ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৫ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারবেন না

সেরা করদাতার সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

সেরা করদাতার সংখ্যা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কর দেয়ার ক্ষেত্রে করদাতাদের আরও উৎসাহিত করতে সংশোধন করা হলো জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময় আয়কর প্রদানকারী নীতিমালা। নারী ও তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচিত সেরা করদাতার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে নতুন এই নীতিমালায়। যা জেলাভিত্তিক ‘সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময় আয়কর প্রদানকারী করদাতাদের পুরস্কার প্রদান নীতিমালা ২০০৮’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তিনজন আয়করদাতার সঙ্গে এবার নারী ও তরুণ দুটি নতুন ক্যাটাগরি, দীর্ঘ সময় ক্যাটাগরিতে একবার নির্বাচিত হলে পরবর্তী পাঁচ বছর অযোগ্য ইত্যাদি বেশ কিছু নতুন ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন নীতিমালায়। বিবেচনা করা হয়েছে করদাতাদের অধিকতর সম্মাননা ও সুবিধার বিষয়টিও। এতদিন সর্বোচ্চ ও দীর্ঘমেয়াদী ক্যাটাগরিতে যথাক্রমে তিনজন ও দুইজন করে মোট পাঁচজন সেরা করাদাতা নির্বাচিত করা হতো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে সংশোধিত নীতিমালার ধারা ২ এর (খ) উপধারায় বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা বা সিটি কর্পোরেশনের ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ আয়করদাতা পর্যায়ভুক্ত পাঁচজন করদাতার মধ্যে তিনজন সর্বোচ্চ করদাতা, একজন সর্বোচ্চ নারী করদাতা, একজন ৪০ বছর বয়সের নিচে অর্থাৎ তরুণ পুরুষ করদাতা এবং দীর্ঘ সময় আয়কর দেয়া একই পর্যায়ভুক্ত দুইজন করদাতাকে পুরস্কারের জন্য মনোয়ন দেয়া হবে। অন্যদিকে সংশোধিত নতুন নীতিমালার ধারা ২ এর (গ) উপধারায় দীর্ঘ সময় আয়কর প্রদানকারী হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত করদাতা পরর্বতী ৫ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ওই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী নীতিমালায় এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য ছিল না। ফলে একই ব্যক্তি প্রতিবছর একই ক্যাটাগরিতে সেরা করাদাতা নির্বাচিত হতে পারতেন। এছাড়া সংশোধিত নীতিমালার ৩ নম্বর ধারায় মনোনীত ব্যক্তির যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ আয়কর দেয়া ব্যক্তিকে করদাতা হিসেবে পূর্ববর্তী ৩ বছর এবং দীর্ঘ সময় আয়কর প্রদানকারী করদাতাকে কমপক্ষে ১৫ বছরের নিয়মিত করদাতা হতে হবে। নতুন নীতিমালার ৪ নম্বর ধারায় মনোনয়নের অযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, ঋণখেলাপি, আয়কর বকেয়া, এনবিআরের আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারাধীন, আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত অথবা অন্য কোনো কারণে অবাঞ্চিত ব্যক্তি মনোনয়নের যোগ্য হবেন না। তবে সাজা ভোগ করার ৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি মনোনয়নের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। মনোনয়নের পদ্ধতির বিষয়ে ৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী তিনজন করদাতার মধ্যে যদি নারী ও ৪০ বছর বয়সের নিচে তরুণ পুরুষ করদাতা থাকেন, তা হলেও একজন নারী ও ৪০ বছর বয়সের নিচে তরুণ পুরুষ করদাতা মনোনয়নের ক্ষেত্রে পরবর্তী সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী ও ৪০ বছর বয়সের নিচে তরুণ পুরুষ করদাতাকে মনোনয়ন দেয়া যাবে। একজন করদাতা সর্বোচ্চ বা দীর্ঘ সময় কর প্রদানকারী উভয় ক্যাটাগরিতে মনোনীত হতে পারবেন। আর পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেক করদাতাকে একটি ক্রেস্ট, একটি লেমিনেটেড পরিচিত কার্ড ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়াসহ ৮টি ধারা ও ২১টি উপধারা সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন নীতিমালায়। এই নীতিমালাকে চলতি বছরের ৪ অক্টোবর থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, ‘রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং মানুষের প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছে। তাই সম্মানিত করদাতাদের আধুনিক ও যুগোপযোগী সেবা দেওয়ার পাশাপাশি করদাতাদের সম্মাননা ও সুবিধার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেই এনবিআরের এ উদ্যোগ।’ এর আগে চলতি বছরের আগস্ট মাসে এনবিআরের অষ্টম বোর্ড সভায় খসড়া নীতিমালাটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল। সভায় জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা, ২০১০ সংশোধনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ কর পরিশোধের ভিত্তিতে ২০টি ট্যাক্স কার্ডের স্থলে মোট ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা ১০৮টি করার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে ১০টির স্থলে ৫৭টি, কোম্পানি পর্যায়ে ১০টির স্থলে ৪০টি এবং নতুনভাবে অন্যান্য পর্যায়ে ১১টি ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে। শীঘ্ররই ‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা, ২০১০ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন ইস্যু করা হবে বলেও এনবিআরের উর্ধতন ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
×