ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জনসমর্থন বাড়ছে ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

জনসমর্থন বাড়ছে ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে নিজের সমর্থন বাড়াতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে হিলারির সঙ্গে তার ব্যবধান অর্ধেক কমিয়ে এনেছেন। শুক্রবার প্রকাশিত রয়টার্স? ইপসোস জরিপে এটা দেখা যায়। খবর ইয়াহু নিউজের। জরিপের তথ্যে দেখা যায় ৮ নবেম্বরের নির্বাচন তার বিরুদ্ধে কারচুপি করে সাজানো হচ্ছে বলে তার যুক্তি দলীয় সদস্যদের মনে রেখাপাত করেছে। শুক্রবার পেনসিলভেনিয়ার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, মনে রাখবেন, এটি এক কারচুপিপূর্ণ ব্যবস্থা। সে জন্যই আপনাদের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ভোট দিতে হবে। আপনাদের দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ এ ব্যবস্থাটি একেবারেই কারচুপি পূর্ণ। রয়টার্স/ইপসোসের ১৪-২০ অক্টোবরের জরিপ অনুযায়ী হিলারি ট্রাম্পের চেয়ে ৪ পয়েন্টে, ৪৪.৪০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ৭-১৩ অক্টোবরের জরিপে হিলারি ৪৪-৩৭ শতাংশ ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। রিয়ালক্লিয়ার পলিটিক্সের জাতীয় ভিত্তিক জনমত জরিপে হিলারি শতকরা ৬ দশমিক ২ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন বলে দেখা যায়। হিলারি ভোগ করছেন শতকরা ৪৮ দশমিক ১ ভাগ ভোটারের সমর্থন আর ট্রাম্পের পক্ষে রয়েছেন শতকরা ৪১ দশমিক ৯ ভাগ ভোটার। ট্রাম্প মহিলাদের দেহ স্পর্শ ও চুম্বন করার বিষয়ে গর্ব করছেন এমন দশ্য সংবলিত ২০০৫ সালের এক ভিডিও চলতি মাসে প্রকাশিত হলে ট্রাম্পের প্রচার তৎপরতায় সঙ্কট দেখা দেয়। এরপর তিনি কয়েক দশক ধরেই মহিলাদের যৌন হয়রানি করেছিলেন বলে অনেক অভিযোগের সম্মুখীন হন। তিনি এসব অভিযোগকে ‘একেবারেই মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেন। রয়টার্স/ইপসোস জরিপে দেখা যায়, আমেরিকানদের শতকরা ৬৩ ভাগ নিউইয়র্কের রিয়াল এস্টেট মোগল ট্রাম্প অতীতে যৌন অনাচার করেছিলেন বলে বিশ্বাস করেন। তাদের মধ্যে রিপাবলিকানদের এক-তৃতীয়াংশও রয়েছেন। ট্রাম্প সম্ভবত যৌন অনাচার করেছিলেন বলে মনে করেন কিন্তু তা সত্ত্বেও তার প্রার্থিতা সমর্থন করেন এমন কয়েকজন উত্তরদাতার সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করে। তাদের জবাব সাধারণত একই ছিল। ট্রাম্প অতীতে নারীদের নিয়ে যাই করে থাকুন কেন, সেটি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে যা করতে পারেন, তার তুলনায কম গুরুত্বপূর্ণ। নর্থ ক্যারোলিনার ফ্লেচারে ট্রাম্পের এক সমাবেশে হ্যারল্ড গ্যারেন (৭৫) বলেন, তিনি ট্রাম্পের আচরণ সম্পর্কে নারীদের অভিযোগ নিয়ে সন্দিহান। তিনি বলেন, আমি ৩০ বছর পর এসব কিছু বিশ্বাস করি না। হিলারির কাছে পরাজিত হলে ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবেন কিনা, তা জানাতে তিনি অস্বীকার করেন। রয়টার্স/ইপসোস তথ্যে রিপাবালিকানদের মাত্র অর্ধেক হিলারিকে তাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করবেন বলে দেখা যায়। তাদের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ বলেন, হিলারি যদি জয়ী হন, তবে অবৈধ ভোট বা ভোট কারচুপি মাধ্যমেই সেটি সম্ভব হবে। পেনসিলভেনিয়ার জনসটাউনে এক সমাবেশে ট্রাম্প হিলারিকে ‘এক দুর্নীতিপরায়ণ বিশ্ববাদী’ বলে ঘোষণা করলে জনতা ‘তাকে জেলে ভরো’ বলে চিৎকার করে ওঠে। তিনি উইকিলিসের প্রকাশিত দলিলপত্রের প্রতি ইঙ্গিত করছিলেন। এতে হিলারি অবাধ বাণিজ্য ও উন্মুক্ত সীমান্ত সমর্থন করেন দেখা যায়। জনতার সেøাগান চলার মধ্যে ট্রাম্প জবাব দেন, ভাববেন না, সমগ্র বিষয়টিই দেখা হবে। নির্বাচনে কারচুপি করা হচ্ছে বলে নিউইয়র্কের ব্যবসায়ীর উক্তি এবং তিনি পরাজিত হলে নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে তার অস্বীকৃতি মার্কিন গণতন্ত্রের অন্যতম মূলভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ করেছে এবং ডেমোক্র্যাটদেরও অনেক রিপাবলিকানকে ক্ষুব্ধ করেছে। বুধবারের বিতর্ক চলাকালে ট্রাম্প ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেবেন কিনা এ প্রশ্নে তিনি জবাব দেন, আমি তা সেই সময়ে জানাব। আমি আপনাদের উদ্বেগের মধ্যে রাখব। শুক্রবার ওহাইওর ক্লি ভল্যান্ডে এক সমাবেশে হিলারি ট্রাম্পের অস্বীকৃতিকে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এরূপ অস্বীকৃতি জানিয়ে ট্রাম্প আমাদের গণতন্ত্রের প্রতি হুমকির সৃষ্টি করছেন।
×