ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একে মোহাম্মাদ আলী শিকদার

সার্ক এখন ভেন্টিলেশনে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

সার্ক এখন ভেন্টিলেশনে

মধ্য নবেম্বরে পাকিস্তানে নির্ধারিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বাতিল হয়ে গেছে। এর আগেও কয়েকবার পূর্ব নির্ধারিত সময়ে শীর্ষ সম্মেলন হতে পারেনি, পরবর্তীতে নতুন তারিখে হয়েছে। তবে এবার যে কারণে শীর্ষ সম্মেলন বাতিল হলো এমন জটিল পরিস্থিতি পূর্বে কখনও সৃষ্টি হয়নি এবং হোস্ট কান্ট্রির বিরুদ্ধে এবারের মতো গুরুতর অভিযোগ একই সময়ে একাধিক সদস্য দেশের পক্ষ থেকে কখনও উঠেনি। অনেকেই হয়ত মনে করেন সম্প্রতি কাশ্মীর সীমান্তে (নিয়ন্ত্রণ রেখা) ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘর্ষের জের ধরেই বোধ হয় শীর্ষ সম্মেলনটি বাতিল হয়ে গেল। বিষয়টি তা নয়। এটি হয়ত একটি কারণ। তবে এর লেগেসি অনেক লম্বা। সার্ক সদস্যভুক্ত অন্তত তিনটি বড় দেশÑ ভারত, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গী তৎপরতায় লিপ্ত; যার ফলে এই তিনটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অনবরত হুমকির মুখে আছে। এর ফলে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যে ভয়ানক অনাস্থা ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে, তাতে পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা আজ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ১৯৯৯ সালে কাশ্মীর সীমান্তে কারগিল এলাকায় গোপনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ভেতরে ঢুকে পড়ার জের ধরে যে যুদ্ধ বাধে তাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের গোপন তৎপরতা শুরু করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এ কথা পাকিস্তানী লেখক হুসেন হাক্কানী তার লিখিত ‘পাকিস্তান বিটুইন মস্ক এ্যান্ড মিলিটারি’ গ্রন্থের ২৫৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। এ রকম ভলকানিক লেগেসি থাকা সত্ত্বেও এ অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা ছিল সার্কের প্ল্যাটফর্মের সহায়তায় ও অবলম্বনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জন্ম নেয়া অনাস্থা ও অবিশ্বাস ধীরে হলেও ক্রমান্বয়ে দূর হবে এবং এক সময় সার্কের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সকল দেশের মানুষ উপকৃত হবে। আর সে প্রত্যাশায় নিভু নিভু করে হলেও সার্ক এতদিন সজীব বলব না, দাঁড়িয়েছিল এবং ১৮টি শীর্ষ সম্মেলনও হয়েছে। একেকটি শীর্ষ সম্মেলনের মাঝখানের কয়েক বছর সার্ক বলে একটা সংস্থা আছে তা কেউ টের পায় না। গুড নিউজ, ব্যাড নিউজ কোথাও সার্ক নামক সংস্থাকে পাওয়া যায় না। উপস্থিত বক্তৃতার আয়োজন করলে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ছেলেমেয়েরা সার্ক সম্পর্কে পাঁচ মিনিট বক্তব্য দিতে পারবে বলে মনে হয় না। তাই সঙ্গতকারণেই সার্ক সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের মধ্যে কোন আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি। অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে অগণিত সমস্যা, দ্বন্দ্ব আর সঙ্কটের কথাই শুধু জন্মের পর থেকে নতুন প্রজন্ম শুনতে থাকে। সম্ভাবনার কথা শোনে কম। অথচ আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে সার্কের সম্ভাবনা ও গুরুত্ব অপরিসীম। সে কারণেই ৭ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ৮ম সদস্য হিসেবে আফগানিস্তান যোগ দিয়েছে। সুতরাং এ অঞ্চলের মানুষকে পেছনে ফিরে তাকাতে হবে। ৩১ বছরে কেন আকাক্সিক্ষত অগ্রায়ন হলো না তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে। অনাস্থা-অবিশ্বাস দূর করার জন্য সদস্য দেশগুলোর মানুষের মধ্যে যদি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোতে বহুমাত্রিক সংযোগ, সম্প্রীতি ও ভালবাসার বন্ধন সৃষ্টি করা যেত, তাহলে তার সূত্র ধরেই অন্যান্য বড় সঙ্কটগুলোরও একটা সমাধানের পথ বের হয়ে যেত। মানুষে মানুষে