ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম ওয়াসায় যুক্ত হচ্ছে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২২ অক্টোবর ২০১৬

চট্টগ্রাম ওয়াসায় যুক্ত হচ্ছে দৈনিক ১৪ কোটি  লিটার পানি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম ওয়াসার পাইপলাইনে আগামী মাসেই যুক্ত হচ্ছে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প। বহুল প্রতীক্ষিত এ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখন চলছে টেস্টিং। এ প্রকল্পের পানি পাইপলাইনে এলে বন্দরনগরীর পানির চাহিদার ৭০ ভাগ মেটানো সম্ভব হবে বলে আশা করছে ওয়াসা। তবে সঙ্কট পুরোপুরি সমাধানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও দুটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত। চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে রাঙ্গুনিয়ার পোমরায় স্থাপিত কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয়েছে। সেখান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পানি সরবরাহও শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই পানি এসে পৌঁছেছে নগরীর বায়েজিদ এলাকায় স্থাপিত জলাধার পর্যন্ত। ব্যবহারের জন্য পাইপলাইনে সরবরাহের আগে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আগামী নবেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকল্পটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এর পরই নগরবাসীর জন্য সরবরাহ করা হবে কর্ণফুলী প্রকল্পের পানি। দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি যুক্ত হলে নগরবাসীর চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ পূরণ হবে বলে জানিয়েছে ওয়াসা। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগরীতে পানির সঙ্কট অত্যন্ত প্রকট। ৬০ লাখ জনঅধ্যুষিত বন্দরনগরীতে দৈনিক পানির প্রয়োজন প্রায় ৫০ কোটি লিটার। এর বিপরীতে ওয়াসা সরবরাহ করতে পারে সর্বোচ্চ ২১ কোটি লিটার। মোহরা পানি শোধন প্রকল্প ও ৯৪টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ওয়াসা এ পানি সরবরাহ করে থাকে। চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল হওয়ায় নগরীর দক্ষিণাংশে পাইপলাইন থাকলেও অতদূর পর্যন্ত পানি পৌঁছায় না। ফলে নাগরিকদের চরম দুর্ভোগ অনেকটাই দৈনন্দিন ব্যাপার। আর শুষ্ক মৌসুমে সঙ্কট তীব্র রূপ নেয়। অনেক এলাকায় পনেরো দিনেও পানির দেখা মেলে না। চট্টগ্রামে এ সঙ্কট দীর্ঘদিনের। নানা জটিলতায় কার্যকর পদক্ষেপ আটকে আছে দীর্ঘসূত্রতায়। তবে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আসায় আশার সঞ্চার হয়েছে জনমনে। ওয়াসার দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০১১ সালে শুরু হয় কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। এতে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা। অর্থায়ন করছে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকা, সরকার এবং ওয়াসা। পানি সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যেই রাঙ্গুনিয়া থেকে নগরী পর্যন্ত ৬৯ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন ও তিনটি জলাধার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় এখন শুধু টেস্টিং শেষে সরবরাহের জন্য অপেক্ষা। এদিকে, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পে প্রথম ধাপে থেকে ১৪ কোটি লিটার পানি প্রতিদিন যুক্ত হলেও বন্দরনগরীর পানি সঙ্কট পুরোপুরি কাটছে না। তবে এ লক্ষ্যে চলমান রয়েছে আরও দুটি মেগা প্রকল্প। প্রকল্প দুটি হচ্ছে চিটাগাং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট এ্যান্ড স্যানিটেশনের অধীন মদুনাঘাট প্রকল্প ও কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়। মদুনাঘাট প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে ২০১৮ সালে। এ প্রকল্প থেকে যুক্ত হবে প্রতিদিন ৯ কোটি লিটার পানি। কর্ণফুলী প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হবে ২০২২ সালে। এ প্রকল্প থেকে প্রতিদিন পানি যুক্ত হবে আরও ১৪ কোটি লিটার। সুতরাং পানির চাহিদা পুরোপুরি পূরণে নগরবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও প্রায় ছয় বছর।
×