ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি

দেশে অনলাইন ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি জ্যামিতিক হারে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। তাই এই সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ ও দমন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। কোন থানার অধীনস্থ এলাকায় যদি খুনের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়, তাহলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অপরাধের আলামত সংগ্রহের। তেমনি সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রেও কিছু অত্যাবশ্যক ব্যবস্থা নিতে হয়। সে সব ব্যাপারে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনও ততটা সক্ষম ও সচেতন নয়। উন্নত বিশ্ব সাইবার অপরাধ নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক ও সচেতন। সম্প্রতি দেশে যেসব সাইবার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার ভেতরে প্রধান হচ্ছে ব্যক্তিগত হয়রানি। কারও সম্পর্কে মানহানিকর বা আপত্তিকর কথা ও ছবি পোস্ট করা। সামাজিক মাধ্যমের ব্যাপক প্রসারের ফলে এই অপরাধের মাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে নারী সংক্রান্ত বিষয়ে সাইবার অপরাধের মাত্রা বেশি। অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যাচ্ছে। অনেকে লজ্জা বা সঙ্কোচের জন্য সেটাও করছে না। বুধবার রাজধানীতে তথ্যপ্রযুক্তি মেলা ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সাইবার সিকিউরিটি সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করে কেউ যেন অপরাধ কার্যক্রম চালাতে না পারে সে ব্যবস্থাও আমাদের নিতে হবে। বিশেষ করে আর্থিক খাত এবং গোপনীয় বিষয়ের নিরাপত্তা যাতে কোনভাবেই বিঘিœত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সরকারের উদ্যোগের মধ্যে রয়েছেÑ ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট-২০১৬ প্রণয়ন, এ আইনের আওতায় বাংলাদেশে বিশ্বমানের ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন, সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন, সাইবার ইন্সিডেন্স রেসপন্স টিম (সিইআরটি) প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চ পর্যায়ের ডিজিটাল সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠন। ইন্টারনেট খুলে দিয়েছে সব বন্ধ দরজা। এখন বিশ্ব চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই দেশে উন্নয়ন ঘটবে। বাংলাদেশের আউটসোর্সিং কর্মীদের দক্ষতা অন্য যে কোন দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায়। গত বছর ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ৫৪তম অবস্থানে ছিল। দেশে আউটসোর্সিংয়ে ব্যাপকভাবে তরুণরা এগিয়ে আসার পেছনে বড় কারণ হচ্ছে বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের শাস্তির বিধান রেখে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি বিদ্যমান ধারা আইসিটি আইন থেকে বাদ দিয়ে সেগুলো আরও স্পষ্ট করে নতুন আইনে যুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। আশা করা যায়, আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু আইন প্রণীত হবে, যেটি স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। বিশেষ করে সমাজের সৃষ্টিশীল ও মননশীল অংশ যেন নিজেদের বঞ্চিত ও বিপন্ন না ভাবেন।
×