বন্ধন সৃষ্টির একটা সুযোগ তৈরির জন্য ২০১৪ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে কম্প্রেহেনসিভ বা সামগ্রিক সার্ক কানেকটিভিটি চুক্তি চূড়ান্ত অবস্থায় স্বাক্ষরিত হতে পারে না শুধু পাকিস্তানের অসম্মতির কারণে। কোনরকম কারণ না দেখিয়ে পাকিস্তান একতরফাভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে। প্রকৃতপক্ষে সেদিনই কাঠমান্ডুতে সার্কের সকল সম্ভাবনার দ্বার বন্ধ হয়ে যায়। সংস্থা হিসেবে সার্ক শেষ শয্যায় শায়িত হয়। এবার যে প্রেক্ষাপট ও কারণে শীর্ষ সম্মেলন বাতিল হলো, তাতে এটি এখন ভেন্টিলেশন বা লাইফ সাপোর্টে রাখা রোগীর অবস্থায় চলে গেছে। বিশ্বে দুটি আঞ্চলিক সংস্থা ফ্লারিশ করেছে। প্রথমটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অন্যটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে গঠিত আসিয়ান (অঝঊঅঘ)। এ দুটি সংস্থার অগ্রগতির ইতিহাস যে সময় সময় মসৃণ ছিল তা নয়। অনেক সঙ্কট, দোলাচল পেরিয়ে আসতে হয়েছে। তবে এ দুটি সংস্থার মধ্যে কোন দেশই অন্য সদস্যভুক্ত দেশের ভৌগোলিক অখ-তা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেÑ এমন কোন কাজ করেনি, যা একের পর এক ঘটে চলেছে সার্কের বেলায়। ১৯৪৭ সালে ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার ঐতিহাসিক লেগেসির ধারাবাহিকতায় একাত্তরে বাংলাদেশের সৃষ্টি ও তার সূত্র ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কখনই স্বাভাবিক বন্ধুত্বের পর্যায়ে থাকেনি। ৩১ বছর সার্ক এ বিষয়ে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। সুতরাং যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। তবে সার্ককে আবার ফেরাতে হলে বিগত দিনের ভ্রান্ত তত্ত্ব, নীতি ও বিদ্বেষের কারণে উপমহাদেশে অব্যাহতভাবে যে রক্তক্ষরণ চলছে তা বন্ধ করার জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। সবচেয়ে বড় এবং এক নম্বর পদক্ষেপ হতে হবে উগ্রবাদী ধর্মান্ধতার পথ ও দর্শন সবাইকে পরিত্যাগ করতে হবে। ১৯৪৭ সালে জন্মের শুরু থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্র পরিচালনার প্রধান অবলম্বন হওয়ায় একটা ভারসাম্য থাকার কারণে ভারতের অভ্যন্তরে হিন্দু উগ্রবাদিতা থাকলেও তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ও হিন্দু মহাসভার মতো কয়েকটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার মধ্য দিয়ে ভারতের অসাম্প্রদায়িক দর্শনের ওপরে প্রলয়কা- ঘটে যায়। ভারতে প্রায় ২০ কোটি মুসলমান বসবাস করে। ১৯৪৭ সালের পরে এই বিশাল সংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায় ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মূল স্রোতের রাজনীতি-সমাজনীতি, সবকিছুর সঙ্গেই তারা মানিয়ে নেয় এবং নিজেদের কখনও বিচ্ছিন্ন মনে করেনি। এর প্রধান অবলম্বন ছিল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রীয় দর্শন। ধর্মনিরপেক্ষ দর্শন ভারতে এখনও বহাল আছে। কিন্তু বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার আগের ও পরের পরিবেশের মধ্যে বিশাল ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে। বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার জের ধরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বাইয়ের কেন্দ্রস্থলে একই সময়ে ১২টি জায়গায় ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। ২৩৫ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক চেষ্টা করেছে ভারতীয় মুসলমান যুবকদের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে কাশ্মিরী জিহাদীদের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য, কিন্তু পারেনি। এমনকি আফগানিস্তানে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ নেয়ার জন্য বিশ্বের অনেক দেশ থেকে মুসলমান যুবকগণ যোগ দিলেও ভারতীয় মুসলমান যুবকগণ এসব থেকে অনেক দূরে থেকেছে। কিন্তু বাবরী মসজিদ ধ্বংস হওয়ার পর এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। (সূত্র : দ্য কাওবয়েজ অব র’, বি. রমন পৃ-২৬৭-৬৮)। কিন্তু ভারতের শক্তিশালী সুশীল সমাজ, মিডিয়া, জনগণের বৃহত্তর অংশ, বড় বড় রাজনৈতিক দল, যারা কেন্দ্রে ও প্রদেশে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল, এখনও কোন কোন জায়গায় আছে, তাদের সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এখনও শক্তিশালী সুদৃঢ় অবস্থান রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। সেখানে সুশীল সমাজের কোন কণ্ঠস্বর নেই। রাজনৈতিক দল ও বেসামরিক সরকারের সেনাবাহিনীর ওপর কোন কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নেই। পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক আইয়ুব খান রাষ্ট্রীয় দর্শন হিসেবে ট্রাইপড (তিনপা) তত্ত্বের জন্ম দেন, যার প্রথম উপাদান হলো ভারত পাকিস্তানের চিরশত্রু, দ্বিতীয় ইসলাম ধর্ম হলো পাকিস্তানের রক্ষাকবচ এবং তৃতীয় অস্ত্র ও অর্থনৈতিক সাহায্যের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র ভরসা (সূত্র : পাকিস্তান বিটুইন মস্ক এ্যান্ড মিলিটারি, হুসেন হাক্কানি, পৃ-৪৩)। চিরশত্রু ভারতকে উচিত শিক্ষা দেয়ার তত্ত্বে আচ্ছন্ন পাকিস্তানী মিলিটারি ঘরে-বাইরে জিহাদী জোশ সৃষ্টি করার জন্য পাকিস্তানের মোল্লাদের নিজেদের বলয়ে টেনে আনে। নিহত হওয়ার পূর্বে বেনজীর ভুট্টো দু’বার এবং নওয়াজ শরীফও ইতোপূর্বে দু’বার মেয়াদ পূর্তির আগেই সেনাবাহিনীর অসন্তুষ্টির ফলে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়েছেন। ২০১৩ সালে নওয়াজ শরীফ তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার আগে এবং অব্যবহিত পরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সেনাবাহিনী মোল্লাতন্ত্রের প্রভাব কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু গত তিন বছরে নওয়াজ শরীফের অসহায়ত্বের করুণ চিত্র বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানপন্থী উগ্রবাদী ধর্মান্ধ রাষ্ট্র বানিয়ে তারা একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়। তার নগ্ন বহির্প্রকাশ ঘটেছে প্রথমত. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণে, যা সার্ক চার্টারের সুনির্দিষ্ট অবমাননা। দ্বিতীয়ত. একই উদ্দেশ্যে পাকিস্তান বাংলাদেশের জঙ্গী তৎপরতায় সরাসরি জড়িত। তাছাড়া ২৩ বছর একত্রিত থাকা অবস্থায় পুঞ্জীভূত সম্পর্কের হিস্যা পাকিস্তান এখনও দেয়নি। ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেনি। আটকেপড়া পাকিস্তানী বিহারীদের তারা এখনও ফেরত নেয়নি। এটা এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটা বিষফোঁড়া হয়ে আছে। তারপর একাত্তরের যুদ্ধে পাকিস্তান যেহেতু আগ্রাসী রাষ্ট্র এবং যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ দায়ী, তাই বাংলাদেশে তারা যে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে তার ক্ষতিপূরণ পাকিস্তানকে দিতে হবে। এসবের মীমাংসা এবং বাংলাদেশের প্রতি পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যে অর্থবহ কার্যকর এবং আস্থা ও সহযোগিতামূলক কোন সম্পর্ক তৈরি হবে না। সার্কের অপর গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র আফগানিস্তানের সঙ্গেও পাকিস্তানের এখন চরম বৈরী সম্পর্ক। সেখানেও একই অভিযোগ, আফগানিস্তানের ভেতরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গী তৎপরতা চালাচ্ছে পাকিস্তান। সুতরাং মোল্লা ও মিলিটারির কবল থেকে পাকিস্তান মুক্ত না হলে এবং জঙ্গী সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সার্কের পুনরায় সজীব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সার্কের ভবিষ্যত নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে ভিন্নমত আছে বিধায় শীঘ্রই লাইফ সাপোর্ট খুলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হবে না। তবে লাইফ সাপোর্ট থেকে সার্ক আবার কখন ফিরতে পারেÑ সে সম্পর্কে কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারছে না। লেখক : ভূরাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
×