষয়ক বৈশ্বিক ফোরাম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) ঢাকায় এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। জিএফএমডির বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ। গত বছরের অক্টোবরে জেনেভাভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক সংস্থাটির এক শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ চেয়ারম্যান পদটি পেয়েছে। তারপর থেকেই বাংলাদেশে জিএফএমডির শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। বাংলাদেশ জিএফএমডির শীর্ষ পদে থাকাবস্থায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এ আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক আন্তঃরাষ্ট্রীয় শীর্ষ সম্মেলন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও অবৈধ মানবপাচার রোধে কিভাবে দেশগুলো কাজ করতে পারে, সেটা আলোচনা করাই এ সম্মেলনের অন্যতম মূল লক্ষ্য। জাতিসংঘের প্রায় সবকটি সদস্য দেশ জিএফএমডির অনুসমর্থনকারী। অভিবাসন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রায় সব সংস্থা এ ফোরামের সঙ্গে কাজ করে থাকে। তবে জনশক্তি রফতানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে সামনের সারিতে অবস্থান করছে। বিশ্বের অন্য জনশক্তি রফতানিকারক দেশগুলো তাদের অভিবাসী কর্মীদের অধিকার রক্ষা ও পরিবারের উন্নয়নে কী কী সুবিধা পেতে পারে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে এ সম্মেলনে আলোচনা করা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ আশা করছে বান কি মুন এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেনÑ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গাই রেডার, গ্লোবাল মাইগ্রেশন গ্রুপের চেয়ার লক্ষ্মীপুরী, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসে সুইং। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ১১ ডিসেম্বর অভিবাসনের বিভিন্ন দিক নিয়ে ছয়টি গোলটেবিল বৈঠক হবে। এছাড়া ওই দিন একটি প্লেনারি অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। অভিবাসন সম্মেলনের শেষ দিনে একটি বিশেষ অধিবেশন, একটি প্লেনারি অধিবেশন ও সমাপনী অধিবেশন হবে। সমাপনী অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বক্তব্য রাখবেন। জিএফএমডির শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ১৬০টি দেশের পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি যোগ দেবেন বলে আশা করছে বাংলাদেশ। এখানে অভিবাসনের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হবে। সম্মেলনের সাইডলাইনে জনশক্তি আমদানিকারক দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে সমঝোতা করার সুযোগ থাকবে। কর্মী পাঠানোর বিষয়ে বিভিন্ন প্যাকেজ নিয়েও সেসব দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা হবে। এছাড়া ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে। সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইতোমধ্যেই ঢাকা সফর করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত পিটার সুদারল্যান্ড। এছাড়া ঢাকার সম্মেলন সামনে রেখে গত এক বছরজুড়েই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে নানা রকমের কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে ব্যাংককে কানেকটিভিটি ও বাণিজ্যের জন্য অভিবাসন, জেনেভায় সামাজিক সম্প্রীতির জন্য অভিবাসন এবং নিউইয়র্কে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির জন্য অভিবাসন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিবাসন ইস্যুর সঙ্গে সুশীল সমাজ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জিএফএমডির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য রাষ্ট্র ৩০টি। গত বছর জেনেভায় জিএফএমডির স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জিএফএমডির চেয়ারম্যান পদের জন্য বাংলাদেশকে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে জোর সমর্থন জানানো হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ এ আন্তর্জাতিক সংস্থাটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।
